11 Aug 2014

শুরু আর শেষ, আঁতেলামি


শুরু আর শেষ নিয়ে আমরা যেনতেন বিভ্রান্ত হই । গোলমেলে শুরু থেকে তৈরী হয় শেষের গোলমাল অথচ সেই গোলমালের শেষ বলে কিছু নেই । "এ তো শুরু হবে, স্যার" - এই জেনে আমরা নির্দ্বিধায় তার আগে শেষ করে ফেলি । "বস্, এক্ষুণি শেষ হবে" - এই ভবিষ্যৎবাণী শুনে শুরুতে সুড়সুড়ি দিতেও পিছপা হই না আমরা । শুরু থেকে শেষ অবধি একটা বোধ সবসময় কাজ করে যা শেষ থেকে শুরু অবধি ঠ্যালা মারে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুরুকারীর সাথে শেষকারীর শত্রুতা থাকে যদি তারা ভিন্ন হয় । আবার তারা একই হলেও মিত্রভাবাপন্ন হতে ভুলে যায় । সৃষ্টি হয় বিব্রতভাব । এতটাই বিব্রত যে ব্রিজ তৈরী করতে অক্ষম যা দিয়ে শুরু আর শেষ একটু চেষ্টা করে কানেক্ট করা যেতো । আবার এও বলা যায় না যে সেই ব্রিজটা তৈরী করাটাই একান্ত প্রয়োজন ।

আসলে জন্ম মানে শুরু আর মৃত্যু মানে শেষ কিম্বা শেষের শুরু - এই বিতর্কিত জন্মমৃত্যু নিয়ে বিস্তর তাত্ত্বিক আলোচনার সুরাপাত্রে চুমুক দিয়ে খাই আমরা অনেকে । মনস্তত্ত্বে চুমুক দিতে না দিতে দেহতত্ত্ব হয়ে ওঠে পরের চুমুক । এই চুমুকপ্রদ বিতর্কসভার বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না কেউ । আচ্ছা, বিভ্রাট নিয়ে থাকতে ভালোবাসে মানুষ? জানি বেশিরভাগ ভোট গিয়ে পড়বে না-এর কোলে । কিন্তু কেন? জটিলতম ধাপ পেরোতে পারলে তো আসে সাফল্য । তার সাথে আসে পিঠচাপড়ানির হাই ভোল্টেজ্ । তাই না? এটা কে বা চায় না?! বরং ওই জটিলতম ধাপ দুই হাতে আঁকড়ে ধরে পা ঝুলিয়ে থাকে । বিভ্রাটের শেষ ধাপ বলা যেতে পারে । আবার এর শুরু যে কোথায় তা নিয়ে মানুষের কৌতূহলের সীমা নেই । তাই সাফল্যের চাবিটা শুরু আর শেষের মাঝে কোথাও না কোথাও হারিয়ে যায় । প্রকৃতির নিয়মে হারিয়ে যাওয়া যেকোনো জিনিস খুঁজে বের করার মধ্যে আছে এক উত্তেজনা । অদম্য । টগবগে । এই পাগলাটে সার্চের পেছনে বিভ্রান্তিকর হরমোনের ভূমিকা অতি গুরুত্ববহ ।

ব্যাপারটা হলো আঁতের বকবকানি খালি কানে শোনা যায় না । তবে শুরুর ভিতরে বন্দী শেষের আর্ত চিৎকার অথবা শেষের বাইরে শুরুর মুক্তিকামী আর্তি যেভাবে একই আঁতের এপিঠ ওপিঠ হয়ে উঠছে তা চোখে ফুটে ওঠে, চেহারায় তার ছাপ পড়ে, চলনে বলনে জড়িয়ে পড়ে বিভ্রাটের শাখাপ্রশাখা ।

আঁতেলামির শুরু নেই, শেষ ও নেই । তবুও এর শুরুত্ব বা শেষত্ব নাক-থেকে-জল-পড়ার মত ন্যাকা প্রেমের সৎ ব্যাকরণের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ।

No comments:

Post a Comment