18 Sept 2014

হাওয়া (পদ্য নয় গদ্য, হালকা মেজাজে ) by Sushabhan Banerjee


হাওয়া টা দেখতে কেমন? গন্ধ কেমন ছিল??
জানিনা।
হয়ত বুধিজীবি রা পারবে বলতে, আমি পারবনা কারণ আমি মাধমিকে ভাবসম্প্রসারণ করিনি ।

তাও সংক্ষেপে বল্লে গন্ধটা বোধয় শিউলি(ফুল),পান্ডেলের নতুন কাপড়, চাদার বিল, নতুন জামা, হাফ ইঅর্লি পরীক্ষা এই সব মেশানো কিছু একটা। আর দেখতে অনেকটা কুয়াশা কুয়াশা মতন।
সেপ্টেম্বর মাস মানেই হাফ ইয়ারলি পরীক্ষা । খুব মনে পরে স্কুলে রুটিন টা থাকত বিশ্বকর্মা পুজো টাকে মাঝে রেখে দু দিন ছুটি দিয়ে অঙ্ক পরীক্ষা (অনুয়ালে বিশ্বকর্মার বদলে দোল). এই অঙ্ক পরীক্ষার চক্করে মা আমায় কোথাও রান্না পুজোয় বাসী রান্না খেতে যেতে দিতনা. যা খেতে হবে রাত্রি বেলা। তো এই রান্না পূজোর সন্ধেটা আমাদের কাছে বেস একটা ছোট উত্সব ছিল ( যাকে এখন আমরা গেট টুগেদার বলি আরকি ) সন্ধে বেলা সবাই ঠাম্মার কাছে। মূল আকর্ষণ টা থাকত চালতা, নারকেল ভাজা আর ইলিশ মাছের ডিম, আর নতুন জামা। পুজোর যার যা দেওয়া পাওয়া বাকি থাকত পিসি দের, জেঠুর সব জামা গুলো একবার করে পরে সাইজ রং সব চেক করে নিযে রাত করে বাড়ি। মনে মনে একটাই জিনিস, পরশু অঙ্ক তারপর ইতিহাস, মহালয়া চলে এল. তারপর তো, কর্ম শিখা র মৌখিক। ব্যাস মুক্তি।
রান্না পুজোর পরের দিন আবার বিশ্বকর্মা পুজো। সকালে কয়েকটা প্রশ্নমালা রিভাইস দিয়েই , বাবার দোকানে প্রসাদ আনতে যাওয়ার তারা। বাস অঙ্ক পরীক্ষা। দেখতে দেখতে ইতিহাস। এখন মহালয়া টাও আমাদের কাছে ভিসন অভায়লাবল , তখন একবার মিস করে গেলে এক বছর বসে থাকো. ভোর থেকে উঠে তাই রেডিও, তারপর tv তে... প্রতি বছর একই জিনিস তবু অদ্ভূত একটা উত্সাহ, উদ্দীপনা. তারপর কর্মশিক্ষা, মৌখিক। মৌখিক এর দিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরাটাও ছিল অন্য আমেজ। সব পান্ডেল গুলো কে একবার করে ঘুরে নেওয়া, কোথাও ঠাকুর ঢুকলো কিনা। কোনো থিম নেই, সোজা সাপ্টা বাসের পান্ডেল আরো জানতাম সামনের পাচ দিন ওই গুলই দেখতে হবে তবু কি যে দেখতে যেতাম কে জানে? কি একটা গন্ধ ছাড়ত ফাকা পান্ডেল টায়.
এবার আরবে ফিরি। আজ অফিসে বলল একজন হঠাত, কাল থেকে পুজো শুরু কারণ কাল নাকি বিশ্বকর্মা পুজো. জানতাম ও না, মনেও পরেনি। কাল আমাদের দোকানে পুজো হবে আগের মতো। এর পরেও মনে পরে নি যে আজ রাতেই রান্না পুজো টাও হত। wall এ একটা পোস্ট দেখে সেটা মনে পড়ল হঠাত রান্না পুজোর সন্ধে গুলোর কথা। একই রকমের মেনু অন্য কারো বাড়িতে হয়েছে। দাদু বছর পাচেক হলো চলে গেছে । গত বছর ঠাম্মাও। রান্না পুজোটা বন্ধ। আমি নিজেই বাসী রান্না গরম করে খেয়ে নিয়েছি, নারকেল টা পাওয়া যায়. ইলিশের ডিম বা চালতা খুজলে deport করে দেবে for sure .
বাইরে এখনো ৪৫ ডিগ্রী থাকে, আমি যে হওয়ার কথা বলছি, সেই হওয়া এ দেশে এসে পৌছায় নি কখনো, আশাও দেখছিনা। মহালয়া টাও শোনা হবেনা, ফাঁকা পান্ডেল দেখতে যাবার এখনো কোনো প্ল্যান নেই. গেলেও ফাঁকা পান্ডেল এ সেই গন্ধ আর পাবনা সেটাও জানি। পুজোয় ফিরে ছোট বলার সাথে এবারের পুজোর একটা তুলনা মূলক আলোচনা করবো সময় হলে.
এখন আমায় আর আগের মত কেউ জামা কিনে দেয়না , টাকা দিয়ে দেয়, কবে কিনব জানিনা। চতুর্থী পঞ্চমী করে হবে বোধয়, সবাই trial দিয়ে যেগুলো ফেলে রেখে গাছে সেগুলো তুলে আনব.. তবে আমি আসার আগে পূজোর ভ্রমন সংখ্যা টা কিনে হাফ পরে এসেছি। ফিরে পুরো দেশ আর অর্ধেক ভ্রমন টা গিলবো।

No comments:

Post a Comment