30 Nov 2015

বিজ্ঞান, ইতিহাস, ছাদ, কন্ডোম ও চাঁদ


#
গরম ধোঁয়া ঠেলে চায়ের মধ্যে বিস্কুট কিছুসময় ধরে চুবিয়ে রাখলেই প্রচুর নুন, দুধ, বেকিং পাউডার এর ওর থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে সাঁতরে বেড়ায় । বিক্ষিপ্তছন্দে । ছোটো কাপটার সীমাবদ্ধতা তখনই হয়ে ওঠে অপরিসীম । বিজ্ঞানকে তখনই বড্ড ঘেন্না করতে ইচ্ছে করে । বিজ্ঞানীদের গায়ে থুথু ফেলার জন্য ক্ষুদ্রমন ছটফট করে । স্টিফেন হকিংস, আইনস্টাইন, নিউটনদের তত্ত্বগুলোর উপরে কাপটাকে উল্টে গরম চা ঢেলে তছনছ করে দিতে ইচ্ছা করে । 


#
ম্যাসিডোনিয়া না মাকেদোনিয়া কোনটা বলা শোভনীয় এই ভেবে লাভ নেই । গ্রীস, যুগোস্লাভিয়া আর বুলগেরিয়ার মধ্যে কে যেন দানার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে ম্যাসিডোনিয়াকে যাতে বহুযুগ আগেকার হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনবে সাদা পায়রাগুলো । পারবে কি তারা এমন জাতীয়তাবাদকে ঠোঁটে তুলে নিতে ? তুললেও হয়তো গলা দিয়ে নামাতে পারবে না, কারণ সেইসময়কার বীর আলেকজান্ডার নিজের এক পরমবন্ধুকে খুন করেছিলো । অঃ একটা কথা বলে রাখি - ছুরি উঁচিয়ে কারো বুকে তৎক্ষণাৎ বসিয়ে দিয়েছি এরকম দৃশ্য চোখের সামনে মাঝেমাঝে ভেসেও ওঠে । 


#
আমরা অনেকে ছাদে যাই । সিঁড়ির প্রতিটা ধাপে খচিত থাকে ছাদে যাওয়ার ইতিহাস । যে একলা বৃদ্ধ বা একলা বৃদ্ধা অকপটে বলে ফেলে, "আমার যা পাওয়ার বা চাওয়ার বা হওয়ার সবই পেয়েছি । এখন শুধু উপরে যাওয়া বাকি" । তাদের জন্যে বোধ হয় এইসব ছাদ নিষিদ্ধ একটা জায়গা । ছাদকেও ছাড়িয়ে যেতে হবে কিনা । ভাবতে কেমন যেন একটা লাগে । মনটাও বড়ো আকুল হয়ে ওঠে এসময় । আসলে আমি একজন ছাদপ্রেমী, অথচ আমাকে একদিন ছাদকে শেষবারের মত ছুঁতে না পেরেই চলে যেতে হবে । 


#
সত্যির চেয়ে মিথ্যা সংখ্যায় বহুগুণ বেশি । বহুগামিতা মিথ্যার একটি বড়ো চরিত্র । মিথ্যার বিশেষ কোনো সামাজিক তকমা নেই । থাকলেও সেটা হয় সেকেলে টাইপের বা আদিবিপ্লবী পচাগন্ধ গোছের । কেউ কি বুঝতে পারছে না যে সত্যির জন্মহার কমে আসছে ? ওদিকে মিথ্যার জন্মহার বাড়লেও মৃত্যু নেই বরং পপুলেশন বাড়িয়ে চলার লক্ষ্যে স্থির । আমি লুকিয়ে লুকিয়ে বানাবো মিথ্যার জন্মনিরোধক কন্ডোম যা সুযোগ বুঝে সকলের জিভ টেনে বের করে পরিয়ে দেবো । জানি না তোমরা আমাকে কী ভেবেছো । তবে জেনে রেখো নিজের জিভটাকেও বাদ দেবো না এই সুযোগতালিকা থেকে । 


#
বেডরুমের জানলার বদলে বাথরুমের জানলা দিয়ে চাঁদ দেখতে বেশি ভালোবাসি । নামমাত্র বাথরুম, অথচ বাথকে রোজ রোজ পূর্ণতা দেয় দিনেরবেলার আলো । এই একঘেয়েমি কেটে যায় রাত্রিবেলায় বিছানা ছেড়ে যখন বাথরুমে ঢুকি আর চাঁদের হাসিমুখ দেখতে পাই । চাঁদ সবসময় দেখা দেয় না বলে হয়তো এই বাথরুমের একটিমাত্র খোলা কাঁচের জানলাকে আরো বেশি আবেদনময়ী লাগে । এতোটাই যে ফ্ল্যাস্ করতেও ভুলে যাই । গুটি গুটি পায়ে হেঁটে বালিশের কাছে ফিরে যাই একরকমের নেশা নিয়ে ।

No comments:

Post a Comment