বোরিং লাগছে । বোরড্ হচ্ছি । এই বোরডম্ চাই নি । তবে আমার এই বোর-বোর ভাবটার জন্য কেউ দায়ী নয় ।
ন্যাচারালি বর্বর হতে যা যা উপকরণ লাগে, তার সবগুলো আমার রক্তনদীর মধ্যে বইতে বইতে দুধারে সরে গেছে । আর সেখানে পলিমাটির মত জমা পড়েছে । অনেকটা কোলেস্টেরল টাইপের । ঘরে রাখা চিভাস্ রিগাল, অ্যান্টিকিউটি ব্লু বা ওল্ড মঙ্ক কারো প্রতি টান অনুভব করছি না । মাকে শুধালাম, "আমার আজ ড্রিংক করতে ইচ্ছা করছে না, কেন বলো তো?", শুনে মায়ের সারা চোখেমুখে পাঁচশো না ছয়শো ওয়াট আলো জ্বলে উঠলো । মালবিদ্বেষী মা তো । আমার মত একজন মালের পক্ষে মাল খাওয়ার আকস্মিক নিঃস্পৃহতা মায়ের কাছে 'বখাটে একটা ছেলে না পড়ে-টড়েই মোটামাইনের বড় চাকরি পেয়ে গেলো' গোছের একটা অনাবিল সু-সু-সুখবর । অগত্যা মায়ের মুখ থেকে চোখ সরিয়ে নিতে হলো, কারণ মায়ের মুখের এমন উদ্ভট পাওয়ারের আলো দেখার মত চোখ তখনো ফোটে নি আমার । সময়টা ছিলো অসময়-ই ।
ব্যালকনির দিকে পা বাড়াতে গিয়েও পা'দুটোকে টেনেটুনে নিতে হলো । পায়ের এই
বোরিং-চরিত্র মাঝেমাঝে আমাকে একসাথে অবাক ও বিরক্ত করে দেয় । সে যাকগে ।
অন্ধকারের সামিল হলাম ব্যালকনিতে এসে । মনে পড়ে গেলো গতপরশুর রাতে দেখা
মুভি 'দ্য বেস্ট অফার' । গল্পের মূলনায়ক একজন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ । শুরু
থেকে পাহাড়সমান গ্র্যাভিটি নিয়ে চলতো । নিজের প্রৌঢ়কালের ৩৫ বছরব্যাপী
সংগ্রহে রাখা দেশবিদেশের নামী-অনামী বহু চিত্রশিল্পীর আঁকা একেকজন নারীর
ভিন্ন ভিন্ন অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তোলা ছবিগুলো ছিলো তার একমাত্র অক্সিজেন ।
সুবিশাল প্রাসাদোপম বাড়িজুড়ে একা থাকতো আর অতিগোপনীয় সিকিয়রিটির
কোড-নাম্বারচালিত একটা গোল হলঘরের সারা দেওয়ালে টাঙানো থাকতো সংগৃহীত সেই
সমস্ত ছবি । সেক্রেটারি আর কিছু বন্ধুবান্ধব অবশ্যই আছে, কিন্তু তাদের কারো
কাছে শেয়ার করতো না তার এই অক্সিজেনের প্রক্সি । গল্পের মাঝবরাবর থেকে
যদিও অন্যদিকে মোড় নেয় ।
এদিকে বারান্দাবন্দী আমার মাত্র দু-তিনদিনের মধ্যে বোরিং লাগার বিষয়টা গল্পের ওই বৃদ্ধের তিরিশের উপর বছরগুলো একটানা একইভাবে কাটিয়ে ছবিগুলোর সামনে নিয়মিত নিজের মনপ্রাণ সঁপে দেওয়ার কাছে যারপরনাই তুচ্ছ । মাইক্রো লেভেলে গিয়ে সেই তুচ্ছতা ধরতে গেলে দেখা যায় তা নিজে উধাও । এমনটা হওয়া অপ্রত্যাশিত নয় বইকি । আকাশের দিকে মুখ তুললাম । দেখলাম একটা বড়সড় মেঘ পাতলা চাদরের মত চাঁদের মুখের সামনে দিয়ে ভেসে চলছে মৃদুগতিতে । পৃথিবীতে মানুষ আসার আগে থেকেই এই একটা চাঁদ আকাশে পড়ে রয়েছে । একইভাবে । কাটতে-কাটতে এবং জুড়তে-জুড়তে । আমার গায়ের রোম সব খাঁড়া হয়ে গেলো ।
আচ্ছা, চাঁদের বুঝি বোরিং লাগে না ?
এদিকে বারান্দাবন্দী আমার মাত্র দু-তিনদিনের মধ্যে বোরিং লাগার বিষয়টা গল্পের ওই বৃদ্ধের তিরিশের উপর বছরগুলো একটানা একইভাবে কাটিয়ে ছবিগুলোর সামনে নিয়মিত নিজের মনপ্রাণ সঁপে দেওয়ার কাছে যারপরনাই তুচ্ছ । মাইক্রো লেভেলে গিয়ে সেই তুচ্ছতা ধরতে গেলে দেখা যায় তা নিজে উধাও । এমনটা হওয়া অপ্রত্যাশিত নয় বইকি । আকাশের দিকে মুখ তুললাম । দেখলাম একটা বড়সড় মেঘ পাতলা চাদরের মত চাঁদের মুখের সামনে দিয়ে ভেসে চলছে মৃদুগতিতে । পৃথিবীতে মানুষ আসার আগে থেকেই এই একটা চাঁদ আকাশে পড়ে রয়েছে । একইভাবে । কাটতে-কাটতে এবং জুড়তে-জুড়তে । আমার গায়ের রোম সব খাঁড়া হয়ে গেলো ।
আচ্ছা, চাঁদের বুঝি বোরিং লাগে না ?
No comments:
Post a Comment