বিদ্যুৎ ধীরেসুস্থে কাঁটাচামচ দিয়ে চমচম খাচ্ছে,
বাজ আছাড়ের পর আছাড় খেয়েও বিনাবাক্যে গা থেকে ধুলো ঝাড়ছে,
বৃষ্টির ফোঁটাগুলো শুক্রাণুবেগে মরণঝাঁপ দিচ্ছে,
এমন 'ফাস্ট অ্যাণ্ড ফিউরিয়াস' রাত কার না ভালো লাগে ?
বহির্জগতের রূপাস্বাদন করতে করতে গতকালে দেখা এফ.এফ.৭ এর বেশ কিছু সুপার
অ্যাকশনের সিন চোখের সামনে ভেসে এলো । পল ওয়াকারের মৃত্যু যতটা অপ্রত্যাশিত
ছিলো, সপ্তম সিকোয়েলজুড়ে তার বহুগুণ বেশি অপ্রত্যাশিত সব অ্যাকশনপ্লে
দেখলাম । কারণ ? অঙ্কের মত সোজা । প্রতিটা স্টেপ ছিলো মৃত্যুবীজের
অঙ্কুরোদয়ের প্রাঙ্গণ । একেকটা এমন রুদ্ধশ্বাসভরা স্পিডে চলার সিন যেখানে
মৃত্যু নিশ্চিত, সেখানে হিরোহিরোইনদের পরের পর স্যাকসেস যেকোনো থ্রিলিং
ভিডিও গেমের 'মিশন লেভেল (!) কমপ্লিট, গো টু নেকস্ট লেভেল' গোছের ।
খুঁটিনাটি বিশ্লেষণে নাই বা গেলাম, কিন্তু ওই ল্যাপিতে অ্যাক্সেসকোড পেতে
মরিয়া সেক্সি মেয়েটাকে যেভাবে একটা সুপারবেগে চলন্ত গাড়ির জানালা দিয়ে
ল্যাপিসমেত বের করে আরেকটা সুপারবেগে চলন্ত গাড়ির জানালা দিয়ে ঢুকিয়ে আনা
হলো তাতে আমি নিজের হাড়টাড় টিপে একবার চেক করে দেখতে বাধ্য হয়েছিলাম যে
সত্যিই বেঁচে আছি তো ?
ভিন ডিজেলের মৃত্যু যখন বাকিরা একরকম নিশ্চিত
ভেবে ধরে নিচ্ছিলো, তখনো পল ওয়াকার তাকে বাঁচাতে তার বুকে বার বার চাপ
দিচ্ছিলো । এরকম দৃশ্য দেখে কে বলবে যে এই প্রাণপণে প্রাণ ফিরিয়ে আনার
চেষ্টারত পল আসলে আর বেঁচে নেই ?! এমন এক মৃত্যুমুহূর্তের ভাগীদার এভাবে
ভিন আর পলের মধ্যে চালাচালি হয়ে গেলো । সিনেমা থেকে বাস্তবে । সেই বাস্তবটা
চিরকালের বাস্তবিক হয়ে থেকে গেলো ।
আমাদের চারপাশে যত তাণ্ডবনৃত্য
চলুক না, সবটাই অানরিয়্যাল সিনেমাটোগ্রাফিতে ধরা দিতে অপারগ কিম্বা দিতে
পারলেও তা হয়ে যায় অপ্রত্যাশিত অথচ মর্মান্তিক উলটপুরাণ ।