30 Jan 2014

Elomelo #54


আমার আপন কোনো কাকা নেই
তবে আছে
একটি কাক যে আসে মাঝেমধ্যে
এসে বসে বারান্দায়

আমি ওকে কখনো কাকা বলে ডাকি না
তাও সে নিজে দাবী করে
'কা কা' 'কা কা' বলে

কি যে করি আমি ?

কাকটাকে তাড়াবো
না 'কা কা' কে ?



29 Jan 2014

Elomelo #53


আজ 
মনের খুব শরীরখারাপ করছে 
তাই 
শরীরের খুব মনখারাপ

সারাদিনে মাত্র একবার
মুখ চাওয়াচাওয়ি করল দুজনে 

দুজনের চোখে একটা কিন্তু ভিন্নপ্রশ্ন 

প্রথমজনের প্রশ্ন - 
" এইভাবে আর কত দিন চলবে ? "
দ্বিতীয়জনেরটা -
" কাল হবে তো ? "

Elomelo #52


একটু আগে-ই
পৃথিবী ঘুরতে শুরু করেছে

তার আগে অবধি
আমি একা অনেক ঘুরেছিলাম
বেখেয়ালে
অখুশিতে
সবার অমতে

আর সেই সাথে
বানাচ্ছিলাম তার চুম্বক

28 Jan 2014

Planned Book List # 2014


১. Herbert - নবারুণ ভট্টাচার্য (Dey's Publishers )
২. Fatyaru - নবারুণ ভট্টাচার্য (Dey's Publishers / Dhyanbindu, স্টল # - ৪১৪)
৩. Lubdhak - নবারুণ ভট্টাচার্য (Dey's Publishers / Dhyanbindu, স্টল # - ৪১৪)
৪. <Others if any> - নবারুণ ভট্টাচার্য (Dey's Publishers / Dhyanbindu, স্টল # - ৪১৪)
৫. দোতলা বাস এবং - রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য (আগামীকাল , স্টল # - ১২৬)
৬. প্রবন্ধ ১ - মলয় রায়চৌধুরী ( Little Magazine table )
৭. রমানাথ রায়ের লেখা কিছু বই , যদি পাই 
৮. ছোটলোকের কবিতা - মলয় রায়চৌধুরী (SRISTISUKH, স্টল # ৪৬৫)
৯. সতীনাথ ভাদুড়ি - এর বই , যদি পাই 
১০. অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা - মলয় রায়চৌধুরী (
১১. অলৌকিক প্রেম ও নৃশংস হত্যার রহস্যোপন্যাস - মলয় রায়চৌধুরী ( গুরুচণ্ডালি , স্টল # ৪১৫ ) 
১২. আরশিনগর - নবারুণ ভট্টাচার্য (
১৩. হাঁসুলি বাঁকের উপকথা - তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়  
 


26 Jan 2014

কবিতার বিয়ে


গাঁড় মেরেছে ! আজ কবিতার বিয়ে । আরে !! কিছু গিফ্ট কেনা হয় নি যে । এদিকে আজ আবার আমার তৃতীয় বিবাহবার্ষিকী । কি যে বিড়ম্বনায় পড়লাম । আজব বিপত্তি । আজ অব নাউ ।

বারকয়েক আড়চোখে রোবোমিতার বামস্তনে ভেসে ওঠা আজকের ডেট দেখে নিলাম । মনে আড়াই-রাশ বিরক্তি নিয়ে রোবমিতার কাঁধে ঝোলানো আমার জামার বুকপকেট থেকে বের করলাম দশ ভাঁজ করা ল্যাপটপ । বিরক্তি আরো দেড়গুণ বেড়ে গেল এই আজব প্যাঁচালো পোস্টমডার্নাইজ অপদার্থের ভাঁজ খুলতে খুলতে । এর চেয়ে টাইট ব্রার হুক আপ্রাণ চেষ্টা করে খুলে দেওয়া টের অনেক ভালো যে ছিল সেটা এতক্ষণে মনে পড়ল । এই আপশোসের চোটে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে দশম ভাঁজটি খুলে দিলাম । শেষে ন্যাংটো ল্যাপিমণি-কে কোলে নিয়ে বসলাম । ওপেন করলাম কবিতার নিমন্ত্রণপত্র । আগে খুলে দেখা হয় নি কারণ আমার পশ্চাদ্দেশে বাঁশের পর বাঁশ খাওয়ার সুবাদে একদম সময় পাই না, তা বলা-ই বাহুল্য । 

যাই হোক, খুলে দেখি এ যেন ঠিক সাধারণ নিমন্ত্রণ নয়, এটা একটা কবিতামন্ত্রণ । কবিতার ছন্দে , কবিতার মাত্রায় , কবিতার ভাবমূর্তিতে , কবিতার শব্দবিন্যাসে , কবিতার উপস্থাপনায় , বাপ-মাহীন কবিতার নিজস্ব ভঙ্গিতে । পড়তে পড়তে একনিমেষে বিরক্তিভাবটা কখন যে কেটে গেল আমার ।

মনে পড়ে গেল কবিতার সাথে আমার প্রথম আলাপের দিন সেদিন ছিল কুড়ি না বাইশতম প্রজাতন্ত্র দিবস । আর । আজ সেই কবিতার বিয়ে । আজব প্রজাতন্ত্র । আ জবলাইফ । 

ফের মুখ বিকৃত করলাম । চটজলদি ভুলে যাওয়ার জন্যে রোবোমিতার ডানস্তনের বোতামটা টিপলাম । এক ঝটকায় আমার বাম গাল পাতলাম । দুই ঝটকায় রোবোচড় এসে পড়ল যথাস্থানে । iRobot Corporation Ltd . এর তৈরী এই রোবোমিতা আজ অবধি কোনো কাজে ফেল করে নি । একটা কাজেও ডিফেক্ট নেই । আজোবধি Debugger এর দরকার পড়ে নি । সব কাজে সে সুপারনিপুণ । সুপারপটু । সুপারদক্ষ । সুপারস্মার্ট । এমনকি সুপারলেডি ইন বেড ।

খানিকটা ধাতস্থ হওয়ার পরে আমি দেড় চোখ বন্ধ করলাম । আধখোলা চোখ দিয়ে পাত্রের নামটা চট করে দেখার চেষ্টা করলাম । আধবোজা চোখে যেটুকু পড়ল তাতে-ই ভিরমি খেলাম । যেন ভয় পেল রোবোমিতা আমার এই দশা দেখে । পায়ের চাকার স্পীড বাড়িয়ে জলের গ্লাস নিয়ে এল । জল খেলাম কোনোমতে । ননসেন্স ! হাউ সিলি ! এটা কি করে সম্ভব হল ?! কবিতার পাত্র সত্যি এরকম বিশাল বড় মাপের বাল ?! পাত্রের নাম বালকুমার ! পদবী তার বিচি ! 

অসম্ভব । সত্যি অসম্ভবভাবে অসম্ভব । এই বালের সাথে কবিতার কবে আলাপ হল ? জানতাম না যে । বোধ হয় এতদিন এতবছর ধরে নিজের বাল ছিঁড়তে ব্যস্ত ছিলাম , তাই কোনোদিকে আমার হুঁশ ছিল না । সেই শেষদিনের পর আর কোনো খবর নিতাম না তো কবিতার । হয়ত আমার গবেষণার কাজের চাপের দোষ । কিম্বা কবিতার দোষ ।

রাগের মাথায় চুল ছিঁড়তে লাগলাম । পা দিয়ে ঠ্যালা মারলাম সামনের টেবিলটাকে । উল্টে পড়ে গেল । টেবিলের উপরে রাখা ছিল আমার বর্তমান ব্যর্থ গবেষণার কাগজপত্র । এই গবেষণা একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় নিয়ে । বিষয়টা হল - "মানুষ যখন অসম্ভব রেগে যায় তখন মাথার চুল ছেঁড়ে । কেন বাল ছেঁড়ে না ? আর মানুষ যখন আনমনে থাকে তখন নিজের বাল কেন তার অতিপ্রিয় বস্তু হয়ে ওঠে ?" - এই বহুদিনের নিষ্ফল কারেন্ট গবেষণার কাগজপত্র সব হাওয়ায় উড়তে থাকল । টাল খেয়ে খেয়ে কাঁচের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল সারা ঘরে ।

রোবোমিতা হয়ত কিছু একটা যেন আঁচ করল আমাকে এই অবস্থায় দেখে । কারণ সে তার পায়ের চাকা নিঃশব্দে গড়িয়ে আমার পাশে কখন যে এসে বসল খেয়াল করি নি । আমার মাথায় হাত বুলালো সে । মনে পড়ে গেল সেদিনের কথা । সেদিন ছিল আমার আর কবিতার শেষ দেখা । সেদিনে একটা ছোট ঘরের মধ্যে আমি আর কবিতা ছিলাম । আর কেউ ছিল না । একদম নিবিড় সম্পর্ক ছিল আমাদের দুজনের মধ্যে । আমার হাতে ধরা ছিল একটা পেন । কবিতা তার রহস্যময়ী শরীর নিয়ে বার বার সরে যাচ্ছিল আমার চোখ থেকে , আবার ফিরে আসছিল নতুন নতুন চেহারায় , চমকপ্রদ রূপ নিয়ে , বিবিধ ভাবমূর্তি নিয়ে । কবিতার সেইসময়কার চেহারা ছিল বহুমাত্রিক । আমার হাত কাঁপছিল উত্তেজনায় । পেনটা ঠিকমত ধরতে পারছিলাম না । কবিতার স্তনদুটি এত সুগঠিত সুঠাম সুগোল ছিল সেইসময় যে যেকোনো কবি নিজেকে ভাগ্যবান মনে-ই করত । টেবিলের উপরে রাখা কমদামী ল্যাম্পের আলোতে সাদা পাতায় কবিতার উগ্র ছায়া পড়েছিল । এই ছায়া যেন অচেনা হয়ে উঠতে থাকছিল । আমি আমার পেন দিয়ে সেই ছায়াকে ধরার ব্যর্থ চেষ্টা করছিলাম । কিছুতেই পারছিলাম না । কবিতা যেন সেদিন প্রথম আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিল । এই বিশ্বাসঘাতকতার মাত্রা এতখানি প্রকট ছিল যে আমি সাদা পাতাটা ছিঁড়ে ফেলেছিলাম আর কবিতাটা যেন আর্তনাদ করে উঠল নিজের ছায়ায় আঘাত পেয়ে । গভীর এক ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কবিতা ধীরে ধীরে সায়া-ব্লাউজ-শাড়ী পড়ে নিল আর মিলিয়ে গেল আমার চোখের সামনে থেকে । তারপর এতদিন আর খোঁজার চেষ্টাও করি নি । সেদিনও ছিল আরেকটা প্রজাতন্ত্র দিবস । খুব সম্ভবত পঁচিশ বা সাতাশতম । পাঁচ বছরের দীর্ঘ কাব্যসম্পর্ক একরকমভাবে থেমে গেছিল চিরকালের জন্যে ।

আজ এই আলিঙ্গনরতা রোবোমিতা আমার জীবনসঙ্গিনী । সবে তিন বছর হল আমার বর্তমানের গবেষণার দৌলতে তার সাথে আমার গাঁটছড়া বেঁধে দিয়েছিলেন iRobot-এর কর্তারা । আমার জীবন এখন পুরো রোবোময় । এক প্রাণহীন যান্ত্রিক জীবন । বিয়ের পর থেকেই প্রজাতন্ত্র দিবসে আমি আর কখনো জাতীয় সংগীত গাই নি । গাই শুধু রোবোতীয় সংগীত । আমার সদ্যরচিত গান ।

 নাহ । আজ কবিতার বিয়েতে যাব না , চুলোয় যাক । ওই বালকুমারের দীর্ঘায়ু কামনা করি । তার বিচি শিরোধার্য করে টান টান হয়ে শুয়ে পড়ি । যাতে পরদিন কিছু ফল পাই আমার গবেষণায় সেই রোজকারের আশায় । 

25 Jan 2014

Elomelo # 51


ঘুম থেকে ওঠা আর ঘুমিয়ে পড়ার মাঝে যে সুবিশাল সময়কাল তাতে নিজেকে ক্ষুদ্রতমাকার তুচ্ছবুদ্ধিসম্পন্ন কার্যকর জৈবিক উপাদানমাত্র মনে হয় ।

বক্তব্য #2


কবিতার মূলবক্তব্য যাইহোক না কেন একটা কথা আছে মানুষকে নিয়ে যা অমোঘ সত্য ।

দার্শনিক Kant এর মতে , Man is a crooked timber অর্থাৎ মানুষ নামক এই প্যাঁচ-খাওয়া গাঁট-মারা কাঠটিকে কেউ ঘুরিয়ে সিধে করতে পারবে না । আল্লা , ঈশ্বর - কেউ না । এই এক সৃষ্টির জবরদস্ত বিকলাঙ্গ খুঁটি । প্রায় সৃষ্টির নিজের পশ্চাদ্দেশে বাঁশ ।

সারাদুনিয়া জুড়ে যেভাবে পরিবেশ-বিপর্যয় ঘটছে দিনের পর দিন , মাসের পর মাস , বছরের পর বছর , যুগের পর যুগ - সেই অতিপরিচিত ঘনায়মান বিশৃঙ্খল অবস্থার নিরিখে ওই মানুষ-বিষয়ক কথাটা আগাগোড়া অকাট্য ।

যেখানে ভালোবাসা বা সভ্যতা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠছে, সেখানেও 'ভিন্নমত' - এই মানসিকতা থেকে মানুষ নড়বে না যা খুব-ই স্বাভাবিক । তাই আমি এটুকু বলতে পারি কবিতাটা কবির স্বীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হয়ত অযৌক্তিক নয় , এমনকি পাঠকমহলে কবিতার মূলবক্তব্য যেভাবে সাড়া ফেলবে তাও মতের পার্থক্য নিয়ে হাজির সেটা-ই কাম্য ।

কিন্তু এখানে একজন অতিসাধারণ কবিতাপ্রেমী হয়ে কয়েকটা ব্যক্তিগত কথা বলতে চাই যেগুলো আমার একান্ত -

১. একটা কবিতা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বা একটা কবিতার সত্যদর্শনের ক্ষমতা কতখানি জায়গা জুড়ে আছে অর্থাৎ আমাদের চারপাশের বা নিজের স্বরূপ চিনে নিতে , মানুষের একমাত্র সত্যদর্পণ হল কবিতা । এই কবিতা সেটুকু ধরে রাখতে পেরেছে বা চেষ্টাটুকু-ই কুর্নিশপ্রাপ্য

২. তারপরে আসছে কবিতার ভাবমূর্ত উপস্থাপনা , গঠনবিন্যাস আর শব্দবাঁধুনি (যদিও আমার নিজের এইসবে ধারণা পরিষ্কার নয় এখনো) - এগুলোর বিচারে এই কবিতাটা আহামরি কিছু হয়নি বলে আমার ব্যক্তিগত পঠনভিত্তিক মত । তবে এই লেখনীর হাত আছে , আরো ভালো করার প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি ।

হয় নি প্রেমের বয়স


অনেক উঁচু দেয়াল
তার মাথার কাছাকাছি ঝুলছে
একটা পুঁচকে প্রেম
বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে দেখছে
নিচে হাতে গোনা কয়েকটা পৃথিবী

পৃথিবীরা কেউ কাউকে চেনে না
কেউ কারো জল ছোঁয় না
অন্যের পা নিজের মাটিতে পড়ার স্বপ্ন দেখার হাতেখড়ি হয়নি

হাত বাড়িয়ে দেয় প্রেমটা
তার বাড়ানো কচি হাত দেখে মাথা যেন
একটুখানি নিচু করল
দয়ালু দেওয়াল

কিন্তু পৃথিবীকে বোঝার মত
প্রেমের বয়স হয় নি
এখনো

20 Jan 2014

Elomelo #50


দপ করে জ্বলে উঠলাম
এখন যদি কেউ
আসে 


নিভিয়ে দিতে বা
সেই অন্ধকারে নিয়ে যেতে
জানি কেউ আসবে না 
তবুও নিভে যাই
বা চলে যাই অন্ধকারের কাছে

19 Jan 2014

কপাল


প্ল্যান্ কষছি বসে বসে । কপালের উপরে হাতুড়ির একটা ঘা দিতে চাই । 

একটা-ই মাত্র ঘা দিতে হবে কিন্তু । শিল্পবিন্যাসগত ভাবে একটা ঘা । এমন সুপরিকল্পিতভাবে যে এক ঘায়ে কপালটা তিনটে সমান টুকরোয় ভেঙ্গে ফেলতে হবে । ব্যস্ । কিন্তু কেন ঘা দিতে চাই সেটা এখুনি জানতে এসো না কারণ কপালটা তোমার নয় , আমার-ই কপাল ।

যাই হোক, এই সমান তিনটে টুকরো নিয়ে একটা টেবিলের উপরে সাজিয়ে বসতে হবে । সাথে একটা পেন, তিনটে সাদা পাতা , একটা দেশলাই বাক্স , একটা ছুরি আর একটা চকলেট বোম । রাত তিনটের দেয়ালঘড়ি অবাক হয়ে এই ক্ষুদ্র গবেষণার আয়োজন দেখবে । সেকেন্ডের কাঁটা কৌতুহলে স্তব্ধ হয়ে যাবে , তার কাঁধের উপর দিয়ে মিনিটের কাঁটা ঘাড় উঁচিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখবে , ঘন্টার কাঁটা তখনো আড্রিনালিনের কড়া হুকুমে নড়াচড়া করার জো পাবে না । 

প্রথম টুকরোটা হাতে তুলে নিয়ে আন্দাজমত ওজন মাপতে হবে । তারপর দেশলাই বাক্স খুলে একটা কাঠি বের করে ফস্ করে জ্বালিয়ে তার থেকে আধ মিলিমিটার দূরে রেখে ধরতে হবে আর টুকরোটা জ্বলন্ত কাঠির স্পর্শে পুড়তে থাকবে । এইভাবে পুড়তে থাকবে তিল তিল করে আর আমি একমনে পর্যবেক্ষণ করে যাবো এই পুড়তে থাকা টুকরোটার দিকে । যা সব উপসর্গ দেখা দেবে সেগুলো একেকটা নোট্ করে রাখবো প্রথম সাদা পাতায় । হেডিং-এ নাম লিখে রাখবো - 
'পোড়া কপাল' । 

কপাল পোড়ার গন্ধে সারা ঘর ম-ম করবে । নাক একবার বুকভরে টেনে গন্ধের মর্ম বুঝবো । গবেষণার প্রথম ধাপের গন্ধ । চোখ বুজে থাকবো কিছুক্ষণ । চোখের কোণ বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়বে । কালি হয়ে যাওয়া হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুছে দেবো জল ।


পুরো ছাই হয়ে যাওয়া টুকরোটা ডাস্টবিনে ফেলে দ্বিতীয় টুকরোটা নেবো পরবর্তী ধাপের জন্যে । চকোলেট বোমের সাথে টুকরোটাকে ভালো করে শক্তপোক্তভাবে বেঁধে দেবো আর পাঁচহাত দূরে রাখা একটা টুলের উপরে রেখে দেবো । দেশলাই বাক্স থেকে আরেকটা কাঠি বের করে জ্বালিয়ে, বোম-টার পলতের মুখে ফুলকি ধরিয়ে আবার যথাস্থানে আসবো ধীরে সুস্থে । এটা দীপাবলীর উৎসব নয় যে দৌড়ে আসতে হবে । এটা একটি সিরিয়াস নিরীক্ষা তাই সবকিছু-ই ধীরে সুস্থে করতে হবে । টুকরোটা তখুনি ফাটবে । সারা ঘর কেঁপে উঠবে , আমিও কি কেঁপে উঠবো তা জানি না , তবে ওই টুকরোটা ফেটে গুচ্ছ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র টুকরো হয়ে এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বে । আমি উবু হয়ে বসে গুনবো কটা টুকরো হল আর প্রত্যেকটার সাইজ-ও মাপবো । এই ফলাফল দ্বিতীয় সাদা পাতায় লিখে রাখবো আর টাইটেলে লিখে দেবো - 
'ফাটা কপাল' । 

কপাল ফাটার শব্দে চমকে গিয়ে কেউ এসে বন্ধদরজায় নিশ্চয়-ই ঘা দেবে , সমানে ঘা পড়বে , সেদিকে দৃষ্টিপাত না করে এই আত্ম-ঘা-লভ্য গবেষণায় বুঁদ হয়ে থাকবো । বাইরের ঘা আর ভিতরের ঘা - এই দুইয়ের মধ্যে যে একটা যুদ্ধ চলবে সেটা কোথাও না হলেও একটা ইতিহাস গড়ে তুলবে আমার কালিমাখা জামায়, বোতামখোলা বুকে । ঝন্-ঝন্ করে যুদ্ধের দামামা বাজবে সেই বুকে । রক্তপাতহীন যুদ্ধ । এক যন্ত্রণাহীন বুক আমার । 

বাইরের ঘা একটু স্তিমিত হলে-ই লাস্ট টুকরোটা নিয়ে চোখের সামনে তুলবো আর ভাববো - এটা কিভাবে খুলবো । কতরকম ভাবে খোলা যায় যেমন কমলালেবুর খোসা ছাড়ানোর মত, ইলেকট্রিসিটি বিলের খাম খোলার মত, ছুরি দিয়ে কেটে ভিতরেরটা বাইরে আনার মত বা কত কি । কিছু বুঝতে না পেরে প্রথমে টুকরোটার বাইরের চামড়ায় আমার হাতের ভোঁতা নখগুলো দিয়ে আঁচড় কেটে দেবো । ছাল অনেকখানি উঠে যাবে কিন্তু আঙ্গুলগুলো ব্যথায় কঁকিয়ে উঠবে । এতে কাজের কাজ কিছু না হলে টেবিল থেকে ছুরিটা হাতে নিয়ে টুকরোটার গায়ে মাঝ বরাবর একটা লাইন কেটে দেবো , রক্ত ফিনকি দিয়ে বেরোবে , পড়বে মুখে নাকে ঠোঁটে রক্তের ছিটেফোঁটা , চশমার কাঁচেও লাগবে কিছু রক্তের প্যাটার্ন্ । মাঝে একবার উঠে আয়নার সামনে গিয়ে নিজের সুদর্শন চেহারার ( ইয়েস, অবশ্যই অনেক ভদ্রাভদ্রমহিলা সভ্যাসভ্য মেয়েরা বলে আমার মধ্যে নাকি একটা দর্শন আছে যা কেবল সু-সু করে হিসি করে ) রূপ দেখবো আর ফিক্ করে হাসবো । ধবধবে সাদা দাঁতের ঝিলিক দেখাবে । সত্যি-ই 'সোন্দোর' দেখতে আমাকে ? নাহ্ ! নিজেকে দেখার অত সময় থাকবে না গবেষণাকালীন । এইসব ভাবলে নাকি কাজের ক্ষতি হয় । এদিকে টুকরোটা থেকে রক্ত পড়া থামলে-ই টুকরোটা দুইহাতে চেপে ধরে দুইদিকে প্রাণপনে টান মারবো । খানিক চেষ্টার পর খুলে যাবে । কিন্তু ? কি দেখতে পাবো  ? কিছু-ই না । রক্তমাংস ছাড়া । নিজের রক্তমাংসের একটা পূর্ণাঙ্গ টুকরোর দুইটি অংশমাত্র বিশেষ । পাশাপাশি রেখে দেবো তৃতীয় সাদা পাতার উপরে , লেখার মত কিছু থাকবে না । ফাঁকা থাকবে । সাদা থাকবে । হয়ত কয়েকটা রক্তের দাগ । শুধু পাতার হেডিং-এ লিখে রাখবো - 
'কপাল খুলে গেছে' । 

তারপর পেনটা ছুঁড়ে ফেলে দেবো । একরাশ বিরক্তিতে । কিছু তো ফলাফল পাবো না খুলে গেলে । শূন্যফল । সুনসান করবে আমার কপাল । আমার জীবনভাগ্য । জীবনটা-ই ব্যর্থ কপাল খুলে গেলে-ও । পোড়া রক্তমাংসের ব্যর্থতার মাঝে-ই একটা ফাটা গোপাল আমি ।

এই প্ল্যানছক তোমাকে দিলাম তুমি আগে ট্রাই মেরে দেখো । কারণ তুমি আমার প্রিয় গিনিপিগ ।

Elomelo #48


একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে সে
কুচকুচে নগ্ন
সারা গায়ে কালো
কোনো রঙ নেই কিম্বা থাকলেও
খালি নগ্নিরঙ

কি নগ্নসত্য? কি সভ্যনগ্ন?
সব-ই তো সুন্দরনগ্ন
তাকে ছাড়িয়ে তার দৃষ্টি আরো বেশী নগ্নভেদ্য

না জানি হয়তো সভ্যতার আড়ালে-ই সম্পূর্ণ নগ্ন
আমি এক সুন্দরসত্য

হাত যে কখন দুধের বাটির কাছে গেল

16 Jan 2014

Elomelo #47


কবিদের ফাজলামি দেখে  

আজকাল কবিতা বসে আছে
মুখে কুলুপ এঁটে 

পাঠকসমাজের কেন্দ্রে একটা প্রদীপ জ্বলছে 
কবিতার শিখা নিভু নিভু


তাকে জ্বালাবার চেষ্টা করছে
পাঠক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া দুজন মিলে 


কাঁটা-চামচ একটি নির্বাচন / অভিজিৎ দাস


--------------------------------------------
অভিবাদন যে কায়দাতেই শুরু হোক
খিদের গভীরে সাক্ষাৎ সবই।

আলু পেঁয়াজ বাদাম কড়াইশুঁটি..

যাঁরা চাউমিনের প্যাঁচে লিপ্ত হ'তে পারলো
শুধু তারাই মুখ পেল, খিদে পেল।

নুড্‌লস ফুরিয়ে গেলে
প্লেটে পড়ে থাকা আঁচড় মেখে মেখে
কড়াইশুঁটির চামচ ফসকে যায়।

এই অভিযোজন যতটা না প্রকৃতির
তার থেকেও বহুগুণ বেশী আকৃতির।

তাই চামচ ছোটে আকারের দিকে
আকার ছোটে উভয়সংকটের দিকে।

ওঠার মরিয়া চেষ্টায়
কখন যেন কিনারায় এসে গ্যাছে বাদাম।
-----------------------------------------------

13 Jan 2014

মিলন'দার বক্তব্য


কবিতা কী ও কেন -
*************
ইদানীং দেখছি কেউ কেউ কবিতার যতটা সম্ভব অপব্যাখ্যা করছেন । কবিতায় কবি যেমন তাঁর মনের অবস্থা বর্ণনা করেন তেমনই কিছু অবচেতনও প্রভাব ফেলে । আমি কবিতা লিখি কারণ না লিখে আমার উপায় নেই । যদিও ফেসবুকে কবিতা না- লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি , কেবল প্রকাশিত কবিতাই দেবো মাঝে মাঝে । একবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম --

"কবিতা কেন লিখি সেটা বোঝানো সত্যিই কষ্টকর। আসলে কবিতা আমার কাছে 'শারীরবৃত্তীয় জৈবনিক প্রক্রিয়া'র মত। কবিতা পায়, তাই লিখি।
যে কথাগুলো সরাসরি বলতে পারিনি কখনও সেই অনুভূতিই আমাকে দিয়ে লেখায় । চরম যন্ত্রণার সময় কলম হৃদয়কে প্রাধান্য দেয়, কি এক ঘোরে সে উঠে আসে হাতে ।
কবিতা লেখার পিছনে আমার অনেক কারণই আছে। হতাশা,যন্ত্রণা,অপ্রাপ্তি,বিষাদ আবার কখনও প্রতারনা নানা কারনেই লেখনী সক্রিয় হয়। সেই অর্থে ভাবিনি কখনও যে কেন লিখি ।
বেশীর ভাগ সময়েই কোনো একটা শব্দ বা বাক্য মাথায় ঘুণপোকার মত ঘুরঘুর করে , মাঝরাতে ঘুম ভেঙে হঠাৎ কোনো শব্দ পিঁপড়ের মত কামড়ায়! হাতের কাছে খাতা,পেন থাকলে সেটা লিখে রাখি। বেশীর ভাগ সময়েই হারিয়ে যায়। সেই হারিয়ে যাওয়া শব্দগুলোকে বড্ড মিস করি। আসলে কবিতা আমার কাছে উচ্চারিত চারণ।"

কবিতা লেখার প্রস্তুতি --
****************
কবিতা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নয় যে একে সাময়িক প্রস্তুতিতে ফেলা যায় । কবিতা একটা নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া । "যাবৎ বাঁচি , তাবৎ শিখি "।
তবে কবির কবিতার প্রাথমিক ব্যাকরণ জানা উচিৎ । ছন্দ ,মাত্রা , অলংকার ... এই বিষয়গুলোতে স্বচ্ছ ধারণা থাকা প্রয়োজন । তবে সেটা জানলেই যে কবিতা লেখা যায় তেমনও নয় । কবিকে হতে হয় শিল্পীর মত । দৈনন্দিন যাবতীয় কিছুকে কাছ থেকে দেখার চোখ, অনুভব করার ক্ষমতা থাকা দরকার ।

কিছু কঠিন শব্দ , তাত্ত্বিক শব্দ প্রয়োগ করলেই কবিতা হয়না । কবিতা তখনই সার্থক যখন তা পাঠককে একাত্ম করে । আবার অতিসরল কিছু বাক্য-বন্ধই কবিতা নয় । উদারন হিসেবে বলা যায় .......
"মূঢ়তার অপনোদনের শান্তি,
শুধু এই –
ঘৃনা নেই, নেই তঞ্চকতা,
জীবনজাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু।" -- --এই লাইনগুলোতে ভাষা যথেষ্ট কঠিন তাও আমরা আমৃত্যু মনে রাখবো । কেন ? কারন - এটা আমাদের ভাবায়,আবেশ আনে, অনুভূতির গোড়ায় ধাক্কা দেয় ।

আবার, 'অ্যান্টেনায় কাক / আমি তো অবাক ' এই সোজা বক্তব্যটি কি আদৌ কবিতা ? না , কারন অ্যান্টেনায় কাক বসাই স্বাভাবিক এতে অবাক হবার কিসসু নেই ।
মোদ্দা কথা হল লেখনীকে থামতে দিতে নেই , লিখতে লিখতেই সরে । কবিতা লেখার জন্য ভালোমানুষ হওয়ার প্রয়োজন । অনুভব করার ক্ষমতা বাড়াতে হবে । ঘরে বসে থেকে কবিতা লেখা প্রায় অসম্ভব , পরিধি বাড়াতে হবে,মিশতে হবে জনারণ্যে । একটা শব্দের জন্য করতে হতে পারে অন্তহীন পদচারণ । আমি নিজে নতুন কিছু শব্দের জন্য নানা মানুষের সাথে মিশেছি দিনের পর দিন । যারা বস্তা সেলাই করেন তাঁদের সাথে মিশে গেছি তবেই পেয়েছি 'আয়নাতালি','ফড়িয়া' এমন সব অনাভিধানিক শব্দরাশি ।

কাদের কবিতা ভালো, কাদের খারাপ --
*************************
এইভাবে বলা মুশকিল । আমি লেখা খারাপ হচ্ছে এটা বলার কে ? কবিতা, কবির কাছে সন্তানের মতো । আমি যে নজরে খারাপ বলছি সেটাই সঠিক এটা বলার মতো ক্ষমতা আমার নেই । তবে একটা কথা বলতে পারি-- কবিতা মানেই কিছু কঠিন শব্দ প্রয়োগ নয় । কবিতা আসলে কবিতাই । কালের গর্ভে টিকবে কিনা সেটা পাঠকের ওপর নির্ভরশীল ।

আসলে কবিতা নিজেই একটা ধাঁধাঁ । পল ডিরাক বলেছিলেন - " In science one tries to tell people, in such a way as to be understood by everyone, something that no one even knew before. But in poetry it's the exact opposite"

কবিতা কিছু স্পেস তৈরি করে মাত্র । পাঠক কবিতার সাথে যদি একাত্ম হন তাহলেই সেটা কবিতা হিসেবে সার্থক । যারা ভাবেন কবিতা মানেই দুর্বোধ্য হতে হয় তাঁরা যখন মুক্তমঞ্চে কবিতা পড়েন তখন পাঠযোগ্য কবিতাই বেছে নেন । কবি ফল্গু বসু বলতেন - দুর্বোধ্য কথাটির অর্থ - ' দূরে গিয়ে বোধ্য ' আবার এটাও ভাবা উচিৎ গল্প বা উপন্যাসে যেমন প্রচুর জায়গা থাকে ব্যাখ্যার ঠিক তেমনই কবিতার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উল্টো । যত কম শব্দ ব্যয় করা যায় ততই ভালো । মজনু মোস্তফা বলতেন - 'মেদ পুরুষভোগ্য , কবিতা নয়' । পাঠক যদি শিক্ষিত হন ( তথাকথিত আকাদেমিক শিক্ষায় ) তবে মাঝে মাঝেই কবিতার অদ্ভুত ব্যাখ্যা করেন আর যদি তিনি কবিতা লেখেন দুএকটি তবে তো কথাই নেই ।

কবিতা লিখে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনও দায় কবির কোনোকালেই নেই । শিক্ষিত পাঠক আজ বড় প্রয়োজন যিনি কবিতাকে লালন করবেন মননে, ছদ্ম-আধুনিকতায় নয় ।।

12 Jan 2014

Elomelo #46


অলস জানালায় বসে আমি নিজের পুরোপুরি আ লস্ ।

একগলি সামনের বাড়ি । সদ্যস্নাত জানালার বুক থেকে উরু অবধি
তোয়ালে জড়ানো , তার গায়ে আমার বুক থেকে উরু অবধি 
হুবুহু যেন একইভাবে মোড়ানো । শেষাংশটুকু কিন্তু একদম আলাদা । এটাই আমার অলস হওয়ার একটা বড় প্রাপ্তি । 

আত্মগর্বে আমার বুক ফুলতে-ই থাকে । সামনের সেই তোয়াল লজ্জায় খুলে পড়ে যায় ।




Elomelo #45


কাগজ কুচিকুচি করে কেটে রাখলো সে
হাতের গুটলিতে
তারপর
দিল টেনেটুনে বড়

একটা ফুঁ

বুকের গুটলিতে থাকা ধুকপুকানি
এখন কুচিকুচি 

11 Jan 2014

Elomelo #44


পকেট থেকে বেরিয়ে এল
একটা পিস্তল
পিস্তলের মুখ থেকে বেরিয়ে এল
একটা গুলি
গা থেকে বেরিয়ে এল 
একটা রক্ত 

আসলে রক্ত যে একটা হয় 
সেটা আমরা ভুলে যাই 
মানুষ শুধু দেখে আর বলে 
"অনেক হয়েছে আর নয়"

9 Jan 2014

চু আর মু


আজকাল অনেকে চু আর মু - দুই মিলে এক কাপ করে দিচ্ছে ভেন্ডিং মেশিন থেকে । চু' নামক যে বোতাম আছে সেটা প্রথমে না টিপলে মু' নামক বোতামটা যেন সক্রিয় হয় না । আর এই আবেগশূন্য মেশিনের জনক কিন্তু আমরা-ই যারা ফেবুতে একটা করে কাপ চালাচালি করি । দুই হাতের ৩-৪টে আঙ্গুলের চাপে । তার সাথে লিপস্টিক মাখা ঠোঁটসুদ্ধু হলুদ গোলমুখ ফ্রি হলেও মাঝে মাঝে কৃপণতা দেখায় অনেকে, আবার অনেকে করে না ।

ডারউইনের ভাষায় বলা যেতে পারে নিম্নলিখিত ভাবে - 
" 'চুমু'তার কারণ সম্পর্কে আমরা চূড়ান্ত কিচ্ছুটি জানি না । নতুন 'লালঠোঁটের' জন্মের জন্যে কেন দুই 'চিহ্নের' মিশ্রণ দরকার ? পুরো বিষয়টা এখন অন্ধকারে ঢাকা । "

তবে এত কারণ না খুঁজে একটা জিনিস বোঝার চেষ্টা করা হোক - আমরা ফেবুতে কাপ চালাচালি করি তার পেছনে আমাদের আবেগ বিন্দুমাত্র কাজ করে না অর্থাৎ চোখের জল ফেলতে ফেলতে করি না , গায়ে শিহরণ জাগিয়ে করি না , লোম খাড়া হওয়া তো দূর অস্ত ।
হতে পারে আগাগোড়া সস্তা আ-( বে )-গ মাত্র ।

" কি বে শালা ? আছিস বে ? কি করছিস বে ? ................ চু-মু নিস " (and/or :-* )

উপরের লাইন একটা উদাহরণ যদিও ঘুরে-ফিরে বলা হয় মেজাজের থার্মোমিটারে মেপে । 

এখন প্রশ্ন হল - "এর নাম ভালোবাসা ?"

শতকরা নিরানব্বই ভাগ ( হিসেবের ত্রুটির জন্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী , কারণ হিসেবটা যান্ত্রিক নয় , পুরোটাই মানবিক ) অবশ্যই এর উত্তরে মাথা উপর-নীচ করবে , বাকি ১ ভাগ দুবার না তিনবার বাঁদিক ডানদিক করবে , আবার নাড়াতেও ভুলে যাবে । যাইহোক এটা কোনো ব্যাপার নয় ।

এবার উপর-নীচ মাথা নাড়া নিয়ে বসা যাক - যারা ভালোবাসা নামের জিনিসে ভর করে ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছে তাদের একটা সোজা প্রশ্ন করা হোক - "এইভাবে চু-মু খেতে পারবে সশরীরে থেকে?"

এর উত্তরে কেউ কেউ ফিক করে হাসবে , কেউ বা মুখ কিছুক্ষণ হা করবে ( অবশ্যই আশেপাশে মৌচাক থাকবে না ) , কেউ বা "ধুর বাল" বলে কেটে পড়বে , বাকিরা নিশ্চয় নিজেদের ভেন্ডিং মেশিনের মাথায় বিশাল বড় একটা চাপড় মেরে বলবে - "কেন পারব না ? আমি মিথ্যা প্রশ্রয় দি না । আমি ইয়ে করতেও পারি বে । আগে দেখা হোক সামনে ঠিক দেখিয়ে দেব চু-মু খাওয়া কাকে বলে বে !!"

এরা কি তাহলে সমকামী বা সমকামিতার সমর্থক ? নাহ । এখানে শেষ নয় ।

যারা চু-মু (and/or :-* ) দেয় তাদের সাথে কোথাও দেখা হল । আর ...... দাঁড়াও, আমার মনে হয় এখানে যারা টেস্ট করতে চায় তারা নিজেরা গিয়ে টেস্ট করে দেখতে পারে উত্তর পাওয়ার জন্যে ।

কিন্তু যারা টেস্ট করতে চায় না তারা নিজেদের ভেন্ডিং মেশিন কে পাশবালিশ করে থাকুক আর রেগুলার পালিশ করুক । তবে এখানে আমার কোনো দ্বিরুক্তি বা বিরোধিতা নেই । ফেবুতে এই সমকামীসত্তাটুকু বেঁচে থাকুক কারণ ভালোবাসা নামের জিনিস-টা কখনো-ই স্থান বা কাল বা পাত্র বিচারাধীন হয় না । এই চুমুত্ব বন্ধুত্বের সমার্থক বা অর্ধার্থক বা ভগ্নার্থক । কোনোমতেই অনর্থক নয় । 

আমাদের ঠোঁটের কোনো প্রাকটিক্যাল নড়াচড়া বা চর্মস্পর্শ করার দরকার-ই নেই । শুধু আঙ্গুলের চাপে-ই বিনা-টেনশনে , বিনা-সংক্রমণে চ-এ উ-কার ম-এ উ-কার জিন্দাবাদ ।

চলো, এবার চুমাই :-*
 

মুহূর্তের পালক





পূর্বমুহূর্ত মিথ্যা , পরমুহূর্ত সত্যি
মন বদলায়
চোখ ঘোরায়
ভ্রু নাচায়
মাথা নাড়ায়
ক্ষণে ক্ষণে সম্মুখে-পশ্চাতে
মুহূর্তের পর মুহূর্তে

আগে ছিল সত্যি , এখন হল মিথ্যা
দু'মুখো শিকলে বাঁধা আমি গালে হাত বসে
দেখি পায়ের কাছে
কয়েকটা ছেঁড়া পালক

8 Jan 2014

Elomelo #42


আজ পেলাম তার ভীতুসংবাদ
আমি এখন মর্মান্তিক চমকাহত

এই মুহূর্তে তাকে কষার মত চড়-ভাজা খুঁজে পাচ্ছি না ।

5 Jan 2014

Elomelo #41

উপাদান সব অনাধুনিক
কিন্তু অত্যাধুনিক হাতছানি

অতি আধুনিকতায় চড়ে বসে
দোল খায় অনাধুনিক বীর্য

এরা সব আপাত ইউনিক্
তবে আদরের নিক্ নাম কিক্ করে দেয়
ওয়ান ক্লিকে-ই

3 Jan 2014

Elomelo #40


অবৈধতা সবে শিখেছে
হামাগুড়ি দিতে

পা দুটির মাঝের যে কান্না 
সেটা থমকায়
কিছুটা আনন্দে
বাকিটায় তুমিত্ব 

কিন্তু ভাতের থালায় মাঝে মাঝে 
আমি'টা অবৈধ বলে
বিষম খায়  
 

Elomelo #39


শরীর অনড় ইজিচেয়ারে 
মনের পায়চারী শুধু ওই 
টেবিলে রাখা জলের গ্লাসটুকু অবধি 

কিন্তু , ভিজলো না