24 Mar 2014

দেয়ার আর মেনি থিংস ইন হেভেন অ্যান্ড আর্থ - Abhirup Sen


দেয়ার আর মেনি থিংস ইন হেভেন অ্যান্ড আর্থ মিস্টার দত্ত...

- শব্দ
- মানে?... ‘সাউন্ড?
- হ্যাঁ ।এবারের প্রচ্ছদ কাহিনী হোক “শব্দ”- সুরজিৎ বলে
- বেশ। হোক।
কে কে লিখবেন তার একটা প্রাথমিক তালিকা তৈরী হয়। প্রায় আচমকাই ছেলেটির নাম মাথায় আসে। সোম সরকার।
-সুরজিৎ?
-হুঁ
- সোম সরকার কে লিখতে বললে কেমন হয়?
- কে সোম সরকার?
তাই তো। কে সোম সরকার?
যাই হোক। সোম কে প্রস্তাবটা পাঠাই। ও রাজি হয়ে যায়। হপ্তা খানেকের মধ্যেই এসে যায় ওঁর লেখা।
কে সোম সরকার? সোম লিখেছে
“জানতে পেরেছিলাম যে কোনো এক ই.এন.টি. স্পেশালিস্ট পরীক্ষা করে ঘোষণা করেছিলো - আমি বড় অপরাধী আর অপরাধ হলো শব্দকে খুন করেছিলাম সেই ভ্রূণ থাকাকালীন । এ যেন ভ্রুণহত্যার বদলে শব্দহত্যা । আমার ভ্রূণ তো তখন মেরে ফেললে ভালো হতো তাহলে পাহাড়প্রমাণ দোষের ভার এখনো যে বয়ে বেড়াচ্ছি সেটা অন্তত থাকতো না, কিন্তু শেষ অবধি তা হয় নি আর শেষে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে ছাড়লো ভদ্রলোকটি "

আমার বোধ বুদ্ধি নিয়ে ইদানিং অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। এমনকি একজন তো বেজায় চটে গিয়ে ‘হোয়্যাটস অ্যাপ’ বলেও গেলেন ‘ তোমার এই পত্রিকা বেশী দিন চলবে না। বেশ তো । যদি নাও চলে, সোমের এই লেখাটা থেকে যাবে। যতদিন বাংলা সাহিত্য থাকবে ঠিক তত দিন।

লেখাটার থেকে সামান্য অংশ তুলে দ্দিচ্ছি

“স্কুলের ক্লাসে কালো ব্ল্যাকবোর্ডে সাদা চক দিয়ে যেসব লেখা হয় সেগুলো দিয়ে আমার পড়া তৈরী হয় । স্কুলটিচারের মুখে আওড়ানো সব শব্দ আমার বধির কানের পর্দায় ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খেতো । খাতায় লিখে রাখতাম বোর্ডের গায়ে লেখা সীমিত শব্দগুলো আর চোখ মাঝে মাঝে বোর্ড থেকে সরে গিয়ে পড়তো দূরের পৃথিবীতে । আমার খাতায় লেখা শব্দগুলি যেন জীবন্ত হয়ে উঠতো , অবাক হয়ে দেখতাম শব্দরা সারি বেঁধে পায়ে হেঁটে হেঁটে চলে যেতো । ঠিক যেন সৈনিকের মত । একেকরূপ একেকজনের । খাতা থেকে বেঞ্চিতে , বেঞ্চি থেকে বেঞ্চির পা বেয়ে মেঝেতে , মেঝের উপর দিয়ে হেঁটে দেওয়ালের পা , পায়ে উঠে দেওয়ালের গা বেয়ে জানালার কোলে উঠে পড়তো । শব্দসৈনিকের যে সারি কোলে প্রথম পড়তো সেই সারির মুখগুলো একেক করে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতো আমাকে আর হাত তুলে নাড়াতো । তারপর লাফ মেরে অদৃশ্য হয়ে যেতো এইভাবে একটার পর একটা শব্দের মালা । দূরের সেই পৃথিবীতে হয়তো এরা বিচরণ করে এই ভাবতে ভাবতে কখন আনমনা হয়ে যেতাম শেষে আমার কানের লতিতে পড়তো একটা রামটোকা । সম্বিৎ ফিরে ঘুরে দেখতাম রক্তবর্ণ চোখ পাকিয়ে স্কুলটিচারের ঠোঁটদুটি ক্রমাগত নাড়িয়ে যেতো । সাথে থু থু ছিটকে বেরিয়ে আমার মুখে গালে কপালে পড়তো । অনেক সহ্য করে তার দিকে তাকিয়ে হজম করতাম ওই অসহ্য ঠোঁটনাড়া । তার বকুনির কিছু বোধগম্য-ই হতো না আমার , শুধু বুঝতে পারতাম আমার ওই দূরের পৃথিবী আসলে সাদাকালো-ই”

শুনেছেন আগে কখনো? নৈঃশব্দের এরকম আণবিক বিস্ফোরণ?

দেয়ার আর মেনি থিংস ইন হেভেন অ্যান্ড আর্থ মিস্টার দত্ত। ফ্যাক্টস আর স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন।

No comments:

Post a Comment