25 Jan 2016

অ্যান্ অ্যাননিমাস্ আলস্য


সূর্যকে আগে কানামাছির বেশে দেখতে ভালো লাগতো না । আজকাল কেন জানি না মেঘের আগোছালো রুমালে চোখবাঁধা সূর্যের অসহায়তা দেখতে খু-উ-উ-ব ভাল্লাগছে ; আকাশে ভাসছে একটি বড়সড় কানামাছি । 

একদল পাখি উড়ে এসে টুপ্ করে ফেলে দিয়ে গেলো আমার অলটাইম ফেভারিট আলস্য ; আমার অগুনতি নিঃশ্বাস ত্যাগের সুখতীর্থ । 

আমার পাজামা এখনো বেশ ঠাণ্ডা । তার ভিতরে গুটিসুটি মেরে থাকা রোমশ পায়ের সম্পর্কে আমার তিলমাত্র উৎসাহ নেই । 

মোজাদুটো ক্রমে শুষে নিচ্ছে শেষ উষ্ণতাটুকু ; একাকী রক্তরেলের টার্মিনাল । আ ব্রিফ জার্নি অফ লোনলি ব্লাড, আ লস্ সো...

বৌয়ের নীচের ঠোঁটের কিছুটা ফেটে গেছে । ড্রাইনেসের অত্যাচার ; এ এক প্রত্যাখানের শিরশিরানি । কাল সন্ধ্যায় অঞ্জলী জুয়েলার্সের সামনে দেখেছিলাম একজনের লাল টকটকে লঙ্কাদুটো । তবুও বৌকে বলি নি ক্রিম লাগাতে কারণ আমার মতে একটু ন্যাচারাল থাকা ভালো । 

হ্যাজবান্ডের এমন অলসযুক্তি তার কচিকচি পাখনাদুটি মেলে উড়ুক । বেশিদূর যেতে পারবে না যদিও...
ভেসলিন, বোরোলীন, পন্ডস্ এদের চাহিদা অনেকদূর অবধি । গ্যালাক্সির পর গ্যালাক্সি পেরিয়ে কার মুখ দেখতে পাবো যার ঠোঁট নেই ?

বিবর্তনতত্ত্ব কি খাটে এমন অলসমুহূর্তে যেখানে একদল পাখির ঠোঁটে ঝুলছিলো আমার প্রিয় চিরকুট ; অ্যান্ অ্যাননিমাস্ আলস্য ।

18 Jan 2016

অক্সিজেনের শিশিটা হারিয়ে ফেলেছি


একে বলে চাঁদসাহিত্য ।
এরে কয় নদীসাহিত্য । 


সাহিত্যের ভূখণ্ড প্রায় পুরোটাই ঢেকে চেয়ার টেবিল বসানো আছে । চেয়ারে বসে ঢুলছে বিশাল বড়ো ন্যাড়ামাথার চাঁদ । টেবিলে খাতার পর খাতায় বয়ে চলছে বিমর্ষ নদী ।
নেকস্ট পাতায় মিশলেও নদীর সংজ্ঞা পাল্টায় না । চেয়ার ছেড়ে উঠলেও চাঁদের ব্যবহারিক বিস্তার কমে না । 

খালি চাঁদামো ।
খালি নদীপনা ।


আর ভাল্লাগে না, পদ্যকবি আমার !
আর পোষায় না, গদ্যলেখক আমার ! 


এবার ব্রেক দাও, হে সাহিত্য ! চাঁদকে গুঁড়িয়ে ফেলো চিরকালের মতো ! নদীকে নিংড়ে মেরে ফেলো সূর্পণখার মতো ! এখন থেকে নিঃচাঁদ লেখা চাই । নদীপ্রেম ও থাকবে না । 

শুনছো ? অক্সিজেনের শিশিটা হারিয়ে ফেলেছি যে..

ব্যক্তিগত ঘুমের আরেক নাম হলো জর্জ রেমি


আমার ব্যক্তিগত ঘুমের আরেক নাম হলো জর্জ রেমি । তাঁর আঁকা টিনটিন আমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে, কুট্টুস আমার গাল চাটছে, ক্যাপ্টেন হ্যাডক আমাকে জড়িয়ে নিঃশব্দে কাঁদছে, টমসন টম্পসন আমার পা দুটো ম্যাসাজ করে দিচ্ছে, প্রফেসর ক্যালকুলাস আমার মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুক ইউটিউব সবকিছু আন্ইনস্টল করে দিচ্ছে ।

যেখানে আগুন ছিলো একসময় ধর্ম


লেপ ওল্টাতে বেরিয়ে এলো
এক চ্যাবড়া প্রগলভ ম্যাগমা
বিছানা থেকে নেমে ছুটে পালাচ্ছে
বন্যহরিণ, বাইসন, ম্যামথ - একের পর একে


বালিশের উপরে ঘাম জমে জমে সে হয়ে গেলো
আমার আত্মছবি
দেখতে কোনো এক গুহামানবের মতো - অনেকটাই মিল


বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজতে গেলাম
বন্ধ জানলার কাছে
অল্প একটু ফাঁক করতেই যে হাওয়া
ঢুকে পড়লো হু হু করে
বিশ্বাস করতে পারি নি তাকে - জাস্ট পারলাম না


ফিরে গেলাম
বহুছালীয় সভ্যতার একটা ছাল কেটেফুঁড়ে
যেখানে আগুন ছিলো একসময়
ধর্ম; তাকে ঘিরে ছিলো
অসীম ভয় ও অপার বিস্ময় - একসাথে প্রবলভাবে

নিজেকে লুকোবে কোথায়?


জিনিসপত্তর তোমার
যেমন আছে অনেক অনেক
লুকিয়ে রাখার জন্যে তেমনি
রয়েছে প্রচুর জায়গা
এখানে না হলেও ওখানে তো হবেই

কিন্তু
তুমি বড়ো সাইজের একটা কিন্তু
তুমি একটাই কিন্তু
নিজেকে লুকোবে কোথায়?
ভেবেছো কখনো ?

অনিশ্চয়তার বুকমাঝারে


অনিশ্চয়তা এমন এক সস্তা পাবলিক
যার জন্য সেভিংস্ অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স আজকাল
চেক করা-ও বোকামি ।


অথচ তুমি ছুটে চলছো
এমন ফুলস্পিডে
এমন জেদে
এমন তেজে
এমন হাস্যকর উপায়ে যা দেখলে
নতুন নতুন ব্যাঙ্ক
তার নিত্যনতুন শাখাপ্রশাখা গজিয়ে উঠবে । 


বাড়তে থাকবে ব্যাঙ্কদূষণ
বাড়বে বিশ্বাসকষ্ট;


এসো, বসো, একটু জিরিয়ে নাও
এমন শরবত খেয়ে নাও যার
তিনভাগ জল আর
একভাগ নিশ্চয়তা


দেখবে আর বুঝবে
কেমন একটা চারুকলা জেগে জেগে উঠছে
অনিশ্চয়তার বুকমাঝারে ।

4 Jan 2016

# ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১৫ #


জয় গোস্বামী । তাঁর 'মায়ের সামনে স্নান করতে লজ্জা নেই' । এটি তাঁর স্বীকারোক্তি কিনা তা নিয়ে কারো কারো দ্বিমত থাকতেও পারে । অকপটচিত্তে বলা কথাটি শুনলে আজও অর্থাৎ টোয়েন্টি-ফিফটিনের লাস্ট ডে-তেও দাঁড়িয়ে অনেকের চোখ ব্রহ্মতালুতে উঠে যেতে বাধ্য । একটা কবিতাবইয়ের মলাটের গায়ে উল্লিখিত নামকরণের পেছনে অসার্থক-সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক । অথচ মাথাব্যাথা নেই প্রকাশকের । আনন্দ পাবলিশার্স । সিগনেট প্রেস । কারণ ততদিনে জয় গোস্বামীর খ্যাতি অম্বুজা সিমেন্টতুল্য । জয় গোস্বামী বলতে আজ বুঝি প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে আসা রবীন্দ্রদাড়িগোঁফভর্তি একজন শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব । তফাৎ শুধু কালোসাদায় । 

আজ চারদিকে বিশেষ করে ক্লাবে, পাবে,নাইটক্লাবে, হোটেলে নিউ ইয়ার ইভের ধুমধাড়াক্কা । নতুন বছর বরণের নামে ইরোটিক নাচের উদ্দামাক্কা । চলতি বছরের শেষ কয়েকটা ঘন্টায় নিজেদের মনশরীরকে শেষবারের মতো চরমক্লান্তিতে সঁপে দেবার জোরজবরদস্তিক্কা । এইসময়ে এই কবিতাবইটা খুলতেই প্রথম কবিতা চোখে পড়লো । তার একাংশ তুলে দিলাম নিচে - 

"...জগৎ একটা হৃদপিণ্ড, রাতে তোমার হাতের ওপর এসে পড়ে এই জগৎ - দু'হাতে ধরে বসে থাকো তুমি, দ্যাখো কীরকম ধক্ ধক্ ধক্ ধক্ করে সারারাত, একদিন ভোর হবার ঠিক আগেই ওই জগৎ বা হৃদপিণ্ড নিঃশব্দে ফেটে যাবে, তার আগে বলো বলো বলে দাও ওরে বোকার মরণ নইলে পরে আর সময় থাকবে না...", 

কার বা কাদের উদ্দেশে লিখে গেছিলেন জয়দা জানা না থাকলেও ঠিক এই সময় বা বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে চমকে দিতে ওস্তাদ উপরের লাইনগুলো । বছর শেষ হতে চলছে । ভোরের আলো বাসিমুখের উপরে পড়ার আগে যা বলার সব বলে দিতে হবে, নাহলে কালের নিয়মে আরেকটা বছর ঘুরে আসবে পিঠে ঠ্যালা মারতে । এক কথায় আগে যেমন মরণ ছিলে, তেমনি মরণ হয়ে থাকবে যদি না মুখ ফুটে কিছু বলো বা কনফেস্ করো । 

আপাতবিচারে আমরা সকলেই কম-বেশি মরণ । সার্বজনীন মোদী থেকে শুরু করে জঙ্গিবাদীদের নিয়ে শেষে আমরা-তোমরা-বাদী । কেউ স্বীকার করবে না কী কী করেছি বা করি নি আমরা, কার কার সাথে শুয়েছি বা শুই নি, কাকে বা কাদের উপরে বোমটোম মেরেছি বা মারতে ভুলে গেছি বা একটুর জন্য ফস্কে গেলো বলে মাথার চুলটুল ছিঁড়েছি, কাকে কাকে নির্ভয়া নাম্বার দুই তিন চার বানিয়েছি বা ক'জনকে ছেড়ে দিয়েছি বা অ্যাসিড ছোঁড়ার প্ল্যান বের করেছি কিন্তু পেপারে রঙীন ছবিসহ নাম বেরিয়ে যেতে পারে ভেবে কতবার সংযত হয়েছি, কোন কোন অকাজ করি নি বা করতে চাই নি সৎপথে, কী কী ভুল করেছি, কী কী অন্যায় করেছি, কী কী ছড়িয়ে দিয়েছি, সর্বোপরি কী কী ভালোমানুষী শপথ নিয়েছি বা ছেলেমানুষী বিপথে চলেছি সারা বছরজুড়ে । কেউ মানতে চাইবে না গোটা একটা বছরের হিসেব । কেউ দেখেও দেখবে না সেই হিসেবের বিশ্লেষণী গ্রাফলাইন । মরণ আমরা সকলে । তাই রোজ ভোরের আলো এসে লুকোচুরি খেলে আমাদের দু-মুখের মধ্যে । পয়লা জানুয়ারির ভোর ও ব্যাতিক্রম নয় ।

সময় নষ্ট হয় বলে প্রতিটা ভোর আসে । সময় থাকে না বলে আগের সারারাত কেটে যায় কামে-ঘামে-উদ্দামে-নির্দমে । সময় নেই বলে নতুন বছর আসে সমস্ত হিসেব আপসাইড ডাউন করে ফেলতে । জয় গোস্বামী কি এইভাবে বছরের পর বছর ৩১শে ডিসেম্বরকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন ? তাতেও সন্দেহ আছে । কারণ আরেকটা কবিতায় তাঁর কথায় বনজঙ্গলের দিকে ছুটতে থাকা একটা কুকুরের "মুখে বলের মতো কামড়ে ধরা আমার প্রাণ । দে, দে, থাম্ থাম্ বলে ওর পিছনে ছুটছি আমি ।" 

ইতিহাস ছুটছে যার চেহারা এরকম - বছর ছোটে । তার পেছনে সময় ছোটে । তার পেছনে প্রাণ ছোটে । তার পেছনে মরণ ছোটে । তার পেছনে বছর ছোটে ।

খালি চাঁদামো, খালি নদীপনা


একে বলে চাঁদসাহিত্য ।
এরে কয় নদীসাহিত্য । 


সাহিত্যের ভূখণ্ড প্রায় পুরোটাই ঢেকে চেয়ার টেবিল বসানো আছে । চেয়ারে বসে ঢুলছে বিশাল বড়ো ন্যাড়ামাথার চাঁদ । টেবিলে খাতার পর খাতায় বয়ে চলছে বিমর্ষ নদী ।

নেকস্ট পাতায় মিশলেও নদীর সংজ্ঞা পাল্টায় না । চেয়ার ছেড়ে উঠলেও চাঁদের ব্যবহারিক বিস্তার কমে না । 

খালি চাঁদামো ।
খালি নদীপনা ।


আর ভাল্লাগে না, পদ্যকবি আমার !
আর পোষায় না, গদ্যলেখক আমার ! 


এবার ব্রেক দাও, হে সাহিত্য ! চাঁদকে গুঁড়িয়ে ফেলো চিরকালের মতো ! নদীকে নিংড়ে মেরে ফেলো সূর্পণখার মতো ! এখন থেকে নিঃচাঁদ লেখা চাই । নদীপ্রেম ও থাকবে না । 

শুনছো ? অক্সিজেনের শিশিটা হারিয়ে ফেলেছি যে...

জর্জ রেমি


আমার ব্যক্তিগত ঘুমের আরেক নাম হলো জর্জ রেমি । তাঁর আঁকা টিনটিন আমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে, কুট্টুস আমার গাল চাটছে, ক্যাপ্টেন হ্যাডক আমাকে জড়িয়ে নিঃশব্দে কাঁদছে, টমসন টম্পসন আমার পা দুটো ম্যাসাজ করে দিচ্ছে, প্রফেসর ক্যালকুলাস আমার মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুক ইউটিউব সবকিছু আন্ইনস্টল করে দিচ্ছে ।

মাছি ধরা


মাছি ধরা নিয়ে আজ পর্যন্ত পুরষ্কার ঘোষণা করা হয় নি কোথাও । কোনো খবরের কাগজে দেখি না মাছি মারার অভাবনীয় কীর্তি নিয়ে হেডলাইন । গল্পোপন্যাসে প্রায় দেখি মাছি তাড়ানোর ক্লিশে পট । নিদেনপক্ষে ইন্ডোর গেমস্-এ এক ঘন্টায় সর্বাধিক মাছি খপ করে ধরে ফেলার মতো উইনিং চ্যালেঞ্জের জায়গা নেই । এ তো ভারী অদ্ভূত । বিশাল একটা অদ্ভূতের ঘোর নিয়ে বসে আছি । আমার ডানহাত এখন খুব টায়ার্ড । ওদিকে তিন ইঞ্চি দূরে একটা মাছি একটা পা তুলে নিজের মুখের ঘাম মুছছে । পালিয়ে পালিয়ে যা ঘাম ঝরেছে, না ? আ ট্রু স্পোর্টিং লাইফ যা দুনিয়ার অগোচরে চলে ।

তার সারা শরীরকে অনুবাদ করে ফেললাম


শেষ পর্যন্ত তার সারা শরীরকে অনুবাদ করে ফেললাম । মুণ্ডুটুকু বাদ দিয়েছি । খুবই জটিল ছিলো তার মুণ্ডুটা, বাকিটা সরল বলতে তার নগ্নশরীর । বারান্দায় কালো কার্পেট পেতে শুয়েছিলো সে । বারান্দার এক কোণে বসে কাজ করছিলাম । তার মুণ্ডুর একদম কাছে আমার ধূলোহীন পা । আমার পা দুটিতে ছিলো না কোনো জটিলতা, যা সব রয়েছে একমাত্র তার মুণ্ডুতে । 

তার ফর্সা শরীরের উপরে আড়াআড়ি করে আমার ছায়া পড়েছিলো । আমার ছায়ামুণ্ডু তার যোনির বাঁদিক ঘেঁষে চলে গেছিলো । সারারাত ধরে একটা ঝড় ছিলো আমাদের সাথে । সেই ঝড় অনুবাদের ফাঁকে ফাঁকে চিৎকার করে বলছিলো - "তোর মুণ্ডু!"

তার চিৎকারে আমি কাজ থামিয়ে একবার চেয়ে দেখি মেয়েটার জটিলমুণ্ড । একবার চেয়ে দেখি সেই গুরুত্বপূর্ণ প্যারা-টা মিস্ করে যাওয়া নিজমুণ্ডুছায়া । ঝড় দুই তিনবার হয়তো গলা একটু নামিয়ে বলতে চাইছিলো, "তোর পায়ে পড়ি এবার"। নিশ্চিত ছিলাম না যদিও ।

আমার পা দুটি ধীরেসুস্থে এগিয়ে যাচ্ছিলো মেয়েটার মুণ্ডুর দিকে । ঝড় তক্ষুনি তার কালো চুল উড়িয়ে দেয় । চুল একই জায়গায় থেকে উড়তে থাকে । দেখলে মনে হবে কালো কার্পেটের একপাশ থেকে যেন কালো নরম চাদর বিছিয়ে দেওয়া আছে । সেই চাদরের শেষ যেখানে, সেখানে আমার পা দুটি । কে কার পায়ে পড়লো ? সম্মান অসম্মানের ঝাপটা বুঝতে পারি নি । একনিষ্ঠ অনুবাদক তখনো আমি ।
তার গোটা শরীরের অনুবাদক আমি । ইংলিশ থেকে বাংলায় নয় । উল্টোটাও নয় । তার উন্নতবুক দুটিকে, তার সুগভীর নাভিকে, তার লোমহীন যোনিকে, তার মাখনভাব ঊরুদ্বয়কে, তার নিষ্পাপ পা দুটিকে অনুবাদ করেছিলাম এমন একটা ভাষায় ঠিক যেভাবে ঝড় শিখিয়ে দেয় একজনের শরীর ও মুণ্ডুর মধ্যিকারের বিভেদকরণ । 

এখন অনুবাদ-কম্মোর তেমন কোনো মাথামুণ্ডু নেই বলে তোমরা প্রতিবাদ করলে কিন্তু রাগ করবো । খাতাটা তবে ছিঁড়বো না ।

গুহামানবের মতো


লেপ ওল্টাতে বেরিয়ে এলো
এক চ্যাবড়া প্রগলভ ম্যাগমা
বিছানা থেকে নেমে ছুটে পালাচ্ছে
বন্যহরিণ, বাইসন, ম্যামথ - একের পর একে


বালিশের উপরে ঘাম জমে জমে সে হয়ে গেলো
আমার আত্মছবি
দেখতে কোনো এক গুহামানবের মতো - অনেকটাই মিল


বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজতে গেলাম
বন্ধ জানলার কাছে
অল্প একটু ফাঁক করতেই যে হাওয়া
ঢুকে পড়লো হু হু করে
বিশ্বাস করতে পারি নি তাকে - জাস্ট পারলাম না


ফিরে গেলাম
বহুছালীয় সভ্যতার একটা ছাল কেটেফুঁড়ে
যেখানে আগুন ছিলো একসময়
ধর্ম; তাকে ঘিরে ছিলো
অসীম ভয় ও অপার বিস্ময় - একসাথে প্রবলভাবে