31 Oct 2013

দুপুরের আলসেমি




কোলে ক্যামেরা , অলস দুপুরে
চুপচাপ বারান্দায় বসে , ঘুমের ঘোরে
সামনে ফ্ল্যাটের ভিতরে
একটা শব্দ হল হঠাৎ টুক করে
জানালার পর্দা হাওয়ায় প্রায় ওড়ে

বাথরুম থেকে আসে বেরিয়ে 
তোয়ালে জড়ানো তার গায়ে
ধবধবে ফর্সা, সিক্ত কালো চুল
চোখে আমার নেই কোনো ভুল
ক্লিক্

আয়নার দিকে হেঁটে যায়
টুলে বসে ভেজা চুল শুকায়
ক্লিক্

চোখে পরিয়ে দেয় কাজলরেখা
নরম ফুলের মতো ঠোঁটদুটি
লিপস্টিক দিয়ে শুরু হয় আঁকা
মনে লাগে হাওয়ার ছুটি
ক্লিক্

কানে পরে নেয় হীরের দুল
আঁচড়ে দেয় শুকিয়ে যাওয়া নরম চুল
ক্লিক্

ছোট একটা গোল লাল টিপ কপালে
ফিক করে হাসে টোল পড়ে দুই গালে
ক্লিক্

তোয়াল খুলবে বলে
টুল ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়
অমনি বেজে উঠলো ফোন
এমন পোড়া কপাল আমার ! হায় !

শত্রু


দুই পরম শত্রু 
ইচ্ছা ও অনুচিত 

           দুইয়ের মাঝে ঝুলছে একটা অ-দেখা সুতো
           ভিজে যাওয়া শত্রুতা পোহায় রোদে 
           আবার তাতায় বৃষ্টিঝড় এসে

ইচ্ছা ভীষণ নাক-উঁচু 
অনুচিত আবার দেদার অহংকারী 
আঙুল চোষে বাক্যহারা সুতো  

একদিন দুপুরে ফাঁকা বাড়িতে বাড়ির নতুন বউকে একলা পেয়ে 
          হৃদয়ে ছুঁচ ফুটিয়ে দেয় ইচ্ছা 
          অনুচিত সেই ছুঁচ ধরে এক হ্যাঁচকা টান মারে 
          মেঝের দিকে চেয়ে থাকে সুতোয় বেঁধে 
 
পাড়ায় হঠাৎ পাঁচ বছর আগেকার ঠগবাজকে দেখতে পেয়ে 
          দাঁত খিঁচিয়ে ওঠে ইচ্ছা
          অনুচিত তাকে কনুই দিয়ে ঠেলা মারে 
          ভদ্রতার হাসি ফোটায় সুতোর সুড়সুড়িতে 

বাসের সিটের কোণে পড়ে থাকা কয়েকভরি সোনার গয়না পেয়ে 
          পকেটে চালান করতে চায় ইচ্ছা 
          অনুচিতের হুকুমে দুই রামথাপ্পড় পড়ে গালে 
          থানায় গিয়ে জমা দেয় সুতোর অনুরোধে 

তবুও অনেকে এক টান মেরে 
          ফেলে দেয় সুতো ছিঁড়ে 
          দুইয়ের মধ্যে মিলন ঘটায় 

          অতশত না ভেবে

কলমের লিঙ্গ


রাত্রি তিনটে অবাক হয়ে দেখছে টেবিলের দিকে 
যেখানে একটা টেবিলল্যাম্প
একটা পাতা যার অর্ধেক সাদা 
একটা লাইন ধরে দ্রুতগতিতে দৌড়চ্ছে একজন 
সে লিঙ্গহীন 

পেছনে কিলবিল অসংখ্য অক্ষরপোকা
সামনে সাদাটুকুর লাল আবেদন 

চোখ বুজে মাঝে মাঝে দম নেয় স্তনযুগল 
একটু পরেই পাশ ফেরে পুরুষাঙ্গ 

দেখেও থামে না সে 
কিছু বোধগম্য হয় না তার কাছে
এক মুহূর্তও না 

নতুন নতুন পাতা, সবগুলো ফ্রেশ
নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানায় সে
              কন্ডোম নেই সিলেবাসে 
              অভিধানে নেই জন্মনিরোধক

শুধু একজনকে ভালোবাসে সে
মনকথা
সেও লিঙ্গহীন, এক বিশুদ্ধ প্রেম
নিষ্কাম চুমুতেই প্রসব দেয় 
কাহিনীর পর কাহিনী

শেষ পাতাকেও সযত্নে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে সে
সপ্রতিভ উজ্ব্বল কলম 

বুক থেকে ঝপাঝপ নেমে এসে প্রণাম জানায় দুই বোন
তাদের দেখাদেখি অমুক-ও লাফ মারে উরুসন্ধি থেকে
কুর্নিশ জানাবে বলে
             

অ্যাম্বুল্যান্স


বিছানায় চিৎপটাং 
শরীর এখন ফাঁকা একটা রাস্তা

একধারের ফুটপাথে উঠে আসে নতুন চিন্তা 
একটা নয়
অনেকগুলো একসাথে 

অন্যধারের ফুটপাথ ধরে 
চলে ব্রেক-হীন সাইকেল 
শেষে ধাক্কা মারে ব্রেনের ল্যাম্পপোস্টে

হার্ট শুধু অ্যাম্বুল্যান্স  
অলিন্দ থেকে নিলয়ে
নির্দিষ্ট ছন্দে শব্দ করে ছুটে চলছে সমানে 
বার সাতদুয়েক মিনিটে 

ভোরের আলো এসে চোখের কড়া নাড়ে
পাশে উদ্বিগ্ন রবিবাসরীয়


30 Oct 2013

বেকার পাপড়ি


বুকপকেটে গুচ্ছ ফুল 
পাপড়ি গুলোতে সারা বছরের একটা করে ক্রসচিহ্ন

সিক্ত নোনতা পা'দুটি হামাগুড়ি দিতে দিতে থমকে যায় 
প্রতিবার একটা পাহাড়ি পাথরের সামনে 
কিছু খারাপ ফুলঝুরি এসে লাগে মনে 
কিছু রেখে দেয় পরবর্তী হোঁচটের 
ওয়েটিং লিস্টে

আঙুলের ছোঁয়ায় ভুস্ হয়ে যাওয়ার আগেই 
ঘুমের বুদবুদ শুষে নেয় পাপড়িগুলো 

সারারাত মোমবাতি জ্বালিয়ে ক্লান্তির সৎকার করে 
ফর্ম জমা দিয়ে আসে নতুন করে ক্লান্তি পাওয়ার 
উত্তেজনায়

সেক্সি ডার্কনেস


দাও নিভিয়ে
           করে দাও বন্ধ
এঁটে দাও 
গুঁজে দাও 
           কাগজ সব ফাঁকফোকর 

ঘুঘুটে অন্ধকার প্রখর 
কুকুচে কালো তুখোড় 
           ভালোলাগার একটা ঘোর

এই হটশট সেক্সি ডার্কনেস 
           সবসময় সুইচ অন

কাজ-ঝামেলা


কাজ একবার 
বেঠিকভাবে শুরু করলে 
            শীতে গরমাগরম হাওয়া 
            ঘামে অন্তর্বাসের আত্মসমর্পণ 
লোকসভায় কেউ ভোট দেয় না 
            ভুল-মাংসে গড়া প্রার্থীজন 

কাজ একবার 
অর্ধেক করে ছাড়লে 
            কপালে পড়ে খিস্তিমাখা টোকা 
            রোজ রাতে দুঃস্বপ্নের কল 
ব্রেক-সভায় কেউ পায় না 
            লাঞ্চ খাওয়ার কুড়ি টাকার কুপন 

কাজ একবার  
নিখুঁতভাবে শেষ করলে 
            পৃথিবীর মায়া ছাড়িয়ে 
            পরলোকে চলে যায় কাজটা 
শোকসভায় কেউ করে না 
            তার নাম উচ্চারণ

মদ খাও


গলায় মদ ঢাললে

প্রতিটা যুক্তি খুব সম্ভবত
            অতি সাবধানে 
            মেপে চেপে
            খুব দক্ষতার সাথে
মোড়া থাকে আর একটু রঙচঙে

মদ একটু বেশি পড়লেই 
সিনেমার পর্দা সরে যায় 
            হয়ে যায় আরম্ভ 
            যুক্তিতে ফাটল
            উঁকি মারে অকাট্য সত্য 
মোড়া খুলে লজ্জা ফেটে দুমদাম 

তাই বলি শোনো ভাই 
খাও মদ খেতে চাইলে  
            যেখানে খুশি 
            মোড়া-ফোঁড়া নিয়ে 
            মাথা ঘামাতে হলে 
নির্জন জায়গা বেছে নাও একা চুপচাপ



আন্ডার কনস্ট্রাকশন


চোখদুটি ঘুরপাক খায় 
             ঠিক যেন কম্পাস
হাতদুটি লম্বা হয়ে যায় 
             ঠিক যেন রুলার স্কেল
মনটি দোল খায় 
             ঠিক যেন প্লাম্ লাইন
মাথার চুল সব খাঁড়া
             ঠিক যেন মার্কার পেন্সিল 
যৌনাঙ্গে লাগে সুড়সুড়ি
             ঠিক যেন রবার 
পাদুটি কিন্তু নড়ে না 
             ঠিক যেন ফেভিকল্ 
শরীর জুড়ে উন্মাদনা 
             ঠিক যেন ইলেকট্রিক স্ক্রু-ড্রাইভার 
প্রেমিকা তুমি ঠিক
             যেন হোম্ আন্ডার্ কনস্ট্রাকশন্

সমাজের মুখ


পারছো যতদিন না 
লিমিটে পৌঁছতে
                  ততদিন দেখা নেই সমাজের হাসিমুখ 
খাওয়াবে না তোমাকে ডেকে
                  নতুন কেনা বাড়িতে নেমন্তন্ন করে
সকালে ব্যাজার
দুপুরে গোমড়া
রাতে ভেংচি কাটা
                  চলবে ততদিন ধরে 
পারবে যবে ছুঁতে 
অপেক্ষারত লিমিটটা
                  উজ্জ্বল হবে সারা পাড়া সমাজের গর্বমুখ 
নাচবে মাথায় তুলে তোমাকে
                  নিয়ে যাবে নামী দামী রেস্টুরেন্টে 
সকালে মিষ্টিমুখ 
দুপুরে পিঠচাপড়ানি 
রাতে আড্ডা মারা 
                  চলবে রোজ রোজ 
করবে যখন অতিক্রম 
সদ্যপাওয়া লিমিট 
                  জ্বলবে তেলেবেগুনে সমাজের চেনামুখ
ধরে পেটাবে তোমায় ধরে 
                  সমানে মাথায় পড়বে মেলা বাড়ি
সকালে গালিগালাজ 
দুপুরে ছিছিক্কার 
রাতে লাঠিপেটা
                  চলবে যতদিন না ক্ষমা চাইছো 

                             

নির্লিপ্ত সে


তার চুপ হয়ে থাকাটা

সূঁচের মত ফুটিয়ে দেয় 
                         গভীর বেদনার প্রথম ফোঁটা দিয়ে

তার নিঃশব্দতা
হ্যাংলার মত চেটেপুটে খায় 
                         দীর্ঘ সম্পর্কের প্লেটে থাকা ওমলেটের তেল 

তার সাড়া না দেওয়াটা
পাগলের মত ছুঁড়ে দেয় 
                          বহুদিনের প্রেম দিয়ে গড়া মাটির গ্লাস

তার স্তব্ধহীনতা
চিত্রশিল্পীর মত কায়দা করে 
                         আঁকে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে যাওয়া ক্যানভাসে 

তার মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটা 
চাকরী-না-পাওয়া যুবকের মত 
                         হাত বুলিয়ে দেয় প্রতি স্মৃতিটুকুর ধারগুলি 

তার নির্লিপ্ততা 
হার-না-মানা প্রতিপক্ষের মত 
                         কুড়িয়ে যত্নে রাখে নতুন শুরু করবে বলে



 

তাও বেঁচে থাকব


ভোররাতের দরজা খুলে 
কেটে দিতে চায় আমায় সে 
                       তার ধারালো যৌনকামাস্ত্র দিয়ে 

তাও বেঁচে থাকব   
                       শুধু বেড়ে উঠব নবীন গাছ হয়ে

শেষরাতের অন্ধকার ফুঁড়ে 
গুলি করতে চায় আমায় সে 
                       তার প্রাণঘাতী হাস্যবোমার সাথে 

তাও বেঁচে থাকব 
                       হেসে ভেসে যাব বাতাসকণা হয়ে

সময়ের পাতা উল্টে 
পুড়িয়ে ফেলতে চায় আমায় সে 
                       তার উগ্রতার আগুন জ্বালিয়ে 

তাও বেঁচে থাকব 
                       দিব্যি বয়ে যাব ইতিহাস হয়ে 

আমায় সে ভূমিকম্পের মত 
                       ঝাঁকুনি দিয়ে 
                       ফেলতে চায় তছনছ করে দিয়ে 
 
 তাও আকাশের তারা হয়ে থাকব 
                       ঠিক পাশের বাড়ির ছাদের উপরে

তোমার অমন


দেখেছি আমি 
                  আগের শীতকালে কি করেছিলে
মনে আছে আমার সব 

কিন্তু ইচ্ছা করছে না মনে করাতে 

                  তোমার এত মিথ্যা ভরা ...

গুজবে নেচে বেড়াচ্ছে 
                 নিষ্ঠুরতার গল্প পুরো উলঙ্গ হয়ে
হাস্যকর অথচ মাত্রাছাড়া টেনশন 

ঢের দেরী আছে এখনো 

                 তোমার অমন করে সেঁক করা ...

উত্তপ্ত না হওয়া অবধি
                 চায়ে চুমুক দিয়ে যায় আপনমনে 
মাখিয়ে নাও আমায় তোমার চুনকালিতে 

কিন্তু অনেক পরে হয়ত পরজন্মে 

                 তোমার না-দেখা ভয়ে ধরা ...

অপ্রকৃতস্থ


ভয় করছে পারবো না
               স্থির জলের পুকুরে ঢিল মারতে
এক একটা করে অনেকগুলি বলয় 
তৈরী হয়ে যায় 
               যদি মনে হয় দেখে ক্ষতবিক্ষত আহত 


মনে হয় সম্ভব হবে না 
               গাছের ডাল ধরে ঝাঁকিয়ে দিতে 
এক একটা করে অনেকগুলি ফুল 
ঝরে পড়ে যায় 
               যদি গায়ে হুল ফুটে দেয় মৌমাছির মত


খালি আমার মনে হয় এটাই
                প্রকৃতি নিজে যেন কক্ষচ্যুত
                দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া এক অপরিচিত মুখ 
                প্রতিটা পরমাণু যেন অকেজো, অচল, নির্লিপ্ত 
সে যেন এক মেরুদন্ডহীন দুনিয়া 

ঘোড়ার ক্ষুর


রাজকীয় তেজে কালো ঘোড়া
যৌনতার আঁকিবুঁকি সারা শরীর জুড়ে
                       কোনো এক গভীর রাত্রির সড়কে এঁকে দেয়
অনাবিল নগ্নানন্দ
বয়ে চলে গভীর শ্বাস
                       শিরায় শিরায়

পেছনে ফেলে দেওয়া মেঠে পথ ধরে
                       অনুসরণরত বিশ্বসুদ্ধু ছায়ামূর্তি
ঝিলিক খেলে লম্বাচুলে ইষৎ উষ্ণতায়

স্বর্গসুখের খেলায় পেয়ে যায় স্বাধীনতার মুক্তি
চোখের মণিযুগলে বুদ্ধিমত্তার প্রতিফলন
                      আবেগসুলভ কাজলরেখায় শোভা পায়
                      বুনো সারল্য

ছুটে চলে অবিরাম বিশ্রামহীন সঙ্গমের প্রতিজ্ঞায়
বিশ্বজুড়ে নামে স্তব্ধতার অন্ধকার
                      নেই কোনো স্মরণীয় মুহূর্ত
                      নেই কোনো অতীতের চিহ্ন

বাজে কেবল যন্ত্রণা ভুলে যাওয়ার সুর
                      ঘোড়ার ক্ষুরের সাথে সাথে

হয়ে যায় নিশ্চিহ্ন
পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে
                     

কমা


আমি তুমি মাঝে কমা
ছোটো ব্যবধানের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমা
আড়ালে কান পেতে শোনে পৃথিবীর মা
আলো-আঁধারী নিয়ে ঘ্যামা

আমার আগে সেমিকোলন
অর্ধেক চলে অর্ধেক ভাসে কু-মন
সাউথ সিটিতে লোকের ভিড়ে চুপচাপ কতক্ষণ
গলিপথ ধরে সান্ধ্য বন

তোমার পরে দাঁড়ি
সফল প্রেম খায় শেষবার গড়াগড়ি
অজানা অধ্যায়ে পাতে আড়ি
ক্লান্তকলম দেয় দিকশূন্য পাড়ি

রোজ একই বাক্যে পড়ে জমা
মুছতে জানে না এই অতীত ব্যকরণ
প্রতি ঘন্টায় হয়ে যায় আরো ভারী
সমস্ত অক্ষর একে একে যায় মাথা নিচু করে ডাস্টবিনমুখী


29 Oct 2013

তবুও আর যেতে চায় না


জীবনের পাতলা ঠোঁটে
এঁকে দেয় মনখারাপের রঙ

সময়ের অহংকার পেরিয়ে
খুঁজে দেয় পুরনো অ্যালবাম

সাদার গায়ে কালোর বয়সের ছাপ
কালোর নরম বুকে সাদার আদর

ছেঁড়া স্মৃতির অভিমানী স্টিকার
দুরের ডাকে দেয় না সাড়া

শুরু হয় না কোনোকিছু , গভীর রাতের যন্ত্রণা
ফুরিয়ে যায় একটু করে , একলা দুপুরের বয়স বাড়ে

কতদিনের অচেনা তবুও আর চিনতে চায় না

ছোটবেলার সেই পৃথিবী , দুই চোখের আয়না
অপেক্ষার নদী বয়ে যাওয়া , ভালোবাসার বায়না 

দুরে , আরো দুরে , তবুও আর যেতে চায় না

বিরক্তিমাখা ফ্যান্টাসি



আধখোলা জানালা
ঘরভর্তি ধোঁয়া , কোত্থেকে আসছে চাপা হাসি

পচা সব্জির থালা
পোকাভর্তি মোয়া , কোথায় লুকোলো রান্নার মাসী 

পোড়াবারুদের গন্ধ
উপচে পড়ছে অন্ধকার
থামছে না হাসির শব্দ
শরীরী আবেদনের হাহাকার

কিছুটা জটিল, কিছুটা সরলতার উস্কানি 
দেওয়ালজুড়ে আদিম ছায়া 

পালানোর জ্বালা
হাতছানির মায়া , বিরক্তিমাখা ফ্যান্টাসি !

27 Oct 2013

Alpona Raja

কাল সারারাত ধরে
চেষ্টা করছে এখনো
কিছুতেই মুছতে পারে না
উজ্জ্বল এখনো
এখন সে রাজা
চারধারের জল প্রহরী যেন
...

কী ফাটলো?

 
ভুল সময়ে ঠিক জায়গায়
আছড়ে পড়ে ঢেউয়ের মত
নোনতা হয়ে যাওয়া মন
গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়

ভিতরে ঝড় বাইরে শান্ত
নিঃশব্দে চলে দুদ্দাড় শব্দসৃষ্টি
ঠিক রজনীগন্ধা মালার মত
সারি বেঁধে একটার পর একটা

ধীর পায়ে দ্রুত হিসেবে
সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসে উপরে
হাতে ঝুলছে শব্দমালা সুসজ্জিত
হেঁটে হেঁটে হাজির জিভের ডগায়

প্রস্তুত মন অপ্রস্তুত মুহূর্ত
সুতো ছিঁড়ে ছুঁড়ে মারে আকাশে
আলোয় ভরে যায় ঘুমন্ত পাড়া
সবার মুখে বিরক্তির প্রশ্ন - "কী ফাটলো?"

14 Oct 2013

একাকী দশমী


দুষ্টুমিষ্টি ষষ্ঠী
প্রিয়তমী সপ্তমী
রমরমী অষ্টমী
অন্যতমী নবমী
চার বান্ধবী একসাথে, চলে গেল একরাতে |

অর্থহীন ফষ্টিনষ্টি
বিষাদভরা ন্যাকামি
চোখেমুখে পাগলামি
পুজোক্লান্ত দশমী
উপরে আকাশ মেঘলা, নিচে সে শুধু একলা |

পেন বইখাতা
স্কুলকলেজ পড়ুয়ারা
লালপাড়ি সুন্দরীরা
ছোটোবড় থালায়
সকলে মেতে উঠে খেলায়, এইগালে ওইগালে কপালে |

হাজির নড়বড়ে লরি
জোয়ানদের হাত ধরাধরি
উঠলেন মা, উঠলো বাকি সকলেও
মনে লাগে হালকা ছোঁয়া
ভটভটিয়ে ছাড়ে ধোঁয়া, হেলতে দুলতে পড়তে পড়তে |

বিষন্ন চেয়ারে বসে একদিকে
দশমী চুপচাপ চেয়ে থাকে
কানে বাজে জয়ধ্বনি
মনে খোঁচা মারে শূন্যতা
বাংলার চিরাচরিত বিহ্বলতা | রিং রিং রিং রিইইইইইং |


- || শুভ বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা  || -

3 Oct 2013

তন্ত্রাচ্ছন্ন ভোরে



তন্ত্রাচ্ছন্ন ভোরের আলোয় ল্যাপটপের স্ক্রিন
পাশে এক কাত সদ্যারম্ভ শীর্ষেন্দুর "মানবজমিন",

ভ্যাপসা গরমের হাওয়ায় তছনছ অজানা সব চরিত্র
চশমার স্থির কাঁচে জানালার পর্দার অস্থির চলচ্চিত্র ;

মাথায় অবিন্যস্ত কালোভর্তি ইতি উতি পাকাচুলের হাঙ্গামা
পরনে তার ঘেমো গেঞ্জি সাথে দামী সেন্টের রমরমা ,

বেজে উঠছে মোবাইল সশব্দে বারংবার জরুরী বার্তায়
নিস্তব্ধতার এই জগতবাসী রাজ্যের ঘুম দু'চোখের পাতায় |