30 Mar 2015

আমি একজন 'ক্রমবর্ধমান লেজবিশিষ্ট ভারতীয়...'


১. মুখে দাড়িগোঁফ গজায় রোজ । তাই আমি একজন 'পুরুষ'

২. বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ হয়েছি সেই কবে । তাই আমি একজন 'বিবাহিত পুরুষ'

৩. স্ত্রীসত্তার পাশাপাশি অন্যান্য নারীদের দিকেও চোখ চলে যায় অনায়াসে । তাই আমি একজন 'বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৪. অফিসে সকালে ঢুকি, অন্ধকার হলে বা আরেকটু বেশি অন্ধকার হলে বা আরো ঘন অন্ধকার হলে বেরিয়ে পড়ি, অথচ কিছু পাই না মাসমাইনে বাদে । তাই আমি একজন 'ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৫. সেই ছোটোবেলা থেকেই কোনো অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম বা দরকারী ফর্মে রিলিজিয়ান-এর বক্সে ব্লক লেটারে এইচ-আই-এন-ডি-ইউ লিখে আসছি । তাই আমি একজন 'হিন্দু ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৬. যাওয়া-আসার পথে কালীবাড়ির সামনে দিয়ে গেলে দু-তিনবার তর্জনী কপাল-থেকে-বুকে, বুক-থেকে-কপালে ঠুকে মারি, অথচ এক কলিগের তার অফিসিয়াল মেলবক্স খোলার পাসওয়ার্ড টাইপ করে পাঁচমিনিট চোখবুজে ঠাকুরের নামস্মরণ করার পর এন্টার মারার ব্যাপার নিয়ে প্রায়শই লেগপুলিং করি । তাই আমি একজন 'আধাস্তিক হিন্দু ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৭. বাংলা ও বাঙালিয়ানা-তে মেতে উঠি, ইংলিশ নিয়ে ততটা করি না । তাই আমি একজন 'বাঙালী আধাস্তিক হিন্দু ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৮. বছরের শুরুতে ক্যালেন্ডারের উপর হামড়ে পড়ে দেখি দুর্গাপুজোর ছুটি কবে থেকে, খুশির ঈদের ছুটি শুক্রবার না সোমবার পড়ছে, খ্রিস্টমাস দিনের আগে থেকে এক হপ্তার ছুটি নেবো কিনা, চিড়িয়াখানায় যাই সিংহকে দেখতে, মুদির দোকানে যাই কিছু কিনতে, আপ-এর অ্যানিমেশন মুভির ভক্ত, আপন দিদি নেই । তাই আমি একজন 'সিক্যুলার বাঙালী আধাস্তিক হিন্দু ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

৯. মহাভারত পড়তে অনাগ্রহী, ভারতমাতার স্বাধীনতাদিবসে ঘরে ল্যাদ খাই, ভারতের ক্রিকেটদলের জন্য দেশপ্রেমহীন হৃদমাঝারে শত বনফুল বিকশিত হয় আর কেউ নিজের বুক ঠুকে একজন খোদ ভারতীয় বলে দাবী করলে আমি তাকে প্রথমে চোখ সরু করে দেখি, পরক্ষণে চোখ সরিয়ে নিই । তাই আমি একজন 'ভারতীয় সিক্যুলার বাঙালী আধাস্তিক হিন্দু ফ্রাস্টু বিসমকামী বিবাহিত পুরুষ'

১০. এই গ্লোবালাইজেশন জমানায় লিস্টটা আরো লম্বা হবার প্রবালিটি কখনো জিরো হবে না । তাই আমি একজন 'ক্রমবর্ধমান লেজবিশিষ্ট ভারতীয়...'

নাক কেন '২'


'ম্যাথেমেটিকস্ ওয়ার্কবুক ফর কিডস্' বলে একটা শিক্ষামূলক বইয়ের একটা পেজে একটা বাফেলোর (মোষ) ছবি দেওয়া আছে । তার পায়ের কাছে, মাথার কাছে, লেজের কাছে কটা পা,কটা চোখ, কটা কান, কটা নাক, কটা শিং আর কটা লেজ আছে বলে একটা করে বক্স আছে যেগুলোতে নাম্বার দিতে হবে । ছেলে সবেতে-ই ঠিকঠাক নাম্বার দিয়েছে শুধু একটা ছাড়া । কটা নাক (নোজ) -এর বক্সে '২' দিয়েছে । রিভিউ করতে গিয়ে ছেলের মা শুধালো, "নাক '২' কেন?" । জবাবে ছেলে ছবিতে দেখানো বাফেলোর লম্বাটে মুখের সামনের দিকে একটা ফুটোতে আঙুল রেখে ওয়ান, অন্যটাতে আঙুল রেখে টু বললো । সেই শুনে একচোট হেসে নিলো ছেলের মা যার জেরে বিছানা একটু নড়েছিলো । বিশ্রামরত আমার চোখদুটো আর ঠাণ্ডা লাগার কারণে নাকের শুধু ডানফুটোটা বন্ধ ছিলো । বিছানাটা নড়ে উঠতেই চোখদুটো খুললো আমার । নাকের ডানফুটোটা খোলেনি সেটা বলা বাহুল্য । একটু ঝাঁঝ মিশিয়ে বললাম, "কি হলো আবার?" । তখনো হেসেই যাচ্ছিলো সে, সাথে ছবিটা দেখিয়ে জানালো বাফেলোর নাক নিয়ে কীর্তিমানের যুক্তিটা । জেনে আমারও পেলো যারপরনাই হাসি । পরক্ষণে থামতে হলো একটা কথা ভেবে ।

চোখ দুটো হয় । কান দুটো হয় । পশুদের চারটে পা, মানুষদের দুটো করে হাত পা হয় । এদের যেকোনো একটা অকেজো থাকলে তো কমজোরি হয়ে যায় সেই অঙ্গের কার্যকারিতা । তখন বেশ অসুবিধায় পড়তে হয় । নাকের বেলাও তাই । একটা ফুটো দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস না চললে নাকটাও 'কমজোরি' হয়ে যায় । নাকের যাবতীয় কাজকর্ম যেমন ভালোমন্দ গন্ধ শোঁকা বা অক্সিজেন নিয়ে কার্বনডাইঅক্সাইড ছাড়া এসব পুরোপুরিভাবে করা প্রায় দুষ্কর হয়ে ওঠে । তার বদলে অনেকসময় মুখ ফাঁক করে বাইপাস করাতে হয় । এই একটা নাকের কাজ তার দুটো ফুটোর উপরে নির্ভরশীল যেমন চোখের কাজ চোখের মণিনির্ভর, কানের কাজ কর্ণগহ্বরনির্ভর । যদিও শারীরিক গঠনগত অঙ্গ হিসেবে নাক একটাই হয়, তার ক্রিয়াসম্পাদনার দায়িত্বভার সেই '২'টো ফুটোকে বয়ে নিতে হয় । সেই সরল সূত্রানুযায়ী নাক কেন '২' হবে না ? সত্যিই ছেলেটি ভুল বলেনি সেইদিক থেকে, কারণ মানুষের নাক গঠনরূপে আলাদা করে চিহ্নিত করা গেলেও বেশিরভাগ চতুষ্পদীর নাক সেইভাবে বিশেষ কোনো গঠনরূপধারক নয় । শুধু ওই দুটো ফুটোর জায়গা দিয়ে নাক বলে গণ্য করা হয় ।

আমার নাকের এই হারামি ডানফুটোটা বন্ধ না থাকলে হয়তো এতো যুক্তিযুক্ততায় পড়ে থাকতে হতো না । ভাবি, কেন এসব প্রশ্নে হাতির ছবি দেওয়া থাকে না, থাকলে ছেলে নির্ঘাত '১' দিতো ।

আম্পায়ারিং-এর চাকরি


আম্পায়ারিং-এর চাকরি পাওয়া আপাতসহজ মনে হলেও নট আউট-কে নট আউট বলা আর আউট-কে আউট বলা মুখের কথা নয় । একবার ছড়িয়ে ফেললে পরে টিভি আম্পায়ারের কাছে 'বকুনিঝকুনি' খেয়ে হাতদুটি ক্রস করে কাঁধ ছুঁয়ে পাপীদের মত ভুল স্বীকার করে । এই কাজ করে চাকরিটা খুইয়ে না গেলেও মানসম্মানিজ্জত সব চলে যায় নিমিষে । রোদচশমা পরা থাকে বলে খানিকটা হলেও পাপী মুখবয়বটা আড়ালে থেকে যায় ।

রোদচশমা কি তাহলে আম্পায়ারদের সিকিয়রিটি গার্ড ? কুমার ধর্মসেনাকে দেখতে দেখতে মনে হলো এই দানবিক চাপের সিচুয়েশন ব্যাখ্যাতীত ।

কাটাকুটি খেলা



স্তন ক্যানসারের সাথে পায়ের বাতের তুলনাটা কিসের ভিত্তিতে হলো ? বি.আর.সি.এ.১ (BRCA1) জিনবাহী হলে ক্যানসারজনিত মৃত্যুভয়ের কারণে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়ার জন্যে যে মানসিক কাজটা করে, তার সাথে মশার কামড় খেয়ে ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুজ্বরের ভয়ে হাত বা স্যারের কানমলা খাওয়াতে রেস্ট্রিকশন হিসেবে কান কেটে দেওয়ার মানসিকতা কি করে একই খাতায় ফেলা হচ্ছে ? এইসব অপ্রাসঙ্গিক তুলনাতুলনোতে কোনো সায়েন্টিফিক জাস্টিফিকেশন আছে ? ক্যানসারজনিত যে সম্ভাবনাগুলো আছে ডাক্তারি ভাষায়, সেগুলো কি পায়ের হাঁটু, খোলা হাত বা কানের সাথে যায় ? যদি বা স্কিন ক্যানসারের রোগী হয়, তাও ওইসব আক্রান্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বাদ দেওয়ার পক্ষে কোনো রেকমেন্ডেশন নেই মেডিক্যাল সূত্রে যতদূর পড়েছি ।

আজকের কাগজে 'কাটাকুটি খেলা' শীর্ষক স্যাটায়ারধর্মী নিবন্ধে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির স্বেচ্ছায় স্তন-জরায়ু কেটে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে হাত-পা-কানের বিষয়ে যে সব ব্যাঙ্গার্থক কথাগুলো আছে, সেগুলো চূড়ান্ত রকমের ফ্লপ করেছে । নেই কোনো তুলনাভিত্তিক যুক্তি, নেই কোনো গ্রহণযোগ্য প্রাসঙ্গিকতার মানসিকতা । পারিবারিক ইতিহাসকে প্রামাণ্য রেখে (নিজের মায়ের ব্রেস্ট ক্যানসারের রোগ আর ওভারিয়ান ক্যানসারে মৃত্যুর ইতিহাস) সারভাইভ করাটা একটা প্রধান কাজ যা সব মানুষের মধ্যে থাকে কম-বেশি । কিন্তু ক্যানসারজড়িত জীবন মোটেই আর পাঁচটা সাধারণ জীবনযাপনের মধ্যে পড়ে না । এমতাবস্থায় বেঁচে থাকাটা প্রতিমুহূর্তে ঝুঁকতে ঝুঁকতে যায়, তার সাথে এমন একটা এক্সট্রিম স্টেপ নিতে বাধ্য হয় যেখানে রূপ বড় নয়, অন্তরাত্মা আসলে মুখ্য । সেটা অবশ্যই ঠিক এবং তা অবধি জলের মত ফ্লো চলছিলো, শেষে ওখানেই আবর্জনা ময়লা গু ফেলতে শুরু করলো যা এখানে অত্যন্ত অবাঞ্ছনীয় ।

হ্যাঁ, অণ্ডকোষ কাটতে হলে ডাক্তারের সাথে আগে পরামর্শ করা বুদ্ধিমানের কাজ যে যত বড় গাম্বাটের মত শভিনিস্ট হোক । কারণ ক্যানসার নামক শারীরবৃত্তীয় রোগ আর শভিনিজম্ নামক মানবিক প্রবৃত্তি শুধু সুমেরু-কুমেরু নয়, সম্পূর্ণ আউট অফ মিল্কিবারের মত একটা 'পেটেন্ট' । 

অন্যের মৃত্যুভয়কে হাইলাইট করে মৃত্যুসম্ভাবনাহীন হাতপা-কান-বিষয়ক একটা সাব্-থিম ঢুকিয়ে এভাবে প্রয়োজনের বেশি 'কাটাকুটি খেলা' করলে একই শিরোনামধার্যক লেখাটির প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে যেতে যেতে শেষ পর্যন্ত মেলোড্রামার যে উপভোগ্য মঞ্চটা থাকে সেটা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে যায় ।

27 Mar 2015

দুধ-কর্নফ্লেক্স


দুধ-কর্নফ্লেক্স এর চেয়ে ভালো ম্যাচ আর হয় না ।

26 Mar 2015

কালারোলজি


হলুদ আর নীল মেশালে সবুজ হয় । কিন্তু বর্তমানে কোনো সবুজ সংকেত নেই । এমনকি সশরীরী দেখাসাক্ষাৎ ও নেই সবুজে টিমটিম করতে থাকা স্বয়ং আল্লাহপাকের । 

উল্টোদিকে কারো উদ্দেশে বাচ্চাদের মত কিম্বা অশিক্ষিতদের মত চুকচুক না করে আপনমনে তীব্র কুচকুচ করছে কালো । জানো তো লাল, নীল আর সবুজ মিলে কালো হয় না, বরং সাদা হয় যার কোনো সিন্ নেই আগামী কয়েকশো বছরেও । তবে কিসে কালো হয় ? কোনদিক থেকে ? কোন শর্তে ? এর নিজস্বতা তাহলে একমাত্র কালোতে যার উপরে খেলার আলো না পড়লে ক-এ কট্টরপন্থী হয়ে উঠতো ? 

তা কি বলছিলাম যেন ?! বিবেচ্য হলুদ আর নীলের সংঘাতজনিত যে রংবাজি ফুটবে তার সম্পর্কে নিউমোরোলজি, ট্যারট কার্ড বা দুনিয়ার যেকোনো ভরসাযোগ্য আস্ট্রোলজিস্টের বাণী এখনকার তৃণমূলের চেয়েও বিরাট মাপের সাবুজিক মিথ্যাপ্রচারক হলেই অবাক হবো না । ওইসব ছেড়ে মাঠের রং যে সবুজ সেই সরলসত্যটুকু কেউ স্মরণ করুক । কালো হয়তো পিপীলিকার মত হয়ে হাঁটবে সেই মাঠে । সাথে হৃৎপিণ্ড বুকের বদলে মাথায় । পিপীলিকার জাত আলাদা বলে কালো আলাদা ।

আপাতত কালোর একমেবাদ্বিতীয়্ম্ একপাশে সযত্নে রেখে দিলাম । বরং এইসব 'কালারোলজি' অর্থহীন লাগতেই পারে । যদি বা অর্থপ্রদ লাগে তাতেও ভুলটুল থাকতে পারে, তবে নিউমোরোলজির মত অতটা লালমুখো নয় ।

হাতের ছায়াছবি


হাত খালি হলে কি হবে ?! নানা মুদ্রায় দেখানো হাতের ছায়াছবির খুচরোখাচরা কত স্বপ্নকে সত্যি বলে মনে করিয়ে দেয় । খালি হাতে সম্ভাবনাবোধক কাজ বের করার গুরুত্ব হয়তো খুব কম লোক বোঝে । বেশিরভাগ নিজেদের খালি হাত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আর নিজে স্বপ্ন দেখার বদলে অন্যদের সেই স্বপ্ন দেখাবার তালে থাকে ।

24 Mar 2015

কে জিতবে ? - সমুদ্রের ঢেউ


ভারত না বাংলাদেশ ?
- সমুদ্র ।


কে জিতবে ?
- সমুদ্রের ঢেউ । 


চারদিকে এতো মাতামাতি কেন ?
- ঢেউয়ের উচ্ছ্বাস । ঢেউয়ের ফেনা । আছড়ে পড়ে আবার মিলিয়ে যায় । 


বিদ্বেষটা কিসের ?
- খেলা আর শুধু খেলা । ঢেউয়ের সাথে খেলার আনন্দ । উচ্ছ্বাসের সাথে পাল্লা দেওয়ার চাপা উত্তেজনা ।

তুমুল ভাঙাভাঙি


চমকপ্রদ কিছু একটা লিখতে হলে ঘুমোতে হবে । কিন্তু কোথায় ? সে এক তুমুল ভাঙাভাঙি চলছে । চমক আর ঘুমের মধ্যে ।

16 Mar 2015

ধোনির সেই বুকপকেটটা আমাদের চাই


*
জেতার জন্য হাই-লেভেল টেকনিক বুঝি খুব জরুরী ? স্টাইল ধরে রাখা কি ফিনিশিং টাচ হিসেবে একান্ত কাম্য ? 


নার্ভ ছিঁড়ে ফিনকি দিয়ে টেনশনের হরমোন বেরোচ্ছে অথচ বোলার আর দশজনের ফিল্ডিং পজিশন ছাড়া গোটা মাঠজুড়ে স্ট্যাটিস্টিকালি যে বড় একটা ফাঁকা অংশ আছে সেটাকেই মূল টার্গেট করে সাধারণাতিসাধারণ ব্যাটিং করছে । এই ব্যাটিংয়ের জন্য কিছুই লাগে না শুধু বল গলিয়ে দেওয়ার কমন্ সেন্স ছাড়া । সাথে ফিল্ডারের মাথা বাঁচিয়ে বলকে যতটা সম্ভব বাউন্ডারির কাছাকাছি বা তা অবধি পৌঁছে দেওয়ার সুযোগকে কাজে লাগানো । এগুলো একমাত্র ধোনির না-দেখা বুকপকেটে থাকে ।

দেখা যাক কতটুকু বের করতে পারে সেই আশ্চর্যজনক বুকপকেট ?!

উল্টোদিকে রায়না হায়নার মত ভয়ঙ্কর নয়, আয়নার মত দৃশ্যকাব্যিক নয় । তবুও বায়নার মত রান চাওয়াচাওয়ির মধ্যে দিয়ে আউট যে কেউ "চায় না", সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই ।

দেখা যাক সে শেষমেশ উইকেট খোয়ানোর রায় না দিয়ে থাকতে পারে কিনা ?!

**
নাঃ ! তার ওয়ারড্রোবে বেশি সেঞ্চুরি নেই । আর এবারের সেঞ্চুরিটাকে 'ওয়ারড্রোব ম্যালফাংশন' বললেই সেটা খুব একটা অত্যুক্তি বা কটূক্তি শোনাবে না । চালিয়ে যা রায়না ।

‪#‎হোক_সেঞ্চুরি‬
 
***
এইতো ! পেরেছে ! আগেও পেরেছিলো । বহুবার । অসংখ্য বারের মধ্যে তার এমন সাফল্যের সংখ্যা গোনা আমাদের কাজ নয় ।

ধোনির সেই বুকপকেটটা আমাদের চাই, তবে নিজেদের কাছে রাখতে নয় । 

কায়দার ছলে বুকের বাঁদিকে হাত বার বার চাপড়ে বুঝিয়ে দেওয়া, যার একটাই অর্থ - ভিতরের পকেটটা এখনো সুরক্ষিত ।

10 Mar 2015

মরে গিয়ে অদ্ভূত হবো


কাকে বলবো যে মরে গিয়ে অদ্ভূত হবো ?

অদ্ভূত হওয়া এমন কিছু আহামরি বাহাদুরি নয় যে বললে পিঠচাপড়ানি পাবো । তবে এটা সত্যি যে পিঠে কেউ হাত বুলিয়ে দেয় নি বহুবছর । তার সাথে চাপড়াচাপড়িও ভয়ানক মিস্ করছি । লাস্ট যেদিন পিঠে স্নেহের হাত অথবা 'সাবাশ' পড়েছিলো সেদিনেও আমার বোধ জাগে নি । যবে বোধজাগরণ শুরু হয়েছে, তখন থেকেই ক্রমশ 'দুর্বোধ্য' হয়ে যাচ্ছি সবার কাছে । পিঠখানি সেই সুবাদে খাঁ খাঁ করছে । খরা চলছে পিঠজুড়ে ।

স্নানের পর কঠিনতম কাজ হলো নিজে নিজের পিঠ মোছা । জামা পরার আগে জামার পিঠের দিকটা বডি-স্প্রে করি যাতে কেউ আমার পেছন থেকে এসে চমকে দিতে পারে তার নরম দুটি বুক অারামসে ঠেকিয়ে আর চোখদুটো হাত দিয়ে চেপে ধরে 'বলো তো কে আমি ?' । ছেলেবন্ধু হলেও আমার পিঠের মানচিত্র পাল্টে যাবে না । কিন্তু বহুদিন হলো কেউ আসেনি এভাবে চমকে দিতে । বাড়ি ফিরে আলমারির বড় আয়না আর হাতের ছোটো আয়না মিলে নিজের পিঠ ঘুরেফিরে দেখে নিই কোথাও অচেনা নদী বইছে কিনা ?! 

ফোটোজেনিক সব পিঠখোলা ব্লাউজ । মাঝবরাবর সুগভীর খাঁজ আর উপরের দিকে মাত্র একটা ফিতে বাঁধা এমন পিঠ যার তাকে আমার ওভারস্মার্ট লাগে ব্যাকলেসনেস নিয়ে আত্মখিল্লি করার জন্যে । প্রাণখোলা হাসির চেয়েও যেন অনেকদামী এইসব হা-হা-হা করে হেসে ওঠা খোলাপিঠ । এরকম একটা প্রিন্টেড ফটো হাতে পেয়ে চুপিচুপি উল্টে দেখি । কেমন যেন সাদাটে এদের বুক । ভাবি ফ্রন্টলেস ব্লাউজের সাজেশন দিলে আমার পিঠে আদৌ 'এই অসভ্য ছেলে কোথাকার' চাপড় পড়তো ? লজ্জানিরোধক চড় আবশ্যিক হলেও আমার পিঠ আমার গালদুটোর কাছে কখনোই যেতে পারবে না ।

আমার সর্বকালীন প্রিয় কমেডিয়ান সন্তোষ দত্তের চড়ার সেই মজার দৃশ্য দেখে উটের পিঠকে ভালোবেসেছি । হাতির পিঠে চড়ার প্রথম অভিজ্ঞতা অ্যানিমাল প্ল্যানেট চ্যানেলে দেখে অর্জন করেছি । রাজা বিক্রমাদিত্যের পিঠ কতবার বেতালের রোমশ সাদা ভূতুড়ে বুকের সাথে যোগাযোগ করেছে তার হিসেব মনে নেই । আর আমার পিঠের কোনো বর্ণনা আজও দেয়নি আমার বৌ আর ছেলে । বরং নিজে নিজে তুলনা করি এই ভেবে - বিয়ের আগে প্রেমচলাকালীন বেশ কয়েকবার বিক্রমাদিত্য হয়েছিলাম আর বিয়ের পরে ছেলের সাথে খেলতে খেলতে এখনো উট কিম্বা হাতি হয়ে যাই ।

এখন সবাই মনেপ্রাণে পিওর নিউক্লিয়ার, অথচ ফেসবুকচত্বরে যৌথভাবে থাকতে কারো আপত্তি নেই । পিঠোপিঠি ভাইবোনের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে আবিষ্কার করে ফেলি ব্লক মানে বন্ধুর পিঠ যেটাকে আর ঘোরানো যায় না । তার চেয়ে বরং বাস্তব বলে সই পিঠের পুরোনো আঁচড়কাটা দাগ । মাঝেমাঝে পিঠের ব্যাথা মনে করিয়ে দেয় যে জীবনমৃত্যুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মেয়াদ কমতে থাকে । 

কিন্তু কাকে জানাবো মরে গিয়ে অদ্ভূত হবার এই সুপ্ত বাসনার কথা ?

9 Mar 2015

স্লো মোশন


লাফিয়ে উঠে ঘুরতে থাকলো কাঁচিটা,
সবার চোখ বিস্ফারিত থেকে ভয়ার্ত হয়ে উঠলো,
কেউ বা হাত দিয়ে চোখমুখ চন্দ্রগ্রহণের স্টাইলে আড়াল করছে । 


সবই দেখাচ্ছে
স্লো মোশনে । 


তাৎক্ষণিক হলেও মুহূর্তটাকে দীর্ঘায়িত করার লোভ এড়াতে পারে কেউ ? যারা পারে, তারা সত্যিকারের পরিচালক । আর যারা পারে না, তারা 'লার্জার দ্যান লাইফ'-এর চুলকানিতে পরিচালিত ।

6 Mar 2015

মহাভারতের সীতা


দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে কয়েকঘন্টা চক্কর দেওয়া আর দুবাইকে কয়েকঘন্টায় দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে খেলাটা বের করে নেওয়া । দুটোর মধ্যে মিল একটা - শুরুতে আনন্দে কাটলেও সময়টা যেন দ্রুত ফুরিয়ে যায় । ভুস করে ভ্যানিশ হয়ে যায় আনন্দের রেশটা । মনে হয় আরো সময় নিয়ে যদি কাটানো যেতো । সেই বাকি সময়টা আজকের ম্যাচে যদি পুষিয়ে নেওয়া যায় । কে জানে কি যে হবে আজ ?

আজ অন্যদিন । দোলের পরদিন বলে নয় । ক্যারিবিয়ানদের সাথে ক্রিকেটযুদ্ধ বলে নয় । তাহলে গেইলের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখতে পাবার আশায় ? কোই বাত নেহি ! অন্যদিন এই কারণে যে আজ কলকাতায় অফিসের ছুটি নেই, অথচ সামনে চলছে "বড়ে স্ক্রীন, ছোটে স্ক্রীন" । বড়োটা স্যামসুং স্ক্রীনজুড়ে পার্থ-এর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম । ছোটোটা লেনোভো স্ক্রীনজুড়ে অফিসের যাবতীয় জিনিসপত্তরসহ ফেসবুকিং-ব্লগিং । হোম-সুইট-হোম-দর্শক আমি । ঘাড় আর চোখের মধ্যে কোনটা বেশি দোলনা খাচ্ছে - দুটোই সমান উপরনীচ করছে ? একটাকে স্থির রেখে অন্যটাকে উপরনীচ করানো ? বলা মুশকিল !

ওরে জিয়ো পাগলা !! টস জিতলো ওরা । এবিপি-কে দেওয়া দাদার সেই ইন্টারভিউটা মনে পড়ে গেলো । ভারতের আসল পরীক্ষা হতে চলছে কিনা । বিপক্ষ যদি হিমালয়ের চূড়া অবধি রান তোলে, তবে কি এপক্ষ সেই চূড়া অবধি ট্রেকিং করতে পারবে নাকি মাঝপথে একে একে মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে ? সেটা দেখার । 

একি ? যাহ কলা ! 

কেলো করেছে

ওকি ? কি হচ্ছে এটা ? ঘরে বসে ফের দুবাইতে বেকার চক্কর দিচ্ছি নাকি ? এটা তো শালা লম্বা লম্বা ষন্ডামার্কা লাল-হলুদের টিম । বীভৎস টিম কিনা বলি আমরা । আর গেইল ? যার ব্যাটিং চোখ বুজে ঘাড় গুঁজে দেখতে হয়, সেও দুবাই গ্যালো । টু বি আইরনিক, ডুবে-ই গ্যালো । এতো সহজে ? ঠিক বোধের গম্য হচ্ছে না । ভালো খেলা দেখার আশা এইভাবে লেখার সাথে বৃথা যাবে ভাবি নি । থাক ! আর কি লিখবো এ খেলা নিয়ে

ভাগ্যিস ! শুরুতে অনেকখানি অ-ক্রিকেটীয় ভাট লিখেছি । আচ্ছা, একটা কথা জিগাই দাদাকে । দাদা, তোমার কেমন লাগছে ? আসল অগ্নিপরীক্ষাটা আর দেখা হলো না তোমার, তাই না ? সীতার বোলিং-ফিল্ডিং সত্যি বেশ দানবীয় লাগছিলো প্রথম ইনিংসে ? হে মহারাজ, তুমি কোন যে রামচন্দ্র সে সেকেন্ড ইনিংস নিয়ে কিন্তু-কিন্তু করে ? আমিও তোমার মত ভীষণ হতাশ, তবে তোমার মত এতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালোবাসি না । শুধু ভালোবাসি সীতাকে । মহাভারতের সীতা ।

রামায়ণ ? হা হা হা ! এক্সকিউজ মি !

4 Mar 2015

তবে ইবন বতুতা হতে পারবো না


এ পথ যদি না শেষ হয়, তবে ইবন বতুতা হতে পারবো না । বেকার হেসো না কারণ এ পথের শুরুতে আমার সাথে ছিলে না । মাঝে দেখা দিয়েছিলে হঠাৎ করে, নদীতে ভেসে আসা কাঠের সিন্দুকের মত ।

কি যে সকাল দেখলাম


কি যে সকাল দেখলাম আজ সারারাস্তা । উঠতি কবি, পড়তি কবি, স্থিতি কবি সবার চোখে এই সকাল "আমার একটা নতুন নাম দাও হে কবিরা" গোছের আবদার নিয়ে হাজির । স্কুলড্রেসের মত কোনো ইউনিফর্ম নেই এ সকালের । অফিসকর্মীদের মত কোনো ফর্ম্যালিটি নেই এ সকালের । পথচলতি কয়েকটা অপ্রস্তুত ছাতা আর কিছু চলন্ত যানবাহন নিয়ে এ সকাল । 

নাম কী দেওয়া যায় বলো ? আমি নিদেন পড়তি হলেও কবি নই, তবু ওয়াইপার দুটি অনবরত ঘুরছিলো সামনে । এটা একটা ছন্দ যা চোখে ধরা দেয় না । চোখদুটো শুধু সকালের আলুথালু চেহারা জড়িয়ে ধরে ছিলো । যারা রোজকারের সকাল দেখে দিনের শেষে যায় নিষিদ্ধপল্লীতে, আজকের সকাল বোধ হয় তাদের কাউকে যেতে দেবে না । কারণ এ সকাল নিজে একটা নিষিদ্ধ সকাল । 

এমন সকালের একটা নাম দেওয়া উচিৎ । বাজারচলতি গণিকাদের চেয়েও অনেক অনেক ভালো নাম চাই । সেরকম সোঁদাগন্ধ পেলাম না এ সকালের স্তনে । এ সকালের বগলজুড়ে ফাঁকাবাড়ির ছাদ, কোথাও বা খোলা ঘাসকাটা বিস্তীর্ণ মাঠ । রং সবুজ নয়, সাদা নয়, হলুদ নয়, এমনকি ঝাঃ চকচকে মলের মত উজ্জ্বল রং নেই । আবছা ধূসররঙা বগলদুটি যার তার একটা নাম কী হতে পারে, বলো ? আমার গাড়ি কখনো ওই জায়গা দিয়ে যায় নি, আজকেও সম্ভব হয় নি । 

আমার মত করে নিশ্চয়ই অনেকে একই কথা ভাবছে । কে কী ভাবছে তা জানার কৌতুহল আমার নেই । কেউ কেউ হয়তো ইতিমধ্যে নামকরণ সেরে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলেছে পাপী হাতমুখ । 

এদিকে আমি একটা নাম খুঁজছি এই অপাপবিদ্ধ সকালের জন্যে । সেই কখন থেকে খুঁজছি । কেউ সাহায্য করতে এলে খচে যাচ্ছি । কেউ গল্প করতে এলে বিরক্ত হচ্ছি । আজ একলা কাটাবো যতক্ষণ না নাম খোদাই করতে পারছি আমার এই স্নান না করা শরীরে । আমার এই শরীর সকালের শরীর থেকে আলাদা কিছু নয় । 

অন্তত আজ ।

2 Mar 2015

এর কোনো সমাধান নেই


প্লিজ্ ! ওইসব 'এখন সময় গর্জে ওঠার' মার্কা পেজগুলো বানিয়ে আমাকে লাইক করার আমন্ত্রণবার্তা পাঠিয়ো না । যাদবপুরের তখনকার ভিসি অভিজিত চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবী আর মুক্তমনার লেখকবিজ্ঞানী অভিজিত রায়ের হত্যাকারীদের ক্যালানোর দাবী একই নয় ।

প্রথমত ওদের ধরা সহজ নয় । সংখ্যায় নিতান্ত কমও নয় এরা । এদের গোষ্ঠীর অজানা শাখা প্রশাখা অনেকগুলো থাকাও অসম্ভব নয় । প্রতি আক্রমণের জন্য প্রশিক্ষণ নেই আমাদের হাতে যে আনাড়ির মত মারতে যাবো সেটাই বলা বাহুল্যমাত্র । সর্বশেষে প্রাণ হাতমুঠো করে বীরত্ব দেখিয়ে নিজের পরিবারের দায়িত্বপালনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চিরকালের মত শেষ করে দেওয়ার মধ্যে কোনো সৎকারণ দেখতে পাই না । 

যদি জানতে চাও এইসব হত্যা বন্ধ বা ধর্মান্ধতা দূরীকরণের তাহলে সমাধান কী ? আমি বলবো - "এর কোনো সমাধান নেই"। এটা সামান্য একটা পদত্যাগের মত ফ্যাক্ট নয় । এটা যুগ যুগ ধরে চলা একটা পার্মানেন্ট এবং বিশ্বের জটিলতম ইস্যু । চারদেওয়ালের মধ্যে থেকে একই জাতিবর্ণগোত্রের প্রিয়জনদের সাথে যখনতখন ঝগড়া হয়, যার পরিণাম ভয়ঙ্কর হতেও পারে । আর এটা থামানোর সমাধান কই ?

নারীধর্ষণের মত একটা পুরোনো ক্লান্তিকর অথচ সর্বকালীন সমস্যার সমাধান পাওয়া গেছে এত এত এত প্রতিবাদ মিছিল আন্দোলনের পরে ? বরং যেসব ইস্যু সলভ করা সম্ভব, সেগুলোর জন্য গলা ফাটালেই দিব্যি কাজ করবে ।