29 Dec 2013

Elomelo #38


ছবির সিলেবাসে কবি ওঠে নি 

কিম্বা 

পেন্সিলের সাথে কলম
কলমের সাথে রবার 
এই যুদ্ধে নামে নি কবিতা
তবুও  
রংতুলির মুখে কেটেছিল কালির দাগ
একটুখানি 

Elomelo #37


ঘুমের ভীষণ আমি পাচ্ছে 
দু'হাত দিয়ে এই ছোট্ট ঘুম-কে 
কোলে নিলাম 
ঘুমের চোখে আমি এখন প্রবাসী

24 Dec 2013

Elomelo #36


টেবিলে প্রদীপ রেখে একটু আগে চলে গেল আলাদিন
চেয়ারে বসে আমি, হাতে চাঁদের পাহাড়
দৃষ্টি কিন্তু ওই টেবিলের দিকে

এই নিবদ্ধদৃষ্টি আশ্চর্য থেকে আশ্চর্যতর

23 Dec 2013

Elomelo #35


পৃথিবী তার হাতের তালু মেলে ধরলো
আমার সামনে

তার চোখে চোখ রাখতেই বুঝতে পারলাম
আমি অপরাধী 
কেননা নদী এখনো সাবালিকা হয় নি 

Elomelo #34


অনেককিছু বলার আছে
কিন্তু কলমের হনিমুন আজ

22 Dec 2013

Elomelo #33


আংটি খুলে পড়ে গেল
চলকে পড়ল কিছু গ্রহনক্ষত্র

রাতের আকাশে জ্বলে উঠল কার চোখ?

19 Dec 2013

Elomelo #32



কন্ডোমের রাত সবে ভাঙলো
সুইচ্ অন করলো লাইনটা খুঁজবে 
বলে 

আলোর ভার জিনের ছায়ায় ভর করে  
উঠে গেলো বিছানায়

Elomelo #31


প্রেম মানুষকে ভীষণ ভয় পায় 
ভাঁজ করা কাগজের টুকরো নিয়ে 
বসে কাটে প্রতি শেষরাতের 'ম'

তারপর থেকেই বুকে ভাসে শুধু হাতজোড়

17 Dec 2013

Elomelo #30


অতিসহজ সরল প্রশ্ন একটা
পৃথিবীর দুটি ক্ষুদ্রতম এবং সুন্দরতম পাহাড় কোথায়
চূড়ায় যার একটা করে সূর্যমুখী ফুল

উত্তর দেওয়ার বেলায় এখনো শোনা যায় মৃদু চাপাহাসি  

Elomelo #29


আকাশমুখী চিবুক
জীবনে পাওয়া সেরার সেরামুহূর্ত 
আত্মমুখী চিবুক
জীবনে চাওয়া ছেঁড়ার অন্তিমমুহূর্ত

Elomelo #28


প্রতি ঘরের নখে পালিশ পড়ে
চারদেওয়ালী আঁচড়ের দাম এখন অনেক বেশি

নেলপালিশের দরাদরি কিন্তু বাইরে

15 Dec 2013

Elomelo #27


কাগজের ঠোঙায় প্রেম
বেঞ্চিতে ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়
সন্ধ্যা নামতেই 

চাঁদের আলো এখন টর্চ


Elomelo #26


আজকাল চলে চারতলা প্রেম 
পকেটে হাত দিলে পায় 
নিজেকে শুধু 

প্রেমিকা তবু হোম আন্ডার কনস্ট্রাকশন

মেরুদণ্ডী স্বপ্ন


চার ইন্দ্রিয়ের মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি
সামনে ভাঙাকাঁচের মানুষজনের চলাফেরা
গায়ে নতুন নতুন ধুলোবালি
ডানদিকের সত্যের মিষ্টির দোকান থেকে
ভেসে আসে মিছিমিছি গন্ধ
বাঁদিকে ঘুরলেই পুরনো প্রেমিকার বাড়ি
যার ঠোঁটের স্বাদ এখনো তাজা মোমো
পেছন থেকে হঠাৎ কে একজন জাপটে ধরল আমায়
চওড়া পিঠে টের পেলাম তার দুই স্তনবোঁটা

ঘুরে দেখি মেরুদণ্ডীবৌদি
চোখে নাবালিকা 
চেহারায় এলোমেলো উপস্থাপনা
নিচের ঠোঁট কামড়ে ধীরে ধীরে আমার বধির কানে
একটা শব্দ করল
যার ভাঙন বেশ অপরিণত

আরেকটু মন দেওয়ার চেষ্টা করলাম ঠিক কি বলছে সে

সে হয়ত বলছে কয়েক হাজার মাইল দূরে থাকা একটা কলম
অপেক্ষা করছে কিম্বা কোনো এক পুকুরপাড়ে
নতুন ডাবের জন্মের উৎসব হবে এক্ষুনি

13 Dec 2013

Elomelo #25


দাঁত মাজতে মাজতে মনে পড়ল

কবিতার একটাও দাঁত গজিয়ে ওঠে নি
বিগত বত্রিশ ঘন্টায়

12 Dec 2013

Elomelo #24


খোলা পিঠ থেকে র-ফলা 
আলাদা হলেই
'বা' এর বিতর্কিত পর্দা 
সরে যায়

নারী এখন প্রকৃতির কোলে দেবশিশু 


11 Dec 2013

Elomelo #23


উত্তর থেকে দক্ষিণ কোথাও তেমন চাবুকতা নেই 
পূর্ব-পশ্চিম জুড়ে আছে ট্রিলিয়ন ইউরো হাসির ঝিলিকমাত্র 

10 Dec 2013

Elomelo #22


ডানদিকে ঘুরলেই মিথ্যা , বাঁদিকে ঘুরলেই সত্যি
দু'মুখো শিকলে বাঁধা আমি 
গালে হাত দিয়ে বসে দেখি
পায়ের কাছে পড়ে থাকা কয়েকটি ছেঁড়া পালক

Elomelo #21


ভেঙ্গে গেল একটা খয়েরিরঙা চুল 
বেরিয়ে এল একগুচ্ছ কালো ফুল 
দেখতে দেখতে ভরে গেল 
নাবালিকার ঝুলি

8 Dec 2013

Elomelo #20


বার্ধক্যের খাতা খুঁটিয়ে দেখলে হয়ত পাবো

প্রৌঢ়ত্বের কিছু গুরুগম্ভীর নীল লাইন
যৌবনের প্রচুর লাল কাটা দাগ
কৈশোরের আঙুলের সিঁড়িভাঙ্গা হলুদ ছাপ
শৈশবের সাদাকালো অবাক স্টিকার

6 Dec 2013

Elomelo #19


কলম যদি সত্যের ধারক হয় 
কলমধারীরা কি ততটাই ?

Elomelo #18


কবিতার প্রথম দুটি অক্ষর
মনের খাতা খুঁটিয়ে দেখলে পাওয়া যাবে ?

Elomelo #17


খেয়াল ছিল না পৃথিবীর সমস্ত টুকরোগুলো
এখন আমার দু'হাত ভর্তি

5 Dec 2013

বোতামের ভাগ্য


আচমকা ছিঁড়ে যায় ভাগ্যসুতো
ঠ্যালানি খেয়ে বোতামগুলো একেকটা পিং পং
চমকে চমকায় হাওয়া, ঘুরে ফিরে যায় 
আবার আগের রুটে 
মুহূর্তের শ্বাস বাড়ে মুহূর্তের দৈর্ঘ্যে

চিৎকারটুকু যা চুপসে যায় অন্ধকারের আই.কিউ. দেখে 
অধোবাস এখন অচেনা রাস্তায়

কয়েকটা গড়িয়ে চলে যায় আরো গড়িয়ে যাবে বলে
দু'একটা ছড়িয়ে ছিটিয়েও নেই

অদূরের অসাড় এক নারীদেহ থেকে ভেসে আসা
অচ্ছুতরক্তে নতুন বন্ধু মেখে 

ভাগ্যবান মাত্র একটা 
স্পন্দনহীন 

2 Dec 2013

Elomelo #16



মনের কাতরে খোদায় 
মনের যাদুতে ঢালায় 
মনের কামরায় বাঁধায় 

ক্লান্তশিল্প বাজারে চলে তবে বিনাপ্রেমে 

Elomelo #15


অবিশ্বাসের ছাদে আছড়ে পড়লাম 
লাট খেয়ে খেয়ে 

এবার লাটাই কার হাতে দি ?

1 Dec 2013

Elomelo #14


পরে আছে একটা , পড়ে আছে অন্যটা 
র' শুধায় ড়'কে , "তোকে ভুলে গেল কেন ভাই?"

জবাবে সে র-ফলায়

Elomelo #13


প্রাণহীনতার তলায় চটিজোড়া 
জন্ম দেয় নতুন অধিকারবোধ 

চারখানা পা খালি পড়ে থাকে তীব্র অভিমানের সুবাদে



Elomelo #12


হারিয়ে গেছে স্বার্থের ভিড়ে
মনুষ্যত্বের ঠিকানায় এখন গিজগিজ মন্দির 
ঈশ্বর স্বয়ং-ই বড় স্বার্থপর 
মন্দিরের গরম বিছানা ছেড়ে যায় না কারোর বাড়িতে 

29 Nov 2013

Elomelo #11


চশমা খুলি যখন 
আনন্দে ঝাপসা 
দুঃখে ঝাপসা
ঝাপসা দুনিয়া অনুমতি চায় আরো ঝাপসা হওয়ার 

Elomelo #10


লোডশেডিং হলে
তন্নতন্ন করে খুঁজি ছায়া আর নিজের মধ্যে মিল-অমিল

হঠাৎ আবিষ্কার করি ছায়ার চিবুকে গজিয়ে উঠছে ছাগলদাঁড়ি  
অল্প অল্প করে  

28 Nov 2013

Elomelo #9


ঘুমের এই নরম তুলতুলে বুক দুটি আমায় ভীষণ টানে
রোজ রাতে, মনে হয় এক ছুট দি সবকিছু ঠেলে
একজন পূর্ণাঙ্গ নগ্ন নারীও পারে না আমায় টানতে
চিরকুমারীত্ব বহন করে একমাত্র মৃত্যুই

বক্তব্য #1


কাল সকালে অফিসমুখী গাড়ি ড্রাইভ করছিলাম । সায়েন্স সিটির কাছে ট্রাফিকজ্যামে কুড়িমিনিট যাবৎ আটকে ছিলাম আর অভ্যাসবশত আমার চোখ চলে যায় ডানপাশের রাস্তা যার উপর দিয়ে গাড়িগুলো চলে উল্টোমুখে । হঠাৎ দেখলাম উল্টোমুখী রাস্তাটার ওইধারে একজনকে ঘিরে জনাকয়েক লোক দাঁড়িয়ে আছে আর লোকটি ইশারায় কথা বলার চেষ্টা করছিল, ঘন ঘন মাথা নাড়ছিল, সাথে হাতদুটি সমান তালে নাড়িয়ে যাচ্ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল লোকটা রীতিমত বেশ অসহায় এবং ব্যক্তিটি একজন যে বধির ওনার এইরূপ আচরণ থেকে আমার অনুমান করতে একমিনিটও লাগে নি । ওনাকে ঘিরে ধরা দুই-তিনজনকে দেখলাম মাঝে মাঝে পেটে হাত রেখে হাসতে হাসতে এর ওর গায়ে পড়ছিল।
ততক্ষণে গ্রীন সিগন্যালে গাড়ি চলতে শুরু করলো আর আমি কি ভেবে গাড়িটা চালিয়ে ক্রসিং অবধি গিয়ে ইউ-টার্ন নিয়ে সেই ঘটনাস্থলে গেলাম।

নিজেকে একজন বধির বলে পরিচয় দিলাম আর ওনাকে গাড়িতে তুলে নিলাম। যা বোঝার সব বুঝে নিলাম ( ঠিক কি হয়েছিল ওইসময়ে সেটা বলার প্রয়োজনবোধ করলাম না এখানে ), ওনাকে বাড়ির কাছে পৌঁছে দিয়ে এলাম। বিদায় জানানোর মুহূর্তে ভদ্রলোকটি যেভাবে অশেষ কৃতজ্ঞতা দেখালেন যে হয়ত আগামী বেশ অনেক বছর আমার মনে একটা বিশেষ স্থান দখল করে থাকবে।

তবে গোটা ঘটনার নিরিখে কেবল একটা ছোট ঘটনাবিশেষ অন্তত আমার মনে খোঁচা মেরে দেয় - দুর্বোধ্য ভাষায় বলার চেষ্টা বা হাত নেড়ে কথা বলার মধ্যে যে একটা সূক্ষ্ম বিভাজনরেখা থাকে যা আমাদের মত বধিরদের আলাদা করে রাখে। এই marginalize করার ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। শুধু আমার জীবনে হওয়া কিছু বিশেষ ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়।

যারা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে না/চেনেন না তাদের বলি যে আমি একজন শ্রুতি-প্রতিবন্ধী অর্থাৎ বধির । জন্মবধির । অতঃএব আমার ৩১ বছরের এই জীবনে বেশ কয়েকবার marginalization এর লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছি সেটা নিশ্চয় আলাদা করে বলার দরকার হবে না কারণ এটাই আজকের দুনিয়াতেও, আজকের যুগেও, আজকের প্রজম্নেও বহাল তবিয়তে চলছে ।

একটা ঘটনা বলি যেখানে আমার আর আমার স্কুলের খুব কাছের বন্ধুর মধ্যে নিম্নলিখিত কথোপকথন ছিল -

বন্ধু - "এই সোম , কি রে ? কি খবর ?" (চোখ নাচিয়ে , ডান হাত উল্টে বার দুয়েক নাড়িয়ে )

আমি - "ভালই আছি রে রাম (নাম পরিবর্তিত ) , তুই ?"

বন্ধু - "বেশ আছি । আচ্ছা কাল তোর ছোটো পিসির সাথে দেখা হলো । .. দাঁড়া হিসি করে আসি , খুব পেয়েছে .." (তর্জনী তুলে আকাশের দিকে উঁচিয়ে 'কাল' বুঝিয়ে পিসি আর হিসি একসাথে এত দ্রুত গতিতে বলে ফেলেছিল , শেষে কড়ে আঙুল তুললো )

আমি (পুরো হতভম্ব হয়ে ) - "কি বললি পিসি হিসি করেছে ?"

বন্ধু (আমার উচ্চারণ এমনিতে অত স্পষ্ট নয়, তাই কি বুঝলো কে জানে) মাথা কোনরকমে উপরে নিচে নাড়িয়ে হন হন করে হেঁটে চলে গেল ।

পাশের একজন বন্ধু আমাদের কথোপকথন সব শুনেছিল কান পেতে আর বাকি কয়েকজনকে ডেকে ঘোষণা করে দিল - 
"সোমের পিসি হিসি করেছে ।" 
ব্যস্ শুরু হয়ে গেল আমাকে নিয়ে চরম পর্যায়ের খিল্লি । পরে রাম ক্লাসে ঢুকে সব শুনে হেসে লুটোপুটি । তখনি ব্যাপারটা মিটমাট করিয়ে নেয় - পুরোটাই নাকি আমার বোঝার সমস্যাজনিত কেলেঙ্কারি সেটা বলে ।
প্রসঙ্গত ওই বন্ধুকে কোনো দোষ দেওয়া যায় না কারণ পেচ্ছাপ পেলে লোকে চারপাশের জগত বইয়ের মত উল্টে চাপা দেয় নিজেরটাকে ক্ষনিকের জন্যে উন্মুক্ত করে । এমনকি পার্কে বসে প্রেম করতে করতে একবার চমৎকার হিসি পেলে তো লোকে আর প্রেমের প-এর র-ফলা খুঁজে পায় না যা অতি জাগতিক । আর বাকি যারা খিল্লি করেছিল তাদের তো খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই , বসে বসে হাতের নখ খুঁটছিল , খাতায় আঁকিবুঁকি আঁকছিল । ভালো কিছু সিনেমা বা অ্যাকশন-থ্রিলার সিন না দেখলে ওদের সারাটা দিন যেন মাটি । যে কান পেতে সব শুনেছিল তার সবাইকে খোঁচা মারার মারার বদঅভ্যাস ছিল এখন জানি না বদলে গেছে কিনা ।

গোটা ব্যাপারটার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলতে পারি যে আমরা মানুষ যতদিন না রেললাইন থেকে ট্রেন সরে যাওয়ার মত বা রাস্তায় চলা একটা মেয়ের শাড়ির আঁচল হঠাৎ বুক থেকে নেমে যাওয়ার মত আচমকা ঘটনা দেখছি বা খবর শুনছি ততদিন আমরা নিজেদের খোলের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকি, আর যে মুহূর্তে অমুক ঘটবে সেই মুহূর্তে নিছক "শরীর আর মন চর্চা" করার জন্যে লেগে পড়ি । উপরন্তু লক্ষ্যবস্তু যদি প্রতি ২০-৫০ জনের থেকে সামান্য ( এমনকি অতি সামান্য ) আলাদা হয় তাহলে কে আর আটকাবে । এই "শরীর আর মন" চর্চার আরেক নাম marginalization যার মধ্যে কোনো sick-mindedness নেই , আছে শুধু সাময়িক আগুনের ফুলকি । এই মাপকাঠিতে বন্ধুত্বের কোনো সংজ্ঞা হয় না কারণ চর্চা থামলেই সবকিছু আবার আগের মত ।

কিন্তু বন্ধুমহলের বাইরে অচেনামহলে একই ঘটনা ঘটলে marginalization এর হৃদয়হীনতার দরজা খুলে যায় এবং নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতা এবং শারীরিক নির্যাতন - একের পর এক প্রবিষ্ট হয় ।

এই ক্ষেত্রে আমরা অনেকসময় ভাবি বা প্রশ্ন করি - এই marginalization এর নির্লজ্জ দিক থামাতে পারি কি ? 
তার আগে একটা ব্যাপার বলে রাখি সেটা হল আমরা নিজেরা যেমন marginalization এর শিকার হই, তেমন মেতে উঠি অন্য কারোর হলে । সুতরাং এইরকম দুমুখো হয়ে আমরা যদি marginalization এর মুণ্ডুপাত করতে যাই সেটা আগাগোড়া বৃথা যাবে, আবার একটা মুণ্ডু কাটা পড়লেও নতুন আরেকটা মুণ্ডু গজিয়ে উঠবে, সেটা বলাই বাহুল্য । এটা চিরকাল চলবে । এমন কি আমরা কেউ marginalization-শূন্য দুনিয়া কল্পনা করি না , দুঃস্বপ্নেও না । কারণ marginalization একধরনের ছোয়াঁচে যা একতরফা কখনও হয় না । ঠিক একপ্রকার দেওয়া-নেওয়া । আমি করলে/হলে সেও করবে/হবে ।

আর হৃদয়হীনতার যে কথাটা আসছে সেটা marginalization এর অন্তিম পর্যায় । মাস দুয়েক আগে তো আমরা সবাই খবর পেলাম জনৈক ভদ্রলোক হুইলচেয়ারে বসে শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করতে গিয়েই নিজে শিকার হলেন । কি লাভ হল ? তাই আমার অন্তত মনে হয় নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা না করে চুপচাপ মুখ  বুজে মেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ । শিকার হতে হতে শিকার করতে যাওয়ার একটা স্বাভাবিক রীতি চালু হয়ে আছে আমাদের সবার মধ্যে, এর কোনো হেরফের হবে না । এবং এটা বন্ধুদের মধ্যে করা/হওয়া সবচেয়ে নিরাপদ । 

27 Nov 2013

Elomelo #8


পৃথিবী পুড়ে যায় তিন চুমুক খেলে
দু'চুমুকে নেমে আসে শোকের ছায়া

জীবন, তুমি কি হবে আমার এক চুমুকের মুহূর্ত ?

Elomelo #7


এক ঝাঁকুনিতে
ছিটকে বেরিয়ে যায় সব অর্থ
আঁকড়ে ধরে থাকে
শুধু ব্যর্থ

25 Nov 2013

|| কিরকম ব্যবহার ? || - তারাপদ রায়



একজন কবির কাছে আরেকজন কবি
কিরকম ব্যবহার আশা করে ?
কিরকম ব্যবহার ?
সকলের ইতিহাসবোধ নেই , ঘরে ঘরে আলেকজান্ডার
খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।
কিন্তু ঘরে ঘরে শুধু কবি ,
একজন কবির সঙ্গে আরেকজন কবির
কম বেশি দু-এক ফুটের ব্যবধান ,
একটা বাড়ির মধ্যে ,
একটা গাড়ির মধ্যে ,
একটা টেবিল ঘিরে ,
একটা মাইক জুড়ে ,
দলে দলে কবি ,
যেরকম পঙ্গপাল , দেয়ালির অন্ধ শ্যামাপোকা।
তবুও কবির কাছে কবি
একজন নিরীহ কবির কাছে
একজন মারকুটে কবি ,
একজন বকবক কবির কাছে
একজন দুপচাপ কবি
একজন মাতাল কবির কাছে
একজন গঙ্গাজল কবি
কিরকম ব্যবহার আশা করে ,
কিরকম ব্যবহার , আলেকজান্ডার ?

Elomelo #6


সময় পেরিয়ে গেছে
বোকা প্রেমের সঠিক ব্যকরণ খোঁজার

আধবিন্দু রক্তে "উঁ"-এর রাজত্ব
"আহ্" নামের প্রেমব্যঞ্জক শব্দের জয়জয়কার

Elomelo #5


বন্ধজানালার ভুলফাঁকে চোখ
শহীদ হয়ে যায় সমস্ত লজ্জা পরের পর
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সুতো

সম্পূর্ণতার আত্মসমর্পণ কেবল সেই অসাবধানী ছূঁচের আগায়

22 Nov 2013

Elomelo #4


পাকাচুলে উপচে পড়া আয়না
আড়াল থেকে উঁকি মারে বহু পরিচিত সূর্য
প্রতি দেড়মিনিটে 
আচমকা ভেঙে চুরমার বাঁকাহাসির বেআইনী ঝিলিকে

21 Nov 2013

Elomelo #3


সমুদ্রের গন্ধ শুঁকি
রূপ দেখি প্রকৃতির
পাই নারীর রহস্যময় স্পর্শ
সর্বভূক আমার উপাধি

পেয়েছি নিঃশব্দের অধিকার শুধু

19 Nov 2013

Elomelo #2

দু'ঠোঁট চেপে বসে আছে অনেকগুলো কথা
খুনী জিভ
সামনে গভীর খাদ

একবার ঠ্যালা মারলেই অভিধানের লজ্জা

3 Nov 2013

Elomelo #1


আমাকে তুবড়ির উপরে বসিয়ে দাও বা রকেটের সাথে বেঁধে দাও , আর পারছি না

31 Oct 2013

দুপুরের আলসেমি




কোলে ক্যামেরা , অলস দুপুরে
চুপচাপ বারান্দায় বসে , ঘুমের ঘোরে
সামনে ফ্ল্যাটের ভিতরে
একটা শব্দ হল হঠাৎ টুক করে
জানালার পর্দা হাওয়ায় প্রায় ওড়ে

বাথরুম থেকে আসে বেরিয়ে 
তোয়ালে জড়ানো তার গায়ে
ধবধবে ফর্সা, সিক্ত কালো চুল
চোখে আমার নেই কোনো ভুল
ক্লিক্

আয়নার দিকে হেঁটে যায়
টুলে বসে ভেজা চুল শুকায়
ক্লিক্

চোখে পরিয়ে দেয় কাজলরেখা
নরম ফুলের মতো ঠোঁটদুটি
লিপস্টিক দিয়ে শুরু হয় আঁকা
মনে লাগে হাওয়ার ছুটি
ক্লিক্

কানে পরে নেয় হীরের দুল
আঁচড়ে দেয় শুকিয়ে যাওয়া নরম চুল
ক্লিক্

ছোট একটা গোল লাল টিপ কপালে
ফিক করে হাসে টোল পড়ে দুই গালে
ক্লিক্

তোয়াল খুলবে বলে
টুল ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়
অমনি বেজে উঠলো ফোন
এমন পোড়া কপাল আমার ! হায় !

শত্রু


দুই পরম শত্রু 
ইচ্ছা ও অনুচিত 

           দুইয়ের মাঝে ঝুলছে একটা অ-দেখা সুতো
           ভিজে যাওয়া শত্রুতা পোহায় রোদে 
           আবার তাতায় বৃষ্টিঝড় এসে

ইচ্ছা ভীষণ নাক-উঁচু 
অনুচিত আবার দেদার অহংকারী 
আঙুল চোষে বাক্যহারা সুতো  

একদিন দুপুরে ফাঁকা বাড়িতে বাড়ির নতুন বউকে একলা পেয়ে 
          হৃদয়ে ছুঁচ ফুটিয়ে দেয় ইচ্ছা 
          অনুচিত সেই ছুঁচ ধরে এক হ্যাঁচকা টান মারে 
          মেঝের দিকে চেয়ে থাকে সুতোয় বেঁধে 
 
পাড়ায় হঠাৎ পাঁচ বছর আগেকার ঠগবাজকে দেখতে পেয়ে 
          দাঁত খিঁচিয়ে ওঠে ইচ্ছা
          অনুচিত তাকে কনুই দিয়ে ঠেলা মারে 
          ভদ্রতার হাসি ফোটায় সুতোর সুড়সুড়িতে 

বাসের সিটের কোণে পড়ে থাকা কয়েকভরি সোনার গয়না পেয়ে 
          পকেটে চালান করতে চায় ইচ্ছা 
          অনুচিতের হুকুমে দুই রামথাপ্পড় পড়ে গালে 
          থানায় গিয়ে জমা দেয় সুতোর অনুরোধে 

তবুও অনেকে এক টান মেরে 
          ফেলে দেয় সুতো ছিঁড়ে 
          দুইয়ের মধ্যে মিলন ঘটায় 

          অতশত না ভেবে

কলমের লিঙ্গ


রাত্রি তিনটে অবাক হয়ে দেখছে টেবিলের দিকে 
যেখানে একটা টেবিলল্যাম্প
একটা পাতা যার অর্ধেক সাদা 
একটা লাইন ধরে দ্রুতগতিতে দৌড়চ্ছে একজন 
সে লিঙ্গহীন 

পেছনে কিলবিল অসংখ্য অক্ষরপোকা
সামনে সাদাটুকুর লাল আবেদন 

চোখ বুজে মাঝে মাঝে দম নেয় স্তনযুগল 
একটু পরেই পাশ ফেরে পুরুষাঙ্গ 

দেখেও থামে না সে 
কিছু বোধগম্য হয় না তার কাছে
এক মুহূর্তও না 

নতুন নতুন পাতা, সবগুলো ফ্রেশ
নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানায় সে
              কন্ডোম নেই সিলেবাসে 
              অভিধানে নেই জন্মনিরোধক

শুধু একজনকে ভালোবাসে সে
মনকথা
সেও লিঙ্গহীন, এক বিশুদ্ধ প্রেম
নিষ্কাম চুমুতেই প্রসব দেয় 
কাহিনীর পর কাহিনী

শেষ পাতাকেও সযত্নে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে সে
সপ্রতিভ উজ্ব্বল কলম 

বুক থেকে ঝপাঝপ নেমে এসে প্রণাম জানায় দুই বোন
তাদের দেখাদেখি অমুক-ও লাফ মারে উরুসন্ধি থেকে
কুর্নিশ জানাবে বলে
             

অ্যাম্বুল্যান্স


বিছানায় চিৎপটাং 
শরীর এখন ফাঁকা একটা রাস্তা

একধারের ফুটপাথে উঠে আসে নতুন চিন্তা 
একটা নয়
অনেকগুলো একসাথে 

অন্যধারের ফুটপাথ ধরে 
চলে ব্রেক-হীন সাইকেল 
শেষে ধাক্কা মারে ব্রেনের ল্যাম্পপোস্টে

হার্ট শুধু অ্যাম্বুল্যান্স  
অলিন্দ থেকে নিলয়ে
নির্দিষ্ট ছন্দে শব্দ করে ছুটে চলছে সমানে 
বার সাতদুয়েক মিনিটে 

ভোরের আলো এসে চোখের কড়া নাড়ে
পাশে উদ্বিগ্ন রবিবাসরীয়


30 Oct 2013

বেকার পাপড়ি


বুকপকেটে গুচ্ছ ফুল 
পাপড়ি গুলোতে সারা বছরের একটা করে ক্রসচিহ্ন

সিক্ত নোনতা পা'দুটি হামাগুড়ি দিতে দিতে থমকে যায় 
প্রতিবার একটা পাহাড়ি পাথরের সামনে 
কিছু খারাপ ফুলঝুরি এসে লাগে মনে 
কিছু রেখে দেয় পরবর্তী হোঁচটের 
ওয়েটিং লিস্টে

আঙুলের ছোঁয়ায় ভুস্ হয়ে যাওয়ার আগেই 
ঘুমের বুদবুদ শুষে নেয় পাপড়িগুলো 

সারারাত মোমবাতি জ্বালিয়ে ক্লান্তির সৎকার করে 
ফর্ম জমা দিয়ে আসে নতুন করে ক্লান্তি পাওয়ার 
উত্তেজনায়

সেক্সি ডার্কনেস


দাও নিভিয়ে
           করে দাও বন্ধ
এঁটে দাও 
গুঁজে দাও 
           কাগজ সব ফাঁকফোকর 

ঘুঘুটে অন্ধকার প্রখর 
কুকুচে কালো তুখোড় 
           ভালোলাগার একটা ঘোর

এই হটশট সেক্সি ডার্কনেস 
           সবসময় সুইচ অন

কাজ-ঝামেলা


কাজ একবার 
বেঠিকভাবে শুরু করলে 
            শীতে গরমাগরম হাওয়া 
            ঘামে অন্তর্বাসের আত্মসমর্পণ 
লোকসভায় কেউ ভোট দেয় না 
            ভুল-মাংসে গড়া প্রার্থীজন 

কাজ একবার 
অর্ধেক করে ছাড়লে 
            কপালে পড়ে খিস্তিমাখা টোকা 
            রোজ রাতে দুঃস্বপ্নের কল 
ব্রেক-সভায় কেউ পায় না 
            লাঞ্চ খাওয়ার কুড়ি টাকার কুপন 

কাজ একবার  
নিখুঁতভাবে শেষ করলে 
            পৃথিবীর মায়া ছাড়িয়ে 
            পরলোকে চলে যায় কাজটা 
শোকসভায় কেউ করে না 
            তার নাম উচ্চারণ

মদ খাও


গলায় মদ ঢাললে

প্রতিটা যুক্তি খুব সম্ভবত
            অতি সাবধানে 
            মেপে চেপে
            খুব দক্ষতার সাথে
মোড়া থাকে আর একটু রঙচঙে

মদ একটু বেশি পড়লেই 
সিনেমার পর্দা সরে যায় 
            হয়ে যায় আরম্ভ 
            যুক্তিতে ফাটল
            উঁকি মারে অকাট্য সত্য 
মোড়া খুলে লজ্জা ফেটে দুমদাম 

তাই বলি শোনো ভাই 
খাও মদ খেতে চাইলে  
            যেখানে খুশি 
            মোড়া-ফোঁড়া নিয়ে 
            মাথা ঘামাতে হলে 
নির্জন জায়গা বেছে নাও একা চুপচাপ



আন্ডার কনস্ট্রাকশন


চোখদুটি ঘুরপাক খায় 
             ঠিক যেন কম্পাস
হাতদুটি লম্বা হয়ে যায় 
             ঠিক যেন রুলার স্কেল
মনটি দোল খায় 
             ঠিক যেন প্লাম্ লাইন
মাথার চুল সব খাঁড়া
             ঠিক যেন মার্কার পেন্সিল 
যৌনাঙ্গে লাগে সুড়সুড়ি
             ঠিক যেন রবার 
পাদুটি কিন্তু নড়ে না 
             ঠিক যেন ফেভিকল্ 
শরীর জুড়ে উন্মাদনা 
             ঠিক যেন ইলেকট্রিক স্ক্রু-ড্রাইভার 
প্রেমিকা তুমি ঠিক
             যেন হোম্ আন্ডার্ কনস্ট্রাকশন্

সমাজের মুখ


পারছো যতদিন না 
লিমিটে পৌঁছতে
                  ততদিন দেখা নেই সমাজের হাসিমুখ 
খাওয়াবে না তোমাকে ডেকে
                  নতুন কেনা বাড়িতে নেমন্তন্ন করে
সকালে ব্যাজার
দুপুরে গোমড়া
রাতে ভেংচি কাটা
                  চলবে ততদিন ধরে 
পারবে যবে ছুঁতে 
অপেক্ষারত লিমিটটা
                  উজ্জ্বল হবে সারা পাড়া সমাজের গর্বমুখ 
নাচবে মাথায় তুলে তোমাকে
                  নিয়ে যাবে নামী দামী রেস্টুরেন্টে 
সকালে মিষ্টিমুখ 
দুপুরে পিঠচাপড়ানি 
রাতে আড্ডা মারা 
                  চলবে রোজ রোজ 
করবে যখন অতিক্রম 
সদ্যপাওয়া লিমিট 
                  জ্বলবে তেলেবেগুনে সমাজের চেনামুখ
ধরে পেটাবে তোমায় ধরে 
                  সমানে মাথায় পড়বে মেলা বাড়ি
সকালে গালিগালাজ 
দুপুরে ছিছিক্কার 
রাতে লাঠিপেটা
                  চলবে যতদিন না ক্ষমা চাইছো 

                             

নির্লিপ্ত সে


তার চুপ হয়ে থাকাটা

সূঁচের মত ফুটিয়ে দেয় 
                         গভীর বেদনার প্রথম ফোঁটা দিয়ে

তার নিঃশব্দতা
হ্যাংলার মত চেটেপুটে খায় 
                         দীর্ঘ সম্পর্কের প্লেটে থাকা ওমলেটের তেল 

তার সাড়া না দেওয়াটা
পাগলের মত ছুঁড়ে দেয় 
                          বহুদিনের প্রেম দিয়ে গড়া মাটির গ্লাস

তার স্তব্ধহীনতা
চিত্রশিল্পীর মত কায়দা করে 
                         আঁকে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে যাওয়া ক্যানভাসে 

তার মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটা 
চাকরী-না-পাওয়া যুবকের মত 
                         হাত বুলিয়ে দেয় প্রতি স্মৃতিটুকুর ধারগুলি 

তার নির্লিপ্ততা 
হার-না-মানা প্রতিপক্ষের মত 
                         কুড়িয়ে যত্নে রাখে নতুন শুরু করবে বলে