একমুঠো জল হঠাৎ পা পিছলে পড়ে গেলো ।
প্রথমে অনেক দাপাদাপি করলো , কিন্তু পারলো না । জিভের গোড়ায় চোরাস্রোতের টানে তলিয়ে যেতে থাকলো । ক্রমশঃ ।
অনেক রাস্তা ঘুরে ঘুরে শেষে গিয়ে টুপ করে পড়লো মুত্রথলিতে । এদিক ওদিক তাকালো - কোথায় সে এখন ? চারদিক অন্ধকার ।
হাতড়ে হাতড়ে দেখলো জল । কিন্তু চারদিকে শুধু দেয়াল আর দেয়াল । দেখার মত বা ধরার মত কিছু পেলো । হাল ছেড়ে দিলো সে । অভাগা জল সে ।
কে যেন বোতাম টিপলো লিফটের ? অন্ধকারের মধ্যে কিছু দেখা যাচ্ছে না । অথচ লিফটটা একটু একটু করে উপরে উঠতে থাকলো । অবাক জল । ধড়মড় করে উঠে বসলো সে । মৃদু ঝাঁকুনি খেতে খেতে উঠছে লিফটটা তাকে নিয়ে ।
আস্তে আস্তে সে দেখতে পেলো মাথার উপরে একটা ক্ষীণ আলো ফুটে আসছে তার দিকে । আসলে তাকে যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আলোর দিকে সে বুঝতে পারছে না । খালি ভাবছে এবার মুক্তি পেতে চলছে সে । অমনি লিফটটা হাফ-ডিগবাজি খেলো । আর সে টাল সামলাতে না পেরে সোজা গিয়ে পড়লো সরু নলের মধ্যে ।
তীব্রবেগে পিছলে যেতে থাকলো নলের মধ্যে দিয়ে । দ্বিতীয়বারের অধঃপতন ।
কমোডে শান্তিতে ঘুমোচ্ছিলো অসংখ্য নোংরা জল । অমনি কোত্থেকে এসে ঝুপ করে পড়লো সেই অভাগা জল । কমোডে যেন ভূমিকম্প হলো । শুধু ঘুম নয় , কয়েকটি নোংরা জলের ঘাড় ভাঙলো , কারুর আবার হাত , কারুর বা পা । বাকিরা হতচকিয়ে এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পালিয়ে গেলো ।
ফ্যাল ফ্যাল করে চারদিকে চেয়ে দেখলো বেচারা জলটা । এরা কারা ? কিসব নোংরা জামা পরে আছে সবাই । নিজের গা দেখে রীতিমত চমকে যায় সে - একি আমারও এই দুর্দশা ? তাকে মায়ায় পড়লো নোংরা জলেরা । ওরা এগিয়ে এলো তার কাছে । সান্ত্বনার ভাষা দেওয়ার নেই কারুর যে ।
এদের মধ্যে একজন যে বীর এবং বলবান সে নবাগত জলের পিঠে হাত রেখে বললো - সাবধানে থেকো । একটু পরে সুনামি হবে । প্রায়শ-ই হয় ।
সে মাথা কাত করে আচ্ছা বললো , সঙ্গে সঙ্গে সুনামি শুরু হয়ে গেলো । কোনোরকমে বেঁচে গেলো সে । অনেকের প্রাণ গেলো । আরো নোংরা হয়ে গেলো সে ।
এইভাবে কতদিন টিকে থাকতে পারবে সে ? কে জানে ? শুধু ওর একা নয় । যারা টিকে আছে তাদেরও তো একই জীবন ।
No comments:
Post a Comment