26 Apr 2016

শনি আর রবির মধ্যে ইগো-ক্র্যাশ


শনি আর রবির মধ্যে ইগো-ক্র্যাশ হয় । বাকি পাঁচজন পড়ে থাকে মানুষের ইগোর নীরব দর্শক হয়ে ।

18 Apr 2016

রামধনুর সন্ধানে


রামধনুর সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছে কারা সব
হাতের তালুতে জলতেল ভরিয়ে দিই
আলোর দিকে হাত বাড়িয়ে দিই
রামধনুর সন্ধান মেলে
হাতেনাতে


ওরা ফিরে আসে নিখোঁজ ডায়েরি করে
জামা ছাড়ে
ঘাম মোছে
খালি গায়ে ঢেলে দেয় সেই রামধনু
অজান্তে


আমার এক বন্ধুর খুব শখ
সাতটা রঙ নিয়ে একটা মকটেল বানানো
আমি চেপে যাই
বলি নি ওকে আমার সামান্য ঘরোয়া আর্কিওলজি
অনিচ্ছাতে


একদিন জানতে পারি
তার বানানো মকটেল এখন ভাইরাল
লুফে নিচ্ছে সে লোভনীয় সব অফার
জমা রাখছে একের পর এক
আপনপাতে


জল আনি
তেল আনি
মিশিয়ে দিই আগের মত আলোর নিচে
কই ? রামধনু আর দেখা দেয় না সেই
নমুনাতে

4 Apr 2016

ইটস্ আ বাগ্


আই.টি. জগতবাসীদের ভাষায় বলা হয় 'ইটস্ আ বাগ্' । কিন্তু এই একটা 'বাগ্' কতটা পার্থক্য গড়ে তুলতে পারে যেটা একজন আই.টি. ইঞ্জিনীয়ারের চেয়ে একজন কনস্ট্রাকশন বা সিভিল বা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারকে অনেকগুণ বেশি উঁচু স্থানে রেখে দেয় । বিশেষ করে একটাই 'বাগ' যদি শত শত মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়, সে 'বাগ্' যতই ছোটো বা ধরা-না-দেওয়া হোক ।

খবরের সূত্রে জানলাম যে ফর্টি নাম্বার পিলার আর ফর্টি ওয়ান নাম্বার পিলারের মাঝের দূরত্ব প্রায় ষাট মিটারের বেশি যা কিনা অন্য যেকোনো পর পর দুটো পিলারের মধ্যিকারের চেয়েও বেশি ছিলো । হতেই পারে রাস্তা যেখানে বাঁক নিচ্ছে সেখানে এই গ্যাপ বেশি রাখতে বাধ্য হয়েছে । ফর্টি নাম্বার পিলারের মধ্যে যে পাইলিং, ক্যাপিং, পায়ার, তার দুটি আর্ম, গির্ডারস্ আর ডেক যেভাবে ধাপে ধাপে থাকে, সেই পুরো ডিজাইন হয়তো ঠিক আছে । এমনকি প্যারালাল দুটোর যেকোনো একটা ডেকে ঢালাই করার পর শুকিয়ে গেলে, অন্যটাতে কাজ শুরু করার নিয়মটাও খাতাকলমে এবং কার্যক্রমানুসারে একদম ঠিক । সবটাই এক্সপার্টের মত । এক্সপার্টের বিশ্লেষণ ধরে আমি যদি বলি সেই না-জানা বা বলাই বাহুল্য 'সম্ভাব্য' বাগটা ঠিক কোথায়, ঠিক কোনখানে রয়ে গেছে সেটা অত হিসেব কষে বলা মোটেই চাড্ডিখানি কথা নয়, তাহলে কী পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারে ?

প্রথমে মানুষের নিরাপত্তা আসে, পরে যাখুশি তালিকাভুক্ত দিব্যি চোখ বন্ধ রেখে করা যায় । যে কাঁচামাল দিয়ে তৈরী করা হয়েছে সেটার গুণ মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার মধ্যে যতটা রাজনৈতিক গন্ধ বেরোয়, ঠিক ততটাই 'ইঞ্জিনীয়ারনৈতিক' ফিল্টার লাগানো উচিত ছিলো বলে আমাদের সকলের একই মত । যেমন রেগুলার মনিটরিং করা, একজন এক্সপার্টের মতে ওই বিপজ্জনক গ্যাপের মধ্যে দু-তিনটে টেম্পোরারি সাপোর্টার রেখে ঢালাইয়ের কাজ শুরু আর শেষ করা, সাপোর্টার সরানোর সময়ে পিলারের দুর্বলতা ডিটেক্ট করা ইত্যাদি ইত্যাদি । সবার আগে যেটা করা উচিত ছিলো, সেটা হলো কাজ চলাকালীন তৎসংলগ্ন এলাকায় যেন কোনো মানুষজন না চলাফেরা করে । কিন্তু তা তো হয় নি সেটা আমরা সবাই জানি, এখনো প্রচুর মানুষের ভিড় ওই বাকি পিলার গুলো জুড়ে । তাদের মাথায় যেকোনোমুহূর্তে ভেঙেচুরে পড়ার ভয় তো থাকছেই । 

এবারে আসি 'বাগ্'প্রসঙ্গে । একটা ভুল ম্যাগ্নেফাইয়িং গ্লাস দিয়ে ধরা যে যায় না, সেটা আই.টি.তে সত্যি হলেও সেখানে সাপোর্টিং রিসোর্স বা টুল বা ভেন্ডারের অভাব কখনোই হয় না, তেমনি মানুষের প্রাণ নিয়ে সরাসরি কাজ করার দুর্ভাগ্য আই.টি.তে কারো নেই । যে প্রডাক্ট বা অ্যাপস্ লঞ্চ করে, তা কম্পিউটারস্ক্রিনে সীমিত । ব্যবহারিক মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই এখানে । কিন্তু বিল্ডিং, ফ্লাইওভার তৈরী করার সাথে যেসব ইঞ্জিনীয়ারিং জড়িত, সেগুলোর প্রতিটা হাজার হাজার প্রাণের সমতুল্য । ইঞ্জিনীয়ারিং পড়তে পড়তে বা পাশ করে জীবনের মাঝপথে নিজেকে হত্যা করা যায় নিশ্চয়ই । কিন্তু অন্যদের মেরে ফেলার ঝুঁকি কেউ তো নেবে না, তবু 'ঝুঁকি'টা থেকে যায় কারণ ন্যূনতম একটা 'বাগ্' তথা ত্রুটি এক্ষেত্রে একটা মারণাস্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ।

চিকিৎসার জগতে যারা আছে, তাদের সাথে এইসব ঝুঁকিপূর্ণ ইঞ্জিনীয়ারদের সম্মানের লড়াই বাঁধাবার লোক আমি নই । শুধু বলতে চাই - এরকম অসংখ্য 'ভুলাণু' সবার রক্তে বয়ে চলে আজীবন, যতদিন না সেগুলো একত্রিত হয়ে আপনাআপনি ছিটকে 'ডেডলোড' হয়ে অন্যের বুকে আছড়ে পড়ছে । 

এখানে রাজনীতির হাত একেবারে নগণ্য ।