'কলিকাতা' কথাটি বলতে আটকাচ্ছে কেন ? শুরু থেকেই নবকুমারকে দিয়ে সমরেশ মজুমদার এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন ।
চিৎপুর, বেলগাছিয়া, দর্জিপাড়ার সাথে যে একটা 'খারাপ'পাড়া আছে তার চেহারা কিন্তু আমাদের অনেকের কাছে একটা মানসিকতার প্রশ্নোত্তর । পেটের দায়ে পড়ে মেয়েরা যে কাজ করে তার বাইরেও তাদের একটা স্বাভাবিক জীবন আছে । তাদের কষ্টযন্ত্রণাও ভদ্রপাড়ার মানুষদের মত । তাদের জীবনের অভিমুখ হয়তো একটাই কিম্বা বলা যেতে পারে চিহ্নহীন, বর্ণগন্ধহীন, মনশূন্য শরীর বেচে অলক্ষ্যে রোগব্যাধি বাঁধিয়ে নেওয়ার একটা উদ্দেশ্যহীন নিশানা । একটা মেয়ের যোনি শত শত শিশ্নের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার পাশাপাশি মানুষের চিৎকার-আর্তনাদ, পুলিশি বর্বরতা, সামাজিক মোড়কের আড়ালে থাকা নিষ্ঠুর সত্যতা - সবই আমাদের চেনা শোনা এবং জানা ।
সমরেশবাবু নবকুমারের চরিত্রকে একজন স্ট্রাগলার বানিয়ে তার ভাগ্যে একটার পর
একটা রাস্তা খুলে দিতে লাগলেন । এমন ভাগ্যবান চরিত্র তার
গ্রাম্য-সারল্যচরিত্রকে ছাপিয়ে গেছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । আমরা যারা
পাঠক তারা কেউ এতখানি ভাগ্যবান হতেও পারি নি আমাদের ভদ্রসভ্যশোভনীয় জীবনের
স্রোতে ভেসে যেতে যেতে, যেখানে নবকুমার তার বঙ্কিমীজালে আটকে পড়া
কপালকুণ্ডলার মত অগুনতি নারীর সহজলভ্য যোগসূত্র সব উপেক্ষা করে সৎবান থেকে
গেছে নিজের গুণে সেটা খুবই বিরল । খোদ কোলকাতায় থেকে 'কলিকাতা' স্পষ্ট
উচ্চারণের মত ।
এমন ব্যতিক্রমী জীবন কার না চাই ? সবাই হয়তো চাই মনে মনে কিন্তু তা সম্ভব নয় । তাই শুধু বেঁচে থাকুক এই কলমের সাবলীলতায় । আমাদের হারিয়ে যাওয়া সেই 'কলিকাতা'য় ।
এমন ব্যতিক্রমী জীবন কার না চাই ? সবাই হয়তো চাই মনে মনে কিন্তু তা সম্ভব নয় । তাই শুধু বেঁচে থাকুক এই কলমের সাবলীলতায় । আমাদের হারিয়ে যাওয়া সেই 'কলিকাতা'য় ।
ekdom thik
ReplyDelete