27 Feb 2015

যতক্ষণ না আমি হয়ে যাচ্ছি স্প্যার্টাকাস


অনেক সময় এমনও হয় যে
দাঁড়িয়ে আছি একা একা


পেছনে বন্ধ দরজা
এ পাশে দেওয়াল
ও পাশে খোলা জানালাসহ দেওয়াল
আর সামনে প্রিয়বন্ধু শাওয়ার, কিন্তু দরজার মত তারও মুখ বন্ধ


জল নেই, আছে শুধু আলো বাতাস আর
আমার খালি গা দেখার জন্যে
দূরের বাড়িগুলোর ছাদ 


কোমর থেকে বের করলাম
একটা কাল্পনিক তলোয়ার আস্তে আস্তে
খুব আস্তে
যতক্ষণ না আমি হয়ে যাচ্ছি স্প্যার্টাকাস, জুলিয়াস, চেঙ্গিস বা ওদের মত
একজন


আসলে ব্যাপারটা
বোরখা পরা মেয়েদের খালি গায়ের মত, তাই আজ-ও
বলতে কেমন যেন লজ্জা করে

25 Feb 2015

ঠাণ্ডামাথার শত্রু


ঠাণ্ডামাথার শত্রুদের মনে প্রতিযোগীসত্তা জন্মায় । এদের কাজ থেকে শিল্পসৌন্দর্যের আলোকছটা বেরোয় ।

অন্যথায় রক্তে রক্তে গাঢ়তর হয় শিল্পের অন্ধকার ।

অকাজের মাহাত্ম্যকথা


গালে ঘাড়ে গলায় হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে রোদে রাখা ধাতুর ছ্যাঁকা বুঝে নেওয়া । 
দু'হাতের তালুতে কপাল আর মাথার পেছনটা চেপে ধরে বেড়ে দেওয়া ভাতের ভাপ মেপে নেওয়া । 
খক্ খক্ খঅঅঅক্ করে ঝেড়ে কাছের লোকজনদের কয়েক ইঞ্চি তফাতে সরে মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া । 
থার্মোমিটার ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে দু-তিনবার চেক করে ফাইনালে আপনবগলে চালান করে দেওয়া । 
ঘাম মুছে আলোর দিকে তুলে পাঁচ-ছবার ঘুরিয়ে রূপোন্মাদনা আঁচ করে নেওয়া । 
পটাং করে টিপে বের করে জলের সাথে গিলে কাঁধদুটো একটুখানি উঁচিয়ে নামিয়ে দেওয়া । 
'ভাত খাবো না'সূচক মাথা মৃদু নাড়িয়ে সটান করে শুয়ে চাদরচাপা দেওয়া । 
ভ্রু উঁচিয়ে উচ্চশিক্ষিত হাবভাব সাজিয়ে পাখার অগুনতি ব্লেড গুনে যাওয়া ।

এইসব অকাজের মাহাত্ম্যকথা কে বোঝে ? সময় বোঝে খালি । আর মাপে মাপে এক্সটেনশন্ দিয়েও দেয় বোনাস হিসেবে ।

#‎হোকট্যাটু‬


রাফ এন্ড টাফ । ট্যাটুবাজ । সো অ্যাটিটিউডেক্সি । লেফট্ এন্ড রাইট । লেফট রাইট, লেফট রাইট, লেফট রাইট । লেফটের পাল্লা ভারী পড়লো আজকের ছুটির সুন্দর ঝকঝকে সকালে । বামপন্থীদের সেই পুরোনো দগদগে করুণকাহিনীকে ছাপিয়ে উঠে আসা এই নাম-ভুলতে-বসা বামহাতি হিরোর স্টোরিলাইনটা বেশ স্মুথ । যত পাঞ্চলাইন, তত বাহ্-লাইন । আরেক রাফ-টাফ হিরো, যার খ্যাতি এখন পাকাপাকিভাবে দুনিয়াজালবন্দী, সে আগের ম্যাচে ফের দেখিয়ে গেলো যে শরীরে আঁকা ট্যাটু-ফ্যাটু মনঃসংযোগের সাথে বিন্দুমাত্র রেষারেষি করে না । এবারে বামহাতির ট্যাটুগিরি খেল দেখিয়ে গেলো তার অসামান্য অনবদ্য অনন্যসাধারণ সব ড্রাইভে ।

তাই তো ! আজও আনাচে কানাচে আমাদের সমাজের দাঁত মাজতে মাজতে বলা হয় - গায়ে ওটা কি আবার ? ট্যাটু নাকি ? এত পাকামি কিসের ? এইসব করে ফোকাস নষ্ট করার কোনো মানে হয় ? ইত্যাদিকার টুথপেস্ট দিয়ে ট্যাটুবাদীদের ট্যাটু বাদ দেওয়ার হুকুম । এগুলো নাকি শুধু বখাটে, রক ব্যান্ড,স্টাইলিস্টদের জন্য মানায় ?! যারা সিরিয়াসনেসের গাইডলাইনস্ মেনে চলতে চায় না, তাদের জন্য খোলা আছে পার্লারগুলো যেখানে চোখের জল আর গায়ের রক্ত একসাথে ফেলতে ফেলতে পার্মানেন্ট ট্যাটু করাতে যায় কিছু 'বখাটে' । কিন্তু এই ট্যাটু করানোর মধ্যে কষ্টযন্ত্রণা দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ানোর একটা আপাত কোয়ালিটি বুঝি থাকে না যেটা পরবর্তীকালে যেকোনো ফিল্ডে নামলে ভালো কাজ করার তাগিদ বাড়িয়ে দেয় ?! হয়তো তাই করে থাকতে পারে । নাহলে ধবনের আজকের সেঞ্চুরিটা তেমন ইম্প্রেসিভ লাগতো না কারো কাছে । 

‪#‎হোকট্যাটু‬ ! ‪#‎হোকসেঞ্চুরি‬

হে বামপন্থীগণ, তোমরা একবার ট্যাটু ট্রাই করে দেখতে পারো । যদি লাকি ওমেনের মত কাজ করে ! হু কেয়ারস্ ?

23 Feb 2015

দোভাষী বাঙালী


বুকের ছাতি তেমন চওড়া নেই আমার । চর্বিটর্বি এমন কিছুও নেই বলে কঙ্কালঢাকা পাতলাচামড়াযুক্ত রোগাবুক ফুলিয়ে বাঙালিত্ব দেখানোর মত সুবর্ণসুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যায় । আমি কি মনেপ্রাণে বাঙালী ? নাকি বাংলায় জাস্ট লিখি-পড়ি-খিস্তোই আর উল্টোদিকে জীবনে সারভাইভ করার জন্যে মাঝেমাঝে অক্সফোর্ড ডিকশনারি বই বের করি ? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হল আমার ভিতরে যে ছটফটে কঙ্কালটা আছে সেটা কি বাঙালী জাতের স্ট্রাকচার ? হতে পারে এটা একটা অযৌক্তিকতার প্রশ্ন । কিন্তু আঁতে আঁতে কত যে উত্তর দাপিয়ে বেড়ায় সেগুলো নানা জটিলতায় ভর করে যেকোনো প্রশ্নকে এক ধাক্কায় সহজতম করে দিতে ওস্তাদ ।

ঠিক সেরকম আঁতেলমার্কা উত্তর দিতে গিয়ে যদি বলি যে আমার ভিতরের ছেলেমানুষী কঙ্কালটা আসলে একটা হাড়কব্জা যেটাকে চামড়া দিয়ে ঢেকেঢুকে রাখা থাকে মমির মত । সুতরাং আমরা একেকটা চলমান বা জীবিত মমি । এটাই হলো বাঙালীর জাত অর্থাৎ এক উৎকৃষ্টমানের পিওর আঁতেল । 

এবার বাঙালী পরিবারে বড় হওয়া একজন মমির পক্ষে নিজেকে বাঙালী বলে দাবী করার পেছনে সঙ্গত কারণ আছে । যেমন আমার মমিটা ছুটির সকালে উঠে প্রথমে ইংলিশ নিউজপেপার নিয়ে পড়ে । তারপরে সে তার ল্যাদপ্রবণ হাত বাড়িয়ে দেয় বাংলা কাগজের দিকে তাও যদি সময় থাকে । কাজের দিনে তার অফিসে সমস্ত কমিউনিকেশনের মাধ্যম ইংলিশ । শুধু কথা বলে বাংলায় । তাও অন্যান্য বাংলাভাষী মমিদের সাথে । আর বাকি অবাঙালী মমিদের সাথে বকে ইংলিশে । তাহলে নিশ্চয়ই খাঁটি বাঙালী তো আমার এই গোবেচারা মমি । টু বি সঠিক, দোভাষী বাঙালী এই মমিটা । 

এমনকি তার ছেলে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে । ফার্স্ট ল্যাঙ্গোয়েজ ইংলিশ হলেও সেকেণ্ড ল্যাঙ্গোয়েজ অবশ্যই বাংলা । অ আ ই ঈ শিখছে আর বাদবাকি সব বই হয় ইংলিশে ছাপা, না হয় খোদ ইংলিশের বই । অমন পুঁচকে মমিটাও কি তাহলে বাঙালী নয় ? আবার তার ঠাকুর্দার মমির সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত জমানায় বাড়িতে বাংলার কাগজ পড়া, আর অন্দরমহলের লোকজনের সাথে বাংলায় বকর বকর করা ছাড়া সবকিছুই ইংলিশে চলতো । বর্তমানে ফেসবুকে ইংলিশে ঝাড়ে কারণ বাংলা হরফে লিখতে অভ্যস্ত হতে পারে নি । শুধু পড়তে পারে আর মন্তব্য করে ইংলিশ হরফে, নতুবা শুদ্ধ ইংলিশ ভাষায় আরামসে টাইপ করে । সে কি তাহলে বাঙালিয়ানা বজায় রাখতে ব্যর্থ ? বাকি বলতে মা-বৌদের কথা আর তুলতে মন চাইছে না যতই বাঙালী হোক । এরকম মনে হবার কারণটা কি ? বাঙালীমাত্র পুরুষতান্ত্রিক বলে ? 

তা এতকিছু বকছি কেন ? যা বলছি তার অর্ধেক মানে তো বোঝা গেলো না কিম্বা বলার উদ্দেশ্য ঠিক পরিষ্কার লাগছে না, কেন ? বাঙালীর তকমাআঁটা কখনো শুকোয় না বলে ?
বাঙালী গায়ে বাঙালী জ্বর নিয়ে এতো বাঙলামি করা কি হাস্যকর নয় ? আজকের দিনটা বিশেষ একটা দিন কিনা যার কারণে ফেসবুকব্যাপী ছবিতে দেখা বাংলাদেশের লালরঙের গোলমত জিনিসটাকে 'বুলস্ আই' ধরা হচ্ছে । আর তাকে নিশানা করি মোবাইলের রিদমিক কিপ্যাডে সুইচ করে অথবা ল্যাপটপের অভ্র বের করে বাংলায় টাইপ করে শুভেচ্ছামার্কা প্যারা বাই প্যারা তীর নিক্ষেপ করে । কেন ? 

ওরা বাঙালী আর তাদের দেখাদেখি আমরা ভাবতে, ভাবনাচুরি করতে, নিজের স্টাইল বের করে একটুখানি আলাদা হতে ভালোবাসি । ভালোবাসি দুমুখো বাঙালী হতে । বাংলা ভাষায় সেই দ্বিচারিতা প্রকাশ করতে আমাদের বুক কাঁপে না । বোধ হয় । 

অবশ্যই এটা বলতে বাধা নেই - বাংলাভূমিটা একবার কেঁপে উঠলে আমরা ভয়ে এদিক ওদিক চাওয়াচাওয়ি করি ।

সো অ্যাটিটিউডেক্সি


রাফ এন্ড টাফ । ট্যাটুবাজ । সো অ্যাটিটিউডেক্সি । লেফট্ এন্ড রাইট । লেফট রাইট, লেফট রাইট, লেফট রাইট । লেফটের পাল্লা ভারী পড়লো আজকের ছুটির সুন্দর ঝকঝকে সকালে । 

বামপন্থীদের সেই পুরোনো দগদগে করুণকাহিনীকে ছাপিয়ে উঠে আসা এই নাম-ভুলতে-বসা বামহাতি হিরোর স্টোরিলাইনটা বেশ স্মুথ । যত পাঞ্চলাইন, তত বাহ্-লাইন । আরেক রাফ-টাফ হিরো, যার খ্যাতি এখন পাকাপাকিভাবে দুনিয়াজালবন্দী, সে আগের ম্যাচে ফের দেখিয়ে গেলো যে শরীরে আঁকা ট্যাটু-ফ্যাটু মনঃসংযোগের সাথে বিন্দুমাত্র রেষারেষি করে না । এবারে বামহাতির ট্যাটুগিরি খেল দেখিয়ে গেলো তার অসামান্য অনবদ্য অনন্যসাধারণ সব ড্রাইভে ।

তাই তো ! আজও আনাচে কানাচে আমাদের সমাজের দাঁত মাজতে মাজতে বলা হয় - গায়ে ওটা কি আবার ? ট্যাটু নাকি ? এত পাকামি কিসের ? এইসব করে ফোকাস নষ্ট করার কোনো মানে হয় ? ইত্যাদিকার টুথপেস্ট দিয়ে ট্যাটুবাদীদের ট্যাটু বাদ দেওয়ার হুকুম । এগুলো নাকি শুধু বখাটে, রক ব্যান্ড,স্টাইলিস্টদের জন্য মানায় ?! যারা সিরিয়াসনেসের গাইডলাইনস্ মেনে চলতে চায় না, তাদের জন্য খোলা আছে পার্লারগুলো যেখানে চোখের জল আর গায়ের রক্ত একসাথে ফেলতে ফেলতে পার্মানেন্ট ট্যাটু করাতে যায় কিছু 'বখাটে' । কিন্তু এই ট্যাটু করানোর মধ্যে কষ্টযন্ত্রণা দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ানোর একটা আপাত কোয়ালিটি বুঝি থাকে না যেটা পরবর্তীকালে যেকোনো ফিল্ডে নামলে ভালো কাজ করার তাগিদ বাড়িয়ে দেয় ?! হয়তো তাই করে থাকতে পারে । নাহলে ধবনের আজকের সেঞ্চুরিটা তেমন ইম্প্রেসিভ লাগতো না কারো কাছে । 

‪#‎হোকট্যাটু‬ ! ‪#‎হোকসেঞ্চুরি‬

হে বামপন্থীগণ, তোমরা একবার ট্যাটু ট্রাই করে দেখতে পারো । যদি লাকি ওমেনের মত কাজ করে ! হু কেয়ারস্ ?

16 Feb 2015

হাসিমুখী পাকিস্তান


টিভির পর্দা স্বপ্নের মত হলেও মিথ্যাবাদী হয়না । হাসিমুখী পাকিস্তান দেখছি । প্রত্যেককে স্ব স্ব পজিশনে বাস্তববোধবুদ্ধিসম্পন্ন লাগছে । বেশ স্পোর্টিংলি ।

এদের দেখে কে মনে করার চেষ্টা করবে সেইসব খুনী সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণাত্মক ইতিহাস ? কে বলবে এরা সকলে এমন একটা দেশের প্রতিনিধি সেইদেশে কিছুদিন আগে ঘটে গেলো পেশোয়ারহত্যা ? কে বুঝবে কাশ্মীরনীতির শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৈত্রীসূত্রে আবদ্ধ হবার জন্যে যখন তখন বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় ওই দেশে ? সবুজমাঠে সীমিত এই খেলার দৃশ্য দেখতে দেখতে কি আর ওইসব ভাবতে ইচ্ছা করে কারো ? 

এটা মানতে কষ্ট হয় যে সারাবিশ্ব আবার তোপ দাগাবার তালে থাকবে এই টিভির পর্দায় দেখা পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে । দুনিয়াখবরের শিরোনামে চলে আসবে ভিলেনের তকমা নিয়ে । সব ভুলে যাবো খেলা দেখার আনন্দ ফুরিয়ে গেলে । 

এমনকি এই সাতফুট লম্বা বোলার ইরফানকে দেখতে যেমন ভয়ঙ্কর নয়, বোলিং স্টাইল তেমন তালিবানীসুলভ বা সেই কাসভের মত দাপুটে নয় । ঠিক এরকম শক্তধারালো-দাঁত-আছে-কিন্তু-মারণবিষ-নেই সুন্দর্শনীয় পাকিস্তান আমাদের চাই-ই চাই । 

সাথে চাই কোহলির আজকের সেঞ্চুরির মত সময়োপযোগী দেশপ্রেমী শান্তিবার্তা । একবার নয়, বারের পর বার ।

বইক্রেতা ও পাঠক


বইক্রেতা আর পাঠকের মধ্যে তফাৎ বোঝার জন্য একটা ভালো বই যথেষ্ট । কিন্তু ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে পার্থক্যটুকু সবকটা ম্যাচ দেখার পর ধরা যায় । হয়তো বা ধরা যায় না বলেই ঘন ঘন অ্যাশট্রে উল্টে ফেলে দিতে হয় ।

সেইসময়কার মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া বইটা তখনি বইক্রেতা ও পাঠক একই আসনে বসিয়ে দিতে চায় ।

হার্টশেপড্ বেলুন


দশ বাই পনেরো বর্গফুট বেডরুমবন্দী মেঝে থেকে সাড়ে দশফুট উঁচুছাদ অবধি যে পরিমাণ গায়ে-না-লাগা-ধীরস্থির বাতাস ঠাসানো থাকে, সেই পরিমাণে কত গুলো হার্টশেপড্ বেলুন হার্ট ঠেলেঠুলে ফুঁউউ দিয়ে বানানো যাবে যেগুলো এক একটা একফুটী কিউববক্সে আরামসে রাখা যায়, একটুও ফটাস-ফটাসামি না করে ? 

আমার ধারণা বেডরুমে না থেকে রাস্তায় বেরিয়ে চলাকালীন ঠিক ততগুলো হার্টশেপড্ বেলুন চোখে পড়বে না । থাকলেও এতগুলো একসাথে নয় । সংখ্যার নিরিখে এই ঘরবন্দী ভালোবাসা অনেক । মানগত দিক থেকে অনেক অনেক অনেক ভালো । আর ? বিশ্রামগত দিক থেকে ১০০% ফ্রি । তর্কযুক্তিগত দিক থেকে ব্যক্তিপিছু ০.০০১% ছাড় ।

কাঁচ-যাপন


কাঁচের মত ভাঙতে গেলে আগে পায়ের তলায় মাটি শক্ত হতে হবে । একথা অনেকে হয়তো মানে । আর যারা মানে না তারা শুধু ছুঁড়ে ছুঁড়ে কাঁচ ভাঙে, পা থেকে অনেক অনেক অনেক দূরে একটা কিছু লক্ষ্য করে । অব্যর্থ কাঁচভাঙা কখনোই সুখের হয়না যেখানে টিপ একটা নিছক স্পোর্টিং । 

চোখের খোলা কাঁচের উপর আরেকটা কাঁচ নিলে আমরা ধরে নিই শক্তিহ্রাসের স্বাভাবিকতা । কিন্তু ডাক্তারেরা আমাদের আশ্বাস দেয় 'পাওয়ার' বেড়ে গেছে বলে । উঃ ? পারে এরা ? দারুণভাবে ম্যানেজ করতে পারে । এই ম্যানেজমেন্টের চেয়ে বড় মিথ্যা আর হয় না । কারণ, উপরিকাঁচে মিথ্যা ধরা পড়ে । 

অনিল কাপুরের মিস্টার ইন্ডিয়া । সেই লালকাঁচ । অশরীরীর একমাত্র দুর্বলতা । মনে পড়ে ? নিশ্চয়ই । শুধু ভুলে যাই আমাদের সশরীরেও হাজারো সমস্যা । কাঁচের টুকরো বিঁধে দিলেই কি আর সমস্যা মিটবে ? বোকার মত প্রশ্ন করে ফেলি আর রক্তের সাথে বেরিয়ে আসে লাল লাল কাঁচ । বস্তুত নিরুত্তর । এতকিছুর পরও হাততালি কুড়োয় মিস্ ইন্ডিয়ারা । 

পুলিশ আসে । অ্যাম্বুলেন্স আসে । লোকজন জমা হয় । সবই চলে খুব স্বাভাবিক ছন্দে । আস্তে আস্তে সব ফাঁকা হয় দুর্ঘটনাগ্রস্থ গাড়িসুদ্ধু । রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা চিকমিক করা কাঁচের গুঁড়ো সযত্নে এড়িয়ে চলে পরের গাড়িগুলোর চাকা । চাকা কি এতটা মজবুত নয় ? নাকি অতিসাবধানতার শো-অফ ? বরং বসে বসে একটা রিপোর্ট বানাই যার হেডিং 'কাঁচের গুঁড়ো দিয়ে যায় চেনা' । 

যাদের মুদ্রাদোষ নেই তাদের মতে বেশিরভাগ একই কাঁচের দু'পিঠ । এপিঠে 'আমি', ওপিঠে 'আমি, তুমি ও সে' ।

9 Feb 2015

সব লেখক বা কবি আসলে কাল্পনিক


কোথাও না কোথাও চারিত্রিক মিল খুঁজে পাওয়া যায় । খুঁজে পাওয়ার সার্থকতা বুঝিয়ে দেয় সব চরিত্র মূলত বাস্তবিক-ই ।

শুধু মিলটা ক্ষণিকের জন্য হলেও আমাদের নিয়ে যায় চরিত্রস্রষ্টার কাছে । বিস্ময়ের সাথে কল্পনা করি সে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে কোথায় বসে কখন চরিত্রগুলো বানিয়ে গেছে । ভাবি যদি তার মত করে এমন লিখতে পারতাম ।

চরিত্র নয়, সব লেখক বা কবি আসলে কাল্পনিক

হ্যাপিনেসের একশেষ


রোজকারের মত প্রপোজালের পরিবর্তে চকোলেট খেয়ে টেডিবিয়ার সেজে প্রমিস দিয়ে চুমুবাজদের সাথে হেগে দেগে ভ্যালেন্টাইনস্ দিনযাপন করলে কার কি হয় ? সবটাই সামনের দিক থেকে আসে, পেছনের দিকে যায় । সবই হ্যাপিনেসের একশেষ !

অস্থিতে অস্থিতে আমাদের অস্থিরতা


মাঝেমাঝে ঘোর সন্দেহ হয় যে আমরা কি আদৌ রক্তমাংসের তৈরী? সমস্ত রক্ত সুড়ুৎ সুড়ুৎ করে ড্রিংক করার পর মাংসিক তলানিটুকু পড়ে থাকে ছবির পেছনে । ছালচামড়ার ফ্রেমসহ সেই ছবিটাকেও পাল্টাতে হয় সময়-অসময়-সুসময়-দুঃসময়ের প্রেক্ষিতে । কেবল পাল্টানোর মুহূর্তে স্পষ্ট শোনা যায় অস্থিতে অস্থিতে আমাদের অস্থিরতা ।

6 Feb 2015

ওয়াই-ফাই


কতটা কার্যকরী হবে শহরে ওয়াই-ফাই চালু হলে সেটা শুধু বোঝা যাবে চালু হবার দিন থেকে । সার্ভিস কেমন দেবে ? কত বা ফাস্ট হবে ? থ্রি-জি ছেড়ে ফোর-জি'তে অভ্যস্ত হলে থ্রি-জি'তে ফিরে আসার সম্ভাবনা কমবে ? এলেও বা আগেকার তুলনায় আপাত শ্লথ লাগবে না তো ? এত টাকা (নেট চার্জ ফি) কোত্থেকে আসবে বা কে কারা পকেট মারবে ? পরিবেশদূষণ, ছিনতাই-খুন-ধর্ষণ, সামগ্রিক প্রশাসনিক শোষণ-এর জ্বালায় অতিষ্ঠ প্রাণের কথা ছেড়ে এই প্রতিশ্রুতি দেবার অর্থ কী ? সর্বোপরি গলা টিপে দমবন্ধ করার মত জনবহুল কলকাতা জুড়ে নেট-সার্ভে-কারীর সংখ্যার ঠেলায় কেমন বা কাজ দেবে - ইত্যাদিকার সন্দেহীয় প্রশ্নসব একসাথে জড়ো করে একপাশে সরিয়ে রাখলাম, যতই না প্রাসঙ্গিক হোক । কিন্তু একবার শুরু হলে নেট অ্যাক্সেস পেয়ে পটি করতে করতে পর্নোগ্রাফি দেখা শুরু করে ডেটিং চলাকালীন জরুরী সব তথ্য ডাউনলোড করা ছাড়াও বেশ কিছু অভূতপূর্ব সুবিধা পাওয়া যাবে । তার অন্যতম হল - নিজের অজ্ঞতা প্রাণপণে ঢেকে রাখার চেষ্টা বা সেই ভয়টুকু অন্ততঃ থাকবে না যখন চটজলদি সমস্ত উত্তর একনাগাড়ে পাওয়া যাবে ।

যেমন ? ধরা যাক হঠাৎ করে কোনো এক টিভি চ্যানেলের গাড়ি এসে থামলো । তা থেকে একজন মিডিয়ার লোক হাতে মাইক নিয়ে পথচলতি কয়েকজনকে ধরে ধরে জেনারেল নলেজের কিছু প্রশ্ন করছে । সঙ্গী ক্যামেরামান । বিভিন্ন এক্সপ্রেশন ধরার জন্যে উত্তরদাতাদের দিকে ক্যামেরা তাক করা । একটা প্রশ্ন করা হল - "পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কে ?", জবাবে মাথা না চুলকে, মুখখানা শুকিয়ে অ্যাইটুকুন না করে, জিভ দিয়ে ঠোঁট না চেটে, চোখদুটো চোরের মত এদিক ওদিক না ঘুরিয়ে বা একচোখ বন্ধ রেখে কোনাকুনি দাঁত খিঁচিয়ে জানতাম-কিন্তু-ভুলে-গেছি-মার্কা আহাম্মকিপনা না করে স্মার্টভঙ্গিতে স্মার্টফোন বের করে স্মার্টলি সঠিক উত্তর বের করে জানালো ।

কে আর আটকাচ্ছে যতক্ষণ না সেই সন্দেহীয় প্রশ্নের উত্তরগুলো একে একে বেরিয়ে এসে গোটা স্মার্টসিটিকে আনস্মার্ট করে দিচ্ছে ?! সে এক মোক্ষম হতাশার সিটি !!!

4 Feb 2015

যেভাবে শীতপড়া দেখি ?


শীতের ফোঁটাগুলো সব এক একটা বিদ্যুৎবাহী, যদিও ইলেক্ট্রিসিটি বিলে তার নাম থাকে না । চামড়া ফাটলে বুঝি ইউনিট এক করে বাড়লো । 

এদিকে নতুন বইয়ের মলাটে বার বার খোলা বাহু পড়ে যায় । আর তড়াক করে হাতটা সরিয়ে নিই । এভাবে কি বইপড়া হয় যেভাবে শীতপড়া দেখি ?

3 Feb 2015

ফিরে আসার লজ্জা


তাই বলে হারিয়ে যাবে ? এর আগে কবে কোথায় কিভাবে এবং কতবার হারিয়ে গেছিলে তার সমস্ত হিসেব একটা খাতায় করা ছিলো । সেই খাতাটাও হারিয়ে গেছে । কত লোকে হারিয়ে যেতে চায় । এই দুনিয়াটা প্রতিগুগলে যে ক্রমশঃ ছোটো হয়ে আসছে সেটা কেউ বুঝতে চায় না, বোঝে শুধু হারিয়ে যাওয়ার আভিজাত্য, আড়ম্বরতা ও আনুষ্ঠানিকতা যা আজকের দিনে সস্তা । তুমিও বুঝি তাই করতে চাও ? শুধু একটা কথা বলে রাখি পরদিন তোমার ফিরে আসার লজ্জাটা আমাকে যেন দেখতে না হয় । কারণ এই লজ্জা যাবতীয় লজ্জার মত কোনোদিন ঢাকবার নয় ।