29 Aug 2014

যাঃ যোগ বাঃ বিয়োগ


যে করে যাঃ যা যোগ সেই করে বাঃ বা বিয়োগ 
তুমিতে যেমন বোরিং আমিতে তেমনি রোগ 

যোনি ছাড়া আর কোথাও যায় না স্কুলবাস
যে খোঁজে নদী আকাশ সে দেয় চাঁদের বাঁশ

প্রেমফুল ছেঁড়াতে আর বালচুল ছেঁড়াতে সমান 
ধর্মের চেয়েও অতি ভয়ানক ছন্নছাড়া পুরাণ 

একই ভাবনাধারা থেকে বেজে বেজে ওঠে বারোটা
রামায়ণের ভীমে মহাভারতের রামে আলু পরোটা   

যত সোজা চ্যাপ্টা ক্লান্ত উল্টো পাল্টা চমৎকারে  
তত শূন্যের চমকপ্রদ বিধ্বস্ত মানসিক বিকারে 

মনের সব কথার ম্যানহোল যার শেষ অংশে 
সর্বাঙ্গসুন্দর হয়ে ওঠার বেকার দাবী রাখে সে

সব আছে আসলে কিছু নেই কিছু নেই ফাঁকা 
ধুসের শালায় ধুরে বাল ধুতে যায় তেরিকা


বল পেনের রজঃনিবৃত্তি শুরু হয়ে যায় আগে আগে 
ভালো লাগাটা ভালো চিকিৎসাতেও ভালো-ই ভোগে


27 Aug 2014

বোধের দাঁত


বোধের দাঁত আছে ? আছে সরু সরু বিশ্লেষণী ব্রাশ ? আর সাথে কি আছে এক দু'টিপ নীতির পেস্ট ? একটু মেজে নাও তাহলে না হলে, না করলে, তা না-ই বা মাজলে । বোধের কদর্য দুই পাটি দিয়ে যেটা খুশি হন্তদন্ত খিঁচিয়ে করছো অমতের মতপ্রকাশ, কোনোটার ছাপিয়ে যেতে পারার কথা নয় এপক্ষের ঝকঝকে হাসিকে ।

চার নম্বর ফ্ল্যাটের মিসেস চট্টোপাধ্যায় জানে না যে সে রাস্তার ধার ধরে হাঁটছে না ফুটপাথের ধার, সে শুধু জানে ওপক্ষের বিতিকিচ্ছিরি হাসির দড়ি ঝুলে আছে ।

থামাবো কি ওকে ? নাকি ফুটপাথে উঠিয়ে দিলেই হবে ? বুঝতে পারছি না । তোমরা আগে মেজে দেখো আর দেখো কি অন্যায় করেছি ওর সাথে ? ওই যে হেঁটেই যাচ্ছে, দেখে তো মনে হচ্ছে না দুপক্ষের ধার ধরে আছে চাট্টুজ্যে অান্টি ।

সব দেখে ফেলেছিলাম । সব, সব, প্রথম থেকে-ই সব । ভোরের জানালা খোলার আগে পর্যন্ত কে জানতো আজকের ভোর এমন-ই ? এমন অসময়ে ? না, কেউই না । অান্টিও না । আমিও না । এমনকি তার পাঁচ বছরের প্রেমিকও না ।

সারারাতের হাসি ছিটকে ছিটকে লেপ্টে গেছিলো অান্টির সারাশরীরে, সাথে মুখের হাসিটাও বেঁচে ছিলো ভোরের আগে, আমার চোখে ওর চোখ পড়ার আগে পর্যন্ত । তাই বলি, আছে কী কিছু তোমাদের ? সমাজের ? নাহলে মেজে নাও আরো ঘষে । কোন যে পক্ষের জন্য মাজা তার আমি কি বুঝি ?!

এখনো আছে বাকি, অনেক বাকি । তবু, ওই বিপক্ষের পক্ষে হাঁটছে মিসেস চট্টোপাধ্যায় । এই পক্ষের বিপক্ষে পড়ে রয়েছে তার সেই নির্মল হাসি, তার সেই নির্মেদ শরীর, তার সেই নির্বোধ প্রেমিক । যা সব একসাথে মিলিয়ে গেছিলো আমার সামনে-ই ।

জলদি জলদি মেজে দেখো আর ভাবো যে আমি কিন্তু হতে পারতাম সেই প্রেমিক বা তোমরাও হতে পারতে সেই প্রেমিক । এর ফাঁকে কল্কি অবতারের আসার চান্স একেবারে বেকার, যদি বা কোনোদিন এসে থাকলে সেও বনে যেতো কলি প্রেমিক, সে বিষয়ে নিশ্চিত । আর ভেবে দেখো নির্বোধের দাঁত যে আমাদের কারোর মাজা-ই হয় নি কোনো কালে ।

ঝকঝকে হাসি থেকে অনেক দূরে চলে গেছে আন্টি । ইতিমধ্যে ।

জীবনটাই বারণযোগ্য নয়


ঘুমকে আমার কাছে আসতে বারণ করলাম, শুনলো না ।
ছেলেকে আমার কাছ থেকে যেতে বারণ করেছিলাম, শোনে নি ।

এখন আমার ছেলেকে অকাতরে ঘুমোতে দেখে বুঝলাম এই
জীবনটাই বারণযোগ্য নয় ।

প্রাণায়াম


প্রাণায়াম করাকালীন স্বীয় ধ্বংসকাল আর স্বাভাবিক মৃত্যুকালের মধ্যে অলঙ্ঘনীয় সেতুবন্ধন ধীরেসুস্থে এঁকে ফেলা শ্রেয় । সেরকম ভাবে আঁকতে যদি না পারা যায় কিম্বা অন্য কোনো উপায় নেই বলে যদি মনে হয়, তবে আরোমা থেরাপি করিয়ে নাতিশীতোষ্ণ তোয়াল দিয়ে মুছেটুছে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে হবে শুধু আত্মনষ্টামির রাস্তায় যাওয়ার দিকটা ।

কিন্তু মুশকিল হচ্ছে যে মুছে ফেলার কাজটাকে সহজপন্থা হিসেবে বাছলেও জীবিতকালে পান্থজন সব জনে জনে ছাপ ফেলে যায় তাদের অকালশ্রমসাধন যাত্রায় আর তাতে উল্লিখিত রাস্তার দিকটা মুছে ফেলা গেলেও ঠিক আবার ফিরে আসে পরবর্তী পথিকের দৌরাত্ম্যে । এর অভিমুখ অবশ্যই পাল্টাতে পাল্টাতে উল্টে যায় । এতে কেমন যেন দৈবপ্রেরিত হয়ে অনুসরণ করি সেই 'মহান' ছাপগুলো । তার সাথে আমাদের হোঁচট খাওয়ার স্টাইলও পাল্টে পাল্টে উল্টে যায় । এই ছিন্নমূলের ভিন্নমুখী স্টাইলবাজির ফাঁকে ফাঁকে আত্মবিনাশের সম্ভাবনার রিল আরো লম্বা ও সুপারহিট ফিল্মি হতে থাকে ।

ইন্ ফ্যাক্ট চোখদুটো মায়াবী করে মুখ থেকে জিভ দেড় থেকে আড়াই ইঞ্চি বার করে একদিকে বেঁকিয়ে মরে যাওয়ার মত অভিনীত খুচরোখাচরা অস্বাভাবিক দৃশ্য যত কল্পনা করি, তার থেকেও বেশি করে স্বপ্নে দেখি মৃত্যুগমনের শান্তশিষ্টলেজবিহীন স্বাভাবিকতা । অনিবার্য মৃত্যুর অস্বাভাবিক দিকটা আমরা কেউ স্বেচ্ছায় না চাইলেও ওই বিকৃত কল্পচিত্রটা চিরাচরিত দেখা এই স্বপ্নকে ফুলস্পিডে ওভারটেক করে আমাদের সামনে এসে পড়ে । বাস্তবতার পশ্চাতে একটামাত্র মোক্ষমলাথি মারতে এর জুড়ি নেই বলে আমরা সেই কল্পচিত্রটাকে বাস্তববাদী চিত্রনাট্য বা চলচ্চিত্রের মধ্যে জায়গায় জায়গায় গুঁজে দিয়ে চালাই আর নিজেদের বিনষ্টিকরণের কাল্পনিক রাস্তাটাকে সাফটাফ করে সুগম করে দিই ।

সেই প্রেক্ষিতে এটা আটকাতে হলে 'বসে আঁকো' প্রতিযোগিতায় না নেমে বা খুবই দ্রুত সংক্ষিপ্তভাবে বলতে গেলে, দমবন্ধ করা টেনশনভোগী হয়ে কাল্পনিক পুরষ্কারের দিকে না-কাটা তরমুজের সাইজে হাঁ করে না তাকিয়ে, ধীর এবং সুস্থ শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে সেই অকল্পনীয় সেতুনির্মাণের ছক এঁকে ফেলা হোক সবার আগে । তবেই না পাবে সেরা অ্যার্কিটেক্টের শিরোপাতুল্য সম্মান যা যেকোনো তরুণ প্রজন্মের পক্ষে শেষবয়সে প্রবীণ পেনশনভোগীদের (যা কিনা ২০১২ সালের পর থেকে নিয়োজ্য সরকারী কর্মচারীদের জন্যে প্রযোজ্য নয়) মত নির্বিঘ্নে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার চেয়েও ঢের ঢের ঢের ভালো ।

মনখারাপের চাবি


ভাঙা বুকের একমুঠো পাউডার কৌটোতে ভরে ছাদে নিয়ে যায় লোকে । কিন্তু আমি ল্যাদ খেয়ে ক্র্যাকার বানাই । নিজের বুক তো, তাই আর কতগুলো বানানো যায় ?! তাও কিছু পাউডার বাঁচিয়ে রাখি আলাদা করে কাগজে মুড়ে । সেটা আলমারির লকারে রেখে চাবিবন্ধ করে দিই ।

লোকে ছাদে দাঁড়িয়ে কৌটোটা আকাশের দিকে যখন ছুঁড়ে মারে, তখন প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ হয় আমার দুই আঙুলের মধ্যে ।

চাবিটা সবসময় আমার কাছে থাকে । কিন্তু লোকে ঘরে ফিরে হাবিজাবি খোঁজে । আসলে তারা ভুলে যায় যে মনখারাপের চাবি বিস্ফোরণের পরেও অক্ষত থাকে ।

21 Aug 2014

কু-সজ্জিত দাবার ছক


খুঁজতে খুঁজতে টের পেলাম যে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মধ্যে একটা কু-সজ্জিত দাবার ছক আছে । 

সাদা রাজা চারদিকে একপা করে এগিয়ে বা পিছিয়ে দেখতে পাচ্ছে না কালো মন্ত্রীকে । সাদা মন্ত্রীর সোজাসুজি বা কোনাকুনি যাতায়াতে কালো রাজার একবারও দেখা নেই । 

ষোলোআনা নিষ্ফলতার দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে পিছু হটছে ষোলোজন সৈনিক ।
সন্ধানরত হাতিঘোড়াগুলোর উপরে আর কোনো ভরসা নেই । ঘাটবাঁধা চারটে নৌকা থেকেও চোখ ফিরিয়ে নিলাম । 

নিরুদ্দিষ্ট দাবার ছক উল্টে ফেলে দিলাম ।

18 Aug 2014

তাড়া


জায়গায় জায়গায় জড়ো করে থাকে গাদা গুচ্ছের দেরী । সবগুলোর মধ্যে ঝিকমিক করে একটা করে তাড়া । নির্বাক তাড়া । আকাশের বা চোখের তারা ভাবলে সে স্রেফ অপমানের চোটে একগুচ্ছ দেরীর ভিড় ঠেলে উঁকি মারে । একবার উঁকি মেরে ফিরে যায় । চুল বাঁধতে বাঁধতে বা চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে হাতদুটো পাখির কচি ডানা হয়ে যেতে চায় । যেন এখুনি সেই তাড়াকে কুড়োতে হবে ।

চিরুনি পড়ে যায় খটাস করে । রবারের রিং বা রিবনের ফিতে ছিঁড়ে যায় পং করে । এমনকি বাকি যা যা সশব্দে হয় সেগুলো সেই তাড়ার মধ্যে কোনো কাঁপুনি ধরায় না । একেবারে অসাড় তাড়া । সাড়হীনতাই তার একগুয়েমি । এই একগুয়ে স্বভাবের তাড়া যতটা সামান্য মনে হয়, ততটা নয় । এর জন্যে গোটা দুনিয়ার চালচলন ব্যর্থপ্রেমিকের মতো । 

এরকম মোটা মোটা শক্তপোক্ত দেরীর আড়ালে পড়ে থাকা তাড়া আসলে দলাপাকানো ছোটো একটা শীর্ণকায় রোগ । যা যেকোনো অসুখের চেয়ে তুচ্ছাতিতুচ্ছ অথচ এর ভয়াবহতা অনেক দূর । এই দলাকে এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই দলার রফাদফা করতে হবে বলে তাকে ধরার জন্যে দৌড়াই । কিন্তু আমাদের দৌড় ওই দেরী পর্যন্ত । তারপরে আর দম থাকে না । তাড়া থেকেও হারিয়ে যায় ওই দেরীর ভিড়ে আর নিমেষের মধ্যে হয়ে যায় বাকি সমস্ত যাবতীয় অসুখের শিরোমণি ।


"ভালোবাসি" আর "রইলো ভালোবাসা"


"আমি তোমাকে ভালোবাসি" আর "তোমার জন্যে রইলো আমার ভালোবাসা" - এ দুটোর অর্থ একই হলেও প্রথমটা আবেগতাড়িত শোনালেও বেশিরভাগ সময়ে পুরোটাই বুকভরা ঢপ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয় , দ্বিতীয়টা আবেগশূন্য শোনালেও মনেপ্রাণে গ্রহন করার মত বুকভাঙ্গা বিশ্বাসযোগ্য লাগে ।

শুধু শেকড়বাকড়


পুরো গাছ না এঁকে শুধু শেকড়বাকড় । স্কেচ শেষ করতে না করতে সমস্ত গাছ নিজেদের উপড়ে ফেলে । মাটির গর্তের ভিতরের গর্ত থেকে ভেসে আসছে পেনসিল আর রবারের মধ্যে রণক্লান্ত সাদাকালো নিনাদ । এই দ্বন্দ্বের রং কী দিই?

স্বাধীনতা


এখনো যারা পরাধীন, তাদেরও স্বাধীনতা আছে 'পর'-এর নাম কোনোকালে উচ্চারণ না করার ।

লেখার সময়জ্ঞান


সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে চায় না বলে লেখার অনেকাংশ ছাইভস্ম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । উল্টে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে বাধ্য হয়ে ঘোরে বলে ছাই থেকে জন্ম নেয় অনেক লেখা । কাজে এ লেখা বা ও লেখার কোনো সময়জ্ঞান নেই ।

কক্ষপথ চেয়ে না তাকিয়ে যেমন লিখতে পারা যায়, তেমনি ছাইয়ের মধ্যে কব্জি ডুবিয়ে বেশ খানিক সময় ধরে আঙুলগুলো চালালে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে পৃথিবীর চারদিকে সূর্যের না ঘুরতে চাওয়ার সহজতম ব্যাখ্যা ।

11 Aug 2014

রুচিপত্র


আমার রুচিপত্র দেখে বইটা তার সমস্ত সূচিবোধ নিয়ে কোথায় যে ভেগে পড়লো?! তার সূচিতে বাধলো বুঝি?

এমন তীক্ষ্ণসূচক ব্যাপার সবসময় রুচিসম্পন্ন যে হবে না তা এক্ষণে বুঝলাম !

শুরু আর শেষ, আঁতেলামি


শুরু আর শেষ নিয়ে আমরা যেনতেন বিভ্রান্ত হই । গোলমেলে শুরু থেকে তৈরী হয় শেষের গোলমাল অথচ সেই গোলমালের শেষ বলে কিছু নেই । "এ তো শুরু হবে, স্যার" - এই জেনে আমরা নির্দ্বিধায় তার আগে শেষ করে ফেলি । "বস্, এক্ষুণি শেষ হবে" - এই ভবিষ্যৎবাণী শুনে শুরুতে সুড়সুড়ি দিতেও পিছপা হই না আমরা । শুরু থেকে শেষ অবধি একটা বোধ সবসময় কাজ করে যা শেষ থেকে শুরু অবধি ঠ্যালা মারে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুরুকারীর সাথে শেষকারীর শত্রুতা থাকে যদি তারা ভিন্ন হয় । আবার তারা একই হলেও মিত্রভাবাপন্ন হতে ভুলে যায় । সৃষ্টি হয় বিব্রতভাব । এতটাই বিব্রত যে ব্রিজ তৈরী করতে অক্ষম যা দিয়ে শুরু আর শেষ একটু চেষ্টা করে কানেক্ট করা যেতো । আবার এও বলা যায় না যে সেই ব্রিজটা তৈরী করাটাই একান্ত প্রয়োজন ।

আসলে জন্ম মানে শুরু আর মৃত্যু মানে শেষ কিম্বা শেষের শুরু - এই বিতর্কিত জন্মমৃত্যু নিয়ে বিস্তর তাত্ত্বিক আলোচনার সুরাপাত্রে চুমুক দিয়ে খাই আমরা অনেকে । মনস্তত্ত্বে চুমুক দিতে না দিতে দেহতত্ত্ব হয়ে ওঠে পরের চুমুক । এই চুমুকপ্রদ বিতর্কসভার বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না কেউ । আচ্ছা, বিভ্রাট নিয়ে থাকতে ভালোবাসে মানুষ? জানি বেশিরভাগ ভোট গিয়ে পড়বে না-এর কোলে । কিন্তু কেন? জটিলতম ধাপ পেরোতে পারলে তো আসে সাফল্য । তার সাথে আসে পিঠচাপড়ানির হাই ভোল্টেজ্ । তাই না? এটা কে বা চায় না?! বরং ওই জটিলতম ধাপ দুই হাতে আঁকড়ে ধরে পা ঝুলিয়ে থাকে । বিভ্রাটের শেষ ধাপ বলা যেতে পারে । আবার এর শুরু যে কোথায় তা নিয়ে মানুষের কৌতূহলের সীমা নেই । তাই সাফল্যের চাবিটা শুরু আর শেষের মাঝে কোথাও না কোথাও হারিয়ে যায় । প্রকৃতির নিয়মে হারিয়ে যাওয়া যেকোনো জিনিস খুঁজে বের করার মধ্যে আছে এক উত্তেজনা । অদম্য । টগবগে । এই পাগলাটে সার্চের পেছনে বিভ্রান্তিকর হরমোনের ভূমিকা অতি গুরুত্ববহ ।

ব্যাপারটা হলো আঁতের বকবকানি খালি কানে শোনা যায় না । তবে শুরুর ভিতরে বন্দী শেষের আর্ত চিৎকার অথবা শেষের বাইরে শুরুর মুক্তিকামী আর্তি যেভাবে একই আঁতের এপিঠ ওপিঠ হয়ে উঠছে তা চোখে ফুটে ওঠে, চেহারায় তার ছাপ পড়ে, চলনে বলনে জড়িয়ে পড়ে বিভ্রাটের শাখাপ্রশাখা ।

আঁতেলামির শুরু নেই, শেষ ও নেই । তবুও এর শুরুত্ব বা শেষত্ব নাক-থেকে-জল-পড়ার মত ন্যাকা প্রেমের সৎ ব্যাকরণের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ।

হিট স্প্রে

মই দেওয়ার মত আমার কাঁচা বা পাকা ধানের নিদেনপক্ষে এক বর্গমিলিমিটারের কোনো জমি নেই, বমিও করি না কারুর হৃদমাঝারে । শুধু বেসিনে বা আইনত নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় গিয়ে রুচিশীল, পরিমার্জিত এবং শৈল্পিক বমি করি । একমাত্র আত্মসম্মানটুকু অনড় আর অটুট রেখে চোখ মুখ উল্টে গড়গড় করে সব উগড়ে দিই । তাও কিনা বন্ধুর সংজ্ঞানাশক স্প্রে ছিটকে পড়ে আমার মুখের উপরে ।

এই বিশেষ কীটতুল্য (কীটের বন্ধু বলে কথা) বন্ধুদের কোনো পাখনা নেই যে ফুড়ুৎ করে পালিয়ে নিজেকে বাঁচাবে । এমনকি জো নেই যে নিজের মানের ক্ষতস্থানে মলম লাগিয়ে নিজের সম্মানের চারদিকে দুর্ভেদ্য দুর্গ বানিয়ে তার মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে নিজের অভিমানের কভি-খুশ্-কভি-গম্-মার্কা অতিনাটকীয় স্ক্রিপ্ট লিখবে । অগত্যা থাকে না এর অন্যথা । হয় এদের মনের শরীর খারাপ, না হয় শরীরের খুব মন খারাপ । অর্থাৎ কোনো সুনির্মিত বর্ডার নেই এদের শরীরমনে । এদের হাতে শুধু রেডি থাকে সেই মানবিক হিট স্প্রে ।

সাধে বলি বন্ধুবাজারে হিট স্প্রে-টা কি আর এমনি এমনি পড়ে আছে, ভাই?! হেব্বি দরে ব্যবহৃত হয় ! কিন্তু আমার সত্যি সামর্থ্য আছে সেই স্প্রে করার ? বান্ধবিক অর্থে? নাহ, এদের নিঃশর্তে ক্ষমা করে দেওয়ার মত যোগ্যতা আমার নেই, যদিও ভুয়ো সার্টিফিকেট যেমন বাজারে চলে তেমনি আমি ওদের ছেড়ে দিতে পারি অনায়াসে । 


অনায়াসে ? 

7 Aug 2014

ঠোঁট ফেটে গেছে


দেখতে পেলাম । ঠোঁট ফেটে গেছে । সরু সরু প্রতিবাদী দাগ । তিনটে না চারটে । সিগারেটের ধোঁয়ায় আবছা দেখায় দোতলা থেকে । ঘামছে একা একা । হাওয়া চুপ । রাস্তা আরো চুপ । কুকুরের ছানাটা হঠাৎ বড়ো শান্ত হয়ে যায় ।

সব হাতকাটা ব্লাউজের তলায় ঘুমিয়ে থাকে একটা গন্ধ । সুদূরপ্রসারী গন্ধঘেঁষা একটা হাসি । কিন্তু সব হাসিতে ব্রা উঁকি মারতে শেখে নি । অনেক সংযত হয়ে যায় অধিকাংশ ব্রা । আজ কেন? কাল বা কেন? পরশু বা তরশু নয়, যীশুর মত সর্বকালীন হতেও পারে এই ফাটকাগিরি । ভালো লাগে এদের ফাটকাবাজি দেখতে । শাড়ি চুপ । সায়া চুপ । ল্যাম্পপোস্টের তলায় চুপচাপ শুয়ে আছে তার পলিগ্রাফ ।

নাকি পলিগ্রাফের হাতছানি ? ইচ্ছা নেই সঠিকত্ব খোঁজার । সঠিক খোঁজের মধ্যে মজা নেই । নিখোঁজ খাঁজ খুঁজতে যাওয়ার মত । সে যাকগে । তবে একটা ভয় আছে । সেই ভয়টা লাস্ট বাস মিস করার । তার সাথে রয়েছে মিসিং লিংকের অবৈধ থুতু ছিটানো । কালক্রমে ।

ঠোঁট তার ফেটেই চলছে । জ্বলছে ছোট ছোট অনেকগুলো প্রতিবাদের আলো । শুধুমাত্র চুপের নিজস্ব কোনো আলো নেই । ভীষণ ব্যক্তিত্বহীন চুপ ।

হুমায়ূন আহমেদ উবাচ 2


"মাতৃশ্রেণীর মানুষের কান্নাভেজা গলার আহ্বান অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা মানুষকে দেয়া হয় নি ।" - হুমায়ূন আহমেদ

 

হাতের আঙুলের চরিত্র


বাঁ হাতের পাঁচটা আঙুলের চরিত্র ডান হাতের বাকি পাঁচটা আঙুলের চরিত্র থেকে আলাদা । আলাদা বলে কখনো বন্ধুত্ব রাখতে চায় না । রাখলেও একে অন্যকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চায় আর গোড়ায় গলদ থাকে বলে ঐখানেই আটকে যায় ।

মুখে এদের নানা রঙের মুখোশ । আবার রঙহীন মুখোশ নিয়ে থাকে । পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই দশটা ক্ষুদ্র মুখোশ দিয়ে মানুষিক বৈশিষ্ট্য চেনা যায় । অনেক ক্ষেত্রে আবার ব্যক্তিক্রমও ঘটে । কিন্তু এদের গুরুদেব বিশালাকার একটি মুখোশ যার আড়ালে দুমুখো চরিত্র ঘুরে বেড়ায় । সেই মুখোশের অভিব্যক্তি নানাসময়ে নানাবিধ । কখনো প্রকট, কখনো বিকট, কখনো কটমট, আবার কখনো নরমসরম মিউ মিউ । আঙুলগুলো তার তুলনায় চরিত্রগত ভাবে বেশ গৌণ বলে তার আদেশমত চলে । দিনরাত ধরে । কখনো কখনো নিজেদের মধ্যে গুরুদেবের দ্বিচারিতা নিয়ে গসিপ করে । এই মুহূর্তে ওরা দশজন মিলে তাদের প্রিয়তম এবং অন্তরঙ্গ কাজটি চটপট সেরে নেয় । সেটি হলো একে অন্যের গা ম্যাসেজ করা ।

অবশ্যই মট্ মট্ শব্দে ।

হুমায়ূন আহমেদ উবাচ 1


"দুধ একা খাওয়া যায়, কিন্তু ড্রিংকসে বন্ধুবান্ধব লাগে । " - হুমায়ূন আহমেদ

 

আমি পুরো অন্ধকারে


ক্রমে ক্রমে এগোচ্ছে । যত রোমকূপ তত হতে থাকে অন্ধের কূপ । এই পরাক্রমশালী অন্ধ কার যেন হাত ধরে এগিয়ে আসছে ?

দেয়ালের একধার হেলতে দুলতে সরে যেতে থাকে অন্ধের দিকে । বাকি তিনধার জুড়ে অন্ধের কবলে থাকা জানলাগুলো মেলে ধরতে থাকে নিজেদের সকাতর ছায়া । ছায়াগুলো কোনাকুনি লম্বা হতে থাকে । সেগুলো অন্ধজনের উপছায়া হতে থাকে । সেই অন্ধ কার যেন কায়া সৃষ্টি করছে ?

অসমাপ্ত কায়াটা তার নিম্নাংশ মেঝেতে ছড়িয়ে দেয় । তার ঠিক সামনে পাঁচহাত দূরে খাটে চশমা, হিয়ারিং এড, গেঞ্জি আর বারমুডা স্ব স্ব স্থানে আছে । কিন্তু মূলকায়াও অসমাপ্ত অথচ স্থির । চলমান কায়া ব্যাপ্ত হতে থাকে স্থির কায়াকে ঘিরে । সেই লোভী অন্ধ কার যেন লোভে পড়লো ?

বারমুডা খুলে দেয় সে ক্ষিপ্র হয়ে । গেঞ্জিও তার দখলে । হিয়ারিং ক্রমশ হয়ে যায় এডশূন্য । শেষে চশমাহীন কায়ার পরিপূরক এখন এই পরকায়া । মানবিক যৌনতৃপ্তির উল্টো অঙ্ক সেই অন্ধ কার যেন কাছ থেকে শিখলো ?

আমি পুরো অন্ধকারে ।

স্নানদৃশ্য দেখানোর মধ্যে মহানুভবতা


চারতলার স্নানঘরের শাওয়ারের সাথে খোলা জানলার বাইরে অঝোরবৃষ্টির যখন তুমুল প্রতিযোগিতা চলে, তখন মনে হয় তেমন কিছু না হোক অন্ততঃ বৃষ্টিক্লান্ত শহরকে আমার স্নানদৃশ্য দেখানোর মধ্যে মহানুভবতা লুকিয়ে থাকে ।

পেট থেকে লাফিয়ে উঠে আসা প্রতিটা ঢেঁকুর


মাথায় মাথায় হেড মারে কিছু শত্রু, 
পায়ে পায়ে খেলে অনেক বন্ধু ।
কিছু কিছু বন্ধু আশ্চর্যজনকভাবে আটকে যায়
বুকের কাঁটাচামচে ।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে বুঝতে পারি যে 

পেট থেকে লাফিয়ে উঠে আসা প্রতিটা ঢেঁকুর শত্রুনাশের বিকল্পমাত্র ।

সীমিত বন্ধুবালতি


বালতিটা ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ । বন্ধুবান্ধব- ঈদৃশ বালতি । তার উপরে নিজের প্রতিচ্ছবি দৃশ্যমান । কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে থেকে মনটা অন্ধবিশ্বাসী হয়ে যেতে বাধ্য । নিজের স্বার্থে দু'হাত বাড়িয়ে চুবিয়ে দিলাম সেই বালতির মধ্যে । অনেকটা-ই বেরিয়ে গেলো, মাটিতে মিশে গেলো, শুকিয়ে গেলো । দু'হাত বাড়ানোটা-ই বাড়াবাড়ি রকমের ভুল ছিলো ? হয়তো ।

বালতিতে যা অবশিষ্টটুকু পড়ে থাকে তা নিয়ে চলতে তো ক্ষতি নেই । বালতিটা হয়ে উঠুক আরো ভারহীন । আজকের দিনটা হোক সীমিত বন্ধুবালতির মত হালকা, সুন্দর আর ফুরফুরে ।

রুচিপত্র বনাম সূচিবোধ


আমার রুচিপত্র দেখে বইটা তার সমস্ত সূচিবোধ নিয়ে কোথায় যে ভেগে পড়লো?! তার সূচিতে বাধলো বুঝি?

এমন তীক্ষ্ণসূচক ব্যাপার সবসময় রুচিসম্পন্ন যে হবে না তা এক্ষণে বুঝলাম !