8 Jun 2015

সাইন ল্যাঙ্গোয়েজের ভঙ্গিমা


শূন্যে মারা বল লুফে নেওয়ার সময়, তিনচারতলার বারান্দা থেকে ফেলা লেটারবক্সের চাবি লুফে নেওয়ার সময়, কেউ 'এই নে' বলে কিছু জিনিস ছুঁড়ে দিলে সেটা লুফে নেওয়ার সময় - হাতদুটো দক্ষ ফিল্ডারের মত সেটআপ করতে করতে একটুখানি পিছিয়ে জিনিসলব্ধ করা হয় । মুখে কিছু বলতে হয় না এইসময়ে । যে বল মারলো, যে চাবি দিলো, যে আগাম জানিয়ে জিনিসটা ছুঁড়ে দিলো - তার চোখমুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না । হাতদুটিবন্দী যাতে হয় তার জন্য মনোনিবেশ করতে হয় শুধু । জিনিসটার গতিমুখ, গতিবেগ, হালকা না ভারি, ধারালো না ভোঁতা সেই বুঝে হাতদুটি খুলে সেটআপ করতে হয় । কাজটা সফল হয় হাতদুটিকে অক্ষত রেখে জিনিসটা বন্দী করতে পারলে ।

এর উল্টোটা যদি করি মুখে কোনোরকম শব্দ না করে ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির চোখমুখের দিকে লক্ষ করে হাতদুটিকে হুবুহু ফিল্ডারের মত সেটআপ করে একটু এগিয়ে দেখানোর খিস্তিবাচক অর্থ অনেকে ধরতে পারে না । এই 'সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ'-এর যে একটা স্ল্যাং দিক আছে, সেটা বুঝতে না পারলেই বাধ্য হয়ে সেই শব্দটা জিভের ডগা থেকে ছিটকে বের করতে হয় আমাদের । ফিসফিসিয়ে বা সশব্দে । কিন্তু কেন এত অধৈর্য হয়ে পড়ি আমরা ? জাস্ট হাতদুটি তালপাতার খালি থালার মত করে এগিয়ে ব্যক্তিবিশেষের সামনে সার্ভ করা যথেষ্ট নয় ? ব-যুক্তপদ মুখ ফসকে বেরিয়ে থালায় পড়লেই তবে ব্যাপারটা জলের মত পরিষ্কার হয়ে যায়, সেটা কিছুতেই চাই না । 

প্রাচ্যদেশীয় তথা বাঙলা খিস্তিবাচক সাইন ল্যাঙ্গোয়েজের অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে পূর্বপশ্চিমজুড়ে লোকের যতটা অসুবিধা, ঠিক ততটা বা ততোধিক সুবিধা ওই পাশ্চাত্য খিস্তিসূচক হাতের মুদ্রার মানে বুঝতে । খুব ছোট্টো অথচ কি সহজ ভঙ্গিমা এই ল্যাঙ্গোয়েজের ! একটা হাত (ডানপন্থী হোক বামপন্থী হোক) মুষ্টিপাকিয়ে পাঁচটা আঙুলের মধ্যে শুধু মধ্যমাকে সটান করে ছাড়ান দেওয়া । সারাবিশ্বে চলে এই অভূতপূর্ব সুন্দর সাইন ল্যাঙ্গোয়েজের জনপ্রিয়তা । প্রাচ্যেও এই প্রথা সমান তুঙ্গে যা দেখলে অনায়াসে বুঝে যায় আমবাঙালি ।

No comments:

Post a Comment